ধার করা টাকায় প্রথমবার নির্বাচন
এখন অনেক টাকা গাড়ি ও বাড়ির মালিক পলক
হলফনামা বিশ্লেষণ
মো. শহীদুল হক সরকার, নাটোর
প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
নাটোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের হলফনামা অনুযায়ি ধার করা টাকায় তিনি প্রথমবার সংসদ নির্বাচন করেন। কিন্তু এখন তার ও স্ত্রীর রয়েছে অনেক টাকা, বাড়ি, গাড়ি ও বৈধ অস্ত্র।
স্ত্রী কোন চাকুরি বা ব্যবসা না করেও গত ১৫ বছরের প্রায় তিন কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। পলক এই আসনে টানা তিন বারের সংসদ সদস্য। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন।
এবারের হলফনামায় পলক দেখিয়েছেন, তার কাছে নগদ টাকা আছে ১ কোটি ১৭ লাখ ৪১ হাজার ১১২ টাকা। ব্যাংকে জমা আছে ৬ লাখ ৬৫ হাজার ৫৫০ টাকা। তার স্ত্রীর কাছে নগদ আছে ৪৫ লাখ ৬৫ হাজার ৯৯১ টাকা। ব্যাংকে আছে ৫৪ লাখ ২০ হাজার ৮০৬ টাকা।
হলফনামায় উল্লেখ করা তথ্য অনুযায়ী, পলকের কাছে বৈদেশিক মুদ্রা ১০ হাজার ইউএস ডলার রয়েছে। স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ করা আছে ১ কোটি? ২৫ লাখ ২৯ হাজার ৫১৫ টাকা। স্ত্রীর বিনিয়োগ করা আছে ১ কোটি ৬২ লাখ ৮১ হাজার ৮২৯ টাকা। প্রতিমন্ত্রীর ১ কোটি টাকা মূল্যের একটি জিপ গাড়ি আছে। নিজের ২ ভরি ও স্ত্রীর ৩০ ভরি স্বর্ণ আছে। এছাড়া তার ১টি শর্টগান ও ১ টি পিস্তল আছে যার মূল্য ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা।
হলফনামায় পেশা হিসেবে প্রতিমন্ত্রী আইনজীবী লিখলেও সেই খাত থেকে এ সময়ে কোন আয় করেননি। কৃষি খাত থেকে বাৎসরিক ৪৮ হাজার টাকা, বাড়ি-দোকান-অ্যাপার্টম্যান্ট ভাড়া বাবদ ৬০ হাজার, শেয়ার-সঞ্চয় থেকে ৭ লাখ ৭৫ হাজার ৭৬৪ টাকা, চাকুরি (প্রতিমন্ত্রী হিসেবে) ২১ লাখ ৩৬ হাজার ৫০৪ টাকা এবং বিভিন্ন টেলিভিশনে টকশো করে ২ লাখ ২ হাজার টাকা বছরে আয় করেন।
প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রী কৃষি খাত থেকে ১ লাখ ৯০ হাজার ৮৯০ টাকা, বাড়ি-দোকান-অ্যাপার্টম্যান্ট ভাড়া থেকে ৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকা এবং শেয়ার-সঞ্চয় থেকে ১১ লাখ ২৩৭ টাকা আয় করেন। প্রতিমন্ত্রীর নামে কৃষি জমি ২.৪৩ একর, অকৃষি জমি সিংড়ায় ০.৫০ শতাংশ, পূর্বাচলে রাজউকের ১০ কাটা প্লট রয়েছে।
৪ শতাংশ জমির ওপর দোতলা পৈত্রিক বাড়ি যার নিচে ৪ টি দোকান ও একটি গুদাম রয়েছে। এছাড়া স্ত্রীর নামে কৃষি জমি রয়েছে ৯একর এবং অকৃষি জমি রয়েছে এক একরের বেশি। ঢাকার শেওড়া পাড়ায় দুটি দোকান রয়েছে। এছাড়া ঢাকায় ১৭২০ বর্গফুটের একটি ফ্লাটর রয়েছে।
১৫ বছর আগে ২০০৮ সালে পলক যখন দেশের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে প্রথম বার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন তখনকার হলফনামা অনুযায়ী তার কৃষি জমি ছিলো এক বিঘা আর ভিটা জমি ছিল ১৮ শতাংশ। প্রথম নির্বাচনে ব্যয়ের জন্য তিনি নিজের আইন পেশা থেকে আয় ৫০ হাজার টাকা এবং ৫ স্বজনের নিকট থেকে ধার করেন আড়াই লাখ টাকা।
বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজানসহ অন্যান্য ১৮ ব্যক্তির নিকট থেকে সাড়ে ৬ লাখ ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ভোটের খরচ চালাবেন বলে তখন হলফনামায় উল্লেখ করেছিলেন। ওই সসময় তার নিজের নগদ টাকা ছিলো ৩০ হাজার, তার স্ত্রীর ছিলো ৫০ হাজার টাকা।
তার নিজের ব্যাংকে জমা ছিলো ২০হাজার আর স্ত্রীর ছিলো ১০ হাজার টাকা। তখন তার কোন বৈদেশিক মুদ্রা ছিলো না, সঞ্চয়পত্র ছিলো মাত্র ১৮ হাজার টাকার। তার স্ত্রীরও কোন সঞ্চয়পত্র ছিলো না। প্রসঙ্গত তখন তার স্ত্রী আরিফা জেসমিন কনিকা শিক্ষকতা করলেও এখন করেন না।
