ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প রক্ষা করুন
কেএম ছালেহ আহমদ বিন জাহেরী
প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২১, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
মৃৎশিল্প গ্রামবাংলার একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শিল্প। এ শিল্পের প্রধান উপকরণ মাটি হওয়ায় একে মৃৎশিল্প বলে। এ শিল্পে প্রয়োজন পরিষ্কার এঁটেল মাটি এবং হাতের নৈপুণ্য ও কারিগরি জ্ঞান। কারিগররা গভীর ভালোবাসা আর মমতা দিয়ে নিপুণ হাতের কারুকাজের মাধ্যমে তৈরি করেন নানা তৈজসপত্র ও অন্যান্য সামগ্রী। মাটিই তাদের জীবিকা অর্জনের একমাত্র হাতিয়ার। কালের বিবর্তনে আধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি নানা সামগ্রী তৈরি হওয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রামবাংলার প্রাচীন এ শিল্পটি। ফলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মৃৎশিল্পের কারিগরদের জীবনযাত্রার মান দিন দিন তলিয়ে যাচ্ছে। কষ্টকর হয়ে পড়ছে তাদের এ পেশায় থেকে জীবিকা নির্বাহ করা।
সম্প্রতি খবরের কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন যাবৎ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে বেচাকেনা না থাকায় অচল হয়ে পড়েছে মৃৎশিল্পের কয়েকশ পরিবার। তারা বসে আছে হাত-পা গুটিয়ে। মৃৎ কারিগররা জানিয়েছেন, প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়ামের প্রচলন বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং এগুলোর দাম সীমিত থাকায় মাঠির তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা দিন দিন কমে যাচ্ছে। এছাড়া দীর্ঘদিন যাবৎ কোনো মেলা কিংবা সামাজিক অনুষ্ঠান না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন মৃৎশিল্পের কারিগররা। পরিবার নিয়ে আর্থিক সংকটে ভুগছেন অসংখ্য কারিগর। জানা যায়, জীবিকার তাগিদে অনেকে এ পেশা ছেড়ে অন্য কাজে যোগ দিচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকলে একসময় বিলুপ্ত হয়ে যাবে দেশের ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প। কেবল তা থেকে যাবে বইয়ের পাতায়।
কাজেই মৃৎশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে মাটির তৈরি জিনিসপত্র ব্যবহারে আমাদের নিজেদের আগ্রহী হওয়ার পাশাপাশি অন্যদেরও উৎসাহিত করতে হবে। সেই সঙ্গে এ শিল্প বাঁচিয়ে রাখতে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ একান্ত জরুরি। সরকার যদি কুমোর সম্প্রদায়কে উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি তাদের আর্থিকভাবে কিছু সহায়তা দেয়, তাহলে আশা করা যায় মাটির শিল্পের সোনালি দিন আবার ফিরে আসবে।
কেএম ছালেহ আহমদ বিন জাহেরী : শিক্ষার্থী, নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা
