পার্লামেন্টে মারামারি
অভিশংসনের মুখে মালদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
মালদ্বীপের পার্লামেন্টে প্রধান বিরোধী দলের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুকে এবার অভিশংসনের মুখোমুখি করার উদ্যোগ নিয়েছেন। এ লক্ষ্যে তারা ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় স্বাক্ষরও সংগ্রহ করেছেন। রোববার পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্টের মন্ত্রিসভা নিয়ে ভোটকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলার পরপরই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খবর টাইমস অব ইনডিয়া।
মালদ্বীপের পার্লামেন্টের প্রধান বিরোধী দল মালদেভিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি (এমডিপি) জানিয়েছে, প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের উদ্যোগ নিতে প্রয়োজনীয় স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয়ে গেছে। শিগগিরই তারা প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন করাতে প্রক্রিয়া শুরু করবেন। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, এমডিপি এবং ডেমোক্র্যাটসহ মোট ৩৪ জন এমপি প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন করানোর পক্ষে সমর্থন দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর মন্ত্রিসভার সদস্যদের অনুমোদন দেওয়াকে কেন্দ্র করে পার্লামেন্টে এমপিদের মধ্যে বিশৃঙ্খলার পর অভিশংসনের উদ্যোগ নেওয়া হলো।
মালদ্বীপের সংবাদমাধ্যম আধাদু জানিয়েছে, গত বেশ কয়েক দিন ধরেই ভারত বিরোধিতাকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন জোটের সঙ্গে তীব্র দ্বন্দ্ব চলছিল সাবেক প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মুহম্মদ সোলিহের মালদ্বীপিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি বা এমডিপির। ভারতপন্থি হিসাবে পরিচিত সোলিহ। আর ক্ষমতাসীন জোটে রয়েছে প্রোগ্রেসিভ পার্টি অব মালদ্বীপ বা পিপিএম এবং প্রেসিডেন্ট মুহম্মদ মুইজ্জুর পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেস বা পিএনসি।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মুইজ্জু এবং তার নেতৃত্বাধীন জোট জয় পেলেও মালদ্বীপ পার্লামেন্টে পিপিএম-পিএনসি জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। সেখানে এখনো ছড়ি ঘোরায় ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহের এমডিপি। রোববার মুইজ্জুর মন্ত্রিসভার ২২ নামের মধ্যে ১৮ জনকে অনুমোদন দেয় পার্লামেন্ট। আপত্তি ওঠে চারজনের নাম নিয়ে। এর পরই পার্লামেন্ট অচল করে দেয় ক্ষমতাসীন পিপিএম-পিএনসি জোটের এমপিরা এবং এমডিপি এমপিদের সঙ্গে তারা পার্লামেন্টের ভেতরেই হাতাহাতি এবং মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। লাথি, ঘুসি, চড়-থাপ্পড়, চুল ধরে টানা, বাঁশি বাজিয়ে স্পিকারের কণ্ঠ স্তব্ধ করে দেওয়া-পার্লামেন্টের কার্যক্রম ব্যাহত করার লক্ষ্যে কিছুই বাদ রাখেননি প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর ক্ষমতাসীন জোটের এমপিরা। এর জেরে বেশ কয়েকজন এমপিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে পার্লামেন্ট ছাড়তে হয়েছে।
সামাজিকমাধ্যমে এই সংঘর্ষের বেশ কিছু ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, স্পিকারকে কথা বলতে বাধা দিতে, তার আসনের পাশে দাঁড়িয়ে বাঁশি-ভেপু বাজাচ্ছেন মুইজ্জুর দলের এমপিরা। অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে, কথা বলার জন্য যে মাইক রাখা হয়, সেই মাইক তুলে মারামারির উপক্রম হয়। এরপর পার্লামেন্ট থেকে সব মাইক স্ট্যান্ড সরিয়ে নেওয়া হয়।
শাসক জোটের দাবি, প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর মন্ত্রিসভার মন্ত্রীদের গ্রহণ না করা, দেশের অগ্রগতিতে বাধা দেওয়ার শামিল। তারা স্পিকারের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন। মুইজ্জুর প্রধান উপদেষ্টা তথা পিএনসি চেয়ারপার্সন আবদুল রহিম আবদুল্লাহর দাবি, মন্ত্রীদের অনুমোদন না দেওয়াটা দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ।
