সুস্থ থাকুন
খুজলি থেকে চুলকানি
ডা. দিদারুল আহসান
প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০১৯, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
খুজলি বা স্কেবিন মানুষ থেকে মানুষের দেহে ছড়ায়। অন্য কোনো প্রাণীর মাধ্যমে এ রোগটি ছড়াতে পারে না। যারা ঘনবসতিপূর্ণ ঘরে একত্রে বসবাস করেন, যেমন স্কুল হোস্টেল, মাদ্রাসা, এতিমখানা, বস্তি এলাকা।
আবার যারা অপরিচ্ছন্ন জীবনযাপন করেন তাদেরই এ রোগ বেশি হয়। ধনী লোকদের মধ্যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রভাব অধিক বিধায় তাদের এ রোগটি কম হয়। একসঙ্গে এক বিছানায় শুইয়ে কিংবা ব্যবহৃত কাপড় অন্য কেউ ব্যবহার করলে খুব সহজেই এ রোগটি হতে পারে।
উপসর্গ : প্রধান উপসর্গ চুলকানি এবং রাতের বেলায় অধিক চুলকানি। স্কেবিন নামক একটি জীবাণু দেহ থেকে নিঃসৃত হয়। এটাই মূলত চুলকানির জন্য দায়ী।
রোগীর দেহ ভালো করে লক্ষ্য করলে গোটা গোটা দানা দেখা যাবে। যে কোনো স্থানেই দেখা যেতে পারে তবে হাতের আঙুলের ভাঁজে, কনুই, তলপেটে, পুরুষাঙ্গে, পা-হাতের তালুর প্রান্তে বেশি হতে দেখা যায়।
শিশুদের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করলে সুতার মতো লম্বা দাগ দেখা যেতে পারে। আক্রান্ত হওয়ার কিছুদিন পর বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে লোমকূপের গোড়ায় বিভিন্ন জীবাণু যেমন স্টেফাইলোককাস ও স্ট্রেপটোককাস নামক জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়।
ফলে ফোড়ার মতো গোটা দেখা দেয় এবং পেকে যায়। এ ছাড়া যেমন ইমপেটিগো অর্থাৎ ত্বকের উপরের আবরণে ইনফেকশন দেখা দেয়। ইকথাইমা অর্থাৎ ত্বকে গভীর ক্ষত দেখা দেয় এমনকি ত্বকের সেলুলাইটিসও দেখা দিতে পারে।
শিশুদের ক্ষেত্রে একটু দীর্ঘস্থায়ী হলে এর থেকে ক্রনিক একজিমার সৃষ্টি হয়। এ রোগকে নির্ণয় করতে হলে বিস্তারিতভাবে রোগীর থেকে সব শুনতে হবে এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পরীক্ষা করতে হবে।
খুঁজে দেখতে হবে নালিগর্ত পাওয়া যা কিনা, সাধারণভাবে জীবাণু শরীরে ঢোকার দুই সপ্তাহ পর দেহে চুলকানি শুরু হবে এবং রাতের বেলায় প্রচণ্ড চুলকায়। রোগী আক্রান্ত হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর কিংবা পূর্ণ আক্রমণ ঘটলে সেক্ষেত্রে চুলকানির পরিমাণ কম থাকতে পারে।
যদিও রোগটির নাম অনেকেরই চেনা বা জানা তবে এ রোগটিকে ডায়াগনস্টিক করা কিন্তু খুব একটি সহজ ব্যাপার নয়। বিশেষ করে রোগটি যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়।
বিভিন্নভাবে বিভিন্ন ওষুধের মাধ্যমে এ রোগটির চিকিৎসা করা চলে। যেমন, ৫% পারিমিথ্রিন, ১% গামা বেনজিন, হেক্সাহক্লোরাইড, কিংবা ২৫% সালফার ভ্যাসিলিকের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করা যায়।
ওষুধ ব্যবহারের পূর্বে রোগীকে ভালো করে সাবান মেখে গোসল করে নিতে হবে। তারপর মুখমণ্ডল বাদে ঘাড় থেকে শুরু করে সারা শরীরে ওষুধ মাখতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময় ধরে গায়ে মেখে রাখতে হবে।
পূর্বে ব্যবহার করা সব কাপড় ১০ মিনিট ধরে গরম পানিতে ফুটিয়ে ধুয়ে নিতে হবে অথবা খুব ভালো করে সাবান দিয়ে ধুয়ে রৌদ্রে শুকিয়ে ইস্ত্রি করে নিয়ে ব্যবহার করলে পুনরায় আক্রমণের আশঙ্কা থাকে না।
ডা. দিদারুল আহসান
ত্বক ও যৌনব্যাধি বিশেষজ্ঞ
আল-রাজী হাসপাতাল,
ফার্মগেট, ঢাকা।
মোবাইল : ০১৭১৫৬১৬২০০।
