হামলাকারীদের টার্গেট সরকারি স্থাপনা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির দুইদিনে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান কার্যালয়সহ বেশ কয়েকটি সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ভাঙচুর করা হয়েছে রামপুরা থানা ও রামপুরা পুলিশ ফাঁড়ি, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর থেকে পুরবী পর্যন্ত পাঁচটি পুলিশ বক্স, মিরপুরে বিআরটিএ-এর মেট্রো-১ কার্যালয়, মেট্রোরেলের কাজীপাড়া স্টেশনসহ বেশকিছু স্থাপনা। এসব হামলায় ওইসব প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা মনে করছেন, হামলাকারীরা বেছে বেছে সরকারি স্থাপনাকে টার্গেট করে হামলা চালাচ্ছে।
শুক্রবার দুপুরের দিকে মহাখালীর কাঁচাবাজার এলাকায় অবস্থিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পুরোনো ভবনে আগুন দেয় দুষ্কৃতকারীরা। এ সময় অধিদপ্তরের সামনে ২৫টি গাড়ি পুড়ে যায়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর যুগান্তরকে বলেন, অধিদপ্তরের পুরোনো ভবনের সামনে থাকা জিপ, পাজেরোসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দামি গাড়িগুলোয় আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। অন্তত ২৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের পর ফায়ার সার্ভিসকে কল করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। পড়ে অধিদপ্তরের আনসার সদস্য ও চালকরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
রাজধানীর বনানীতে বিআরটিএ-এর সদর দপ্তরে হামলার ঘটনা ঘটে। ওই ভবনের নিচতলায় অগ্নিসংযোগ করা হয়। মিরপুরে বিআরটিএ অফিসেও হামলা চালানো হয়। ওই অফিসের প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে কয়েকশ হামলাকারী। সেখানে রাখা বেশ কয়েকটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। বিআরটিএ-এর একজন কর্মকর্তা জানান, বৃহস্পতিবার কয়েকজন ফিটনেস পরিদর্শনের জন্য গাড়ি নিয়ে আসেন। পরিস্থিতির অবনতি হলে তারা নিরাপদ ভেবে গাড়ি রেখেই চলে যান। এসব গাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তারা প্রতিষ্ঠানটির কম্পিউটার, প্রিন্টারসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র লুট করে।
ধানমন্ডিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়। আগুন দেওয়া হয় রামপুরা কার্যালয়েও। অবরোধকারীদের বাধার মুখে ওই আগুন নেভাতে যেতে পারেনি ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি। এছাড়া মেট্রোরেলের কাজীপাড়া স্টেশনে ভাঙচুর চালানো হয়। মিরপুর-১০ নম্বরে স্টেশনে হামলার চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় ব্যর্থ হয়। এছাড়াও সরকারি বেশ কয়েকটি স্থাপনায় হামলার ঘটনা ঘটে।
এর আগের দিন বৃহস্পতিবারও সরকারি স্থাপনায় হামলা হয়। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বিটিভিতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে বিটিভির সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যায়। অগ্নিসংযোগ করা হয় মহাখালীতে অবস্থিত সরকারি স্থাপনা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন ও বনানীর সেতু ভবনেও। উত্তরায় র্যাবের গাড়ি ও যাত্রীবাহী বাস ভাঙচুর করা হয়েছে। মিরপুর-১০ গোলচত্বরে ফুটওভার ব্রিজে আগুন দেওয়ায় বিকাল সাড়ে ৫টার পর মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। হামলা আতঙ্কে মেট্রোরেল চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
