Logo
Logo
×

খবর

যুগান্তরের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন

ওস্তাদের ৭ বছর পর শিষ্যও গ্রেফতার

পাবনায় ভুয়া ‘বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক’র কাহিনী

Icon

আখতারুজ্জামান আখতার, পাবনা

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

২০১১ সালে দৈনিক যুগান্তরের প্রতিবেদন প্রকাশের পর গ্রেফতার হয়েছিলেন পাবনার ভুয়া নাক কান গলা রোগ বিশেষজ্ঞ সাহেব আলী শান্ত। শান্ত’র প্রতারণার তথ্য দিয়ে তখন যুগান্তরকে সহযোগিতা করেছিলেন তারই শিষ্য ‘ডাক্তার ও সনোলজিস্ট’ মাসুদ করিম পরিচয়ধারী মাসুদ রানা। কে জানত এই মাসুদ করিমও ভুয়া চিকিৎসক। ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস, ওস্তাদ গ্রেফতারের ৭ বছর পর একই অভিযোগে গ্রেফতার হলেন শিষ্য মাসুদ করিম। আরেকজনের সনদ ও বিএমডিসির নিবন্ধন নম্বর ব্যবহার করে দীর্ঘদিন পাবনায় চিকিৎসার নামে প্রতারণা করে আসছিল মাসুদ করিম (প্রকৃত নাম মাসুদ রানা)। ২৬ জানুয়ারি যুগান্তরে তাকে নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর তিনি পালিয়ে যান। পরে এই ভুয়া চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা করেন ঢাকায় কর্মরত আসল চিকিৎসক মাসুদ করিম। সোমবার তাকে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার নিজ এলাকা থেকে গ্রেফতার করে রাতেই পাবনা নিয়ে আসা হয়। মঙ্গলবার তাকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হলে তিনি বলেন, আমি ভুল করেছি।

এই ভুয়া চিকিৎসকের আসল নাম মাসুদ রানা। পিতার নাম আবদুল হান্নান। বাড়ি নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার হাতিখানাপাড়া গ্রামে। ডা. মাসুদ করিমের নাম, সনদ ও নিবন্ধন নম্বর নকল করে সাত বছর ধরে পাবনার ভাঙ্গুড়া হেলথ কেয়ার ক্লিনিকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করছিলেন।

মঙ্গলবার পাবনা পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম তার কার্যালয়ে বলেন, ঢাকার খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা ডা. মাসুদ করিমের নাম, বিএমডিসির নম্বর ও সনদ ব্যবহার করে চিকিৎসক হিসেবে কাজ করছিলেন। তার সঙ্গে আর কেউ জড়িত কিনা, কিভাবে সে ভুয়া কাগজ তৈরি করেছে তা জানতে তার রিমান্ড আবেদন করা হবে। একই অপরাধে ২০০৫ সালেও তিনি কুষ্টিয়ায় গ্রেফতার হন। সেখানে তার নামে একটি মামলাও রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত প্রকৃত চিকিৎসক মাসুদ করিম বলেন, আমি ১৯৯০-৯১ সেশনে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ২৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলাম। এমবিবিএস শেষ করে ঢাকার খিলগাঁওয়ে নিজস্ব চেম্বারে বসি। ফেনীর সোনাগাজীতে আমার বাড়ি, আমার বাবার নাম আবদুস শাকুর।

সংবাদ সম্মেলনে ভুয়া ডা. মাসুদ জানান, তাকে জাল সনদ সংগ্রহে সহায়তা করেন এর আগে গ্রেফতার আরেক ভুয়া ডাক্তার সাহেব আলী শান্ত। তিনি সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গী বাজারের অদূরে রহিমাবাদ গ্রামের চাঁদ আলী সরকারের ২য় ছেলে। সাহেব আলী শান্ত যে ভুয়া চিকিৎসক সে ব্যাপারে যুগান্তরকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছিলেন সবশেষ গ্রেফতার এই মাসুদ রানা।

জানা যায়, গ্রেফতার মাসুদ রানা চিকিৎসকদের সংগঠন বিএমএ’র একজন আজীবন সদস্য। পাবনা বিএমএ’র শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. আনন জানান, ২০১২ সালের দিকে তিনি পাবনা বিএমএতে আজীবন সদস্যপদ লাভ করেন। সে সময় তিনি বিএমডিসির কাগজপত্র দাখিল করেছিলেন, যা ভুয়া বলে কেউ বুঝতে পারেননি। সনোলজিস্ট ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে তিনি পাবনা শহরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় এক দশক ধরে চিকিৎসা বাণিজ্য করে গেছেন দাপটের সঙ্গে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম