বিভিন্ন স্থানে বিএনপির মানববন্ধনে বাধা
হবিগঞ্জে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে আহত অর্ধশত
গুলি লেগেছে এক সাংবাদিকের চোখ ও কপালে * ঢাকা, রাজশাহী ও সিলেটে আটক ২৩
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
হবিগঞ্জে বিএনপির মানববন্ধনে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় পুলিশ শতাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে দুই সাংবাদিক ও কয়েকজন পুলিশসহ বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত এক সাংবাদিককে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। তার চোখ ও কপালে গুলি লেগেছে। রোববার দুপুরে শহরের শায়েস্তানগরে এ সংঘর্ষ হয়।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে এদিন সারা দেশে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। বরিশাল ও ফরিদপুরসহ কয়েকটি স্থানে এই কর্মসুচিতে বাধা দিয়েছে পুলিশ। রাজধানী ঢাকা, রাজশাহী ও সিলেটে বিএনপির ২৩ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যুগান্তর প্রতিবেদন, ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
হবিগঞ্জ : পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১১টায় শহরের শায়েস্তানগর মোড়ে মানববন্ধন শুরু হয়। এতে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে নেতাকর্মীরা এসে যোগ দেন মানববন্ধনে। অংশ নেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক এমপি শাম্মী আক্তার শিপা, সাবেক এমপি শেখ সুজাত মিয়া, মিজানুর রহমান চৌধুরী, এনামুল হক সেলিম, কামাল উদ্দিন সেলিম, যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম বাবুল, স্বেচ্ছাসেবক দল আহ্বায়ক সৈয়দ মুশফিক আহমেদসহ সিনিয়র নেতারা। মানববন্ধনের শেষ পর্যায়ে দুপুর ১২টার দিকে কতিপয় মুখোশধারী স্লোগান দিতে দিতে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। তখন সংঘর্ষ বাঁধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ শতাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল ছোড়ে। সংঘর্ষে মাই টিভির সাংবাদিক নিরঞ্জন গোস্বামী শুভ ও আমির হামজা এবং কয়েকজন পুলিশসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় নিরঞ্জন গোস্বামী শুভকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তার চোখ ও কপালে গুলি লেগেছে। অপর আহতদের সদর আধুনিক হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন বলেন, কয়েক হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের মানববন্ধন চলছিল। হঠাৎ কেন সংঘর্ষ শুরু হলো, কারা এটি সৃষ্টি করেছে তা আমরা খতিয়ে দেখছি। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এটি করা হয়েছে বলে আমি মনে করি। সংঘর্ষে আমাদের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এনামুল হক সেলিম বলেন, আওয়ামী অনুপ্রবেশকারীরা পরিকল্পিতভাবে সংঘর্ষ বাঁধিয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য পুলিশের সঙ্গে আমাদের ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি করা।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) হাসিবুল ইসলাম জানান, পুলিশ শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিয়েছিল। হঠাৎ পুলিশের ওপর নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে শুরু করে। তখন পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। এ সময় কয়েকজন পুলিশ আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে।
রাজধানীতে যুবদলের ৮ নেতাকর্মী গ্রেফতার : শনিবার রাতে যুবদলের ৮ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগ। ডিবির দাবি, তারা ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় জড়িত। তারা হলেন-আতাউর রহমান, নাজির হোসেন, মাসুদ মিয়া, ৫৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের আহ্বায়ক দিল গণি, ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সদস্যসচিব মো. সিদ্দিক হাওলাদার, ৫৬ নম্বর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর, ৫৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সোহাগ হাওলাদার ও একই ওয়ার্ডের যুবদল নেতা মো. শাহীন।
