Logo
Logo
×

খবর

ট্রানজিটে পরীক্ষামূলক চলাচল

ভারতীয় পণ্য নিয়ে আজ চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়বে ‘এমভি সেঁজুতি’

Icon

চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২০, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ট্রানজিটের আওতায় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে পণ্য পরিবহনের অংশ হিসেবে চার কনটেইনার পণ্য চট্টগ্রাম বন্দরে আজ এসে পৌঁছাবে। এই ভারতীয় পণ্য নিয়ে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি সেঁজুতি’ বন্দরে নোঙর করার কথা রয়েছে। বৃহস্পতিবার জাহাজটি কলকাতা বন্দর থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা করে। কাস্টমসের আনুষ্ঠানিকতা শেষে খালাসের পর এসব পণ্য বাংলাদেশের সড়কপথ ব্যবহার করে নিয়ে যাওয়া হবে ভারতের ত্রিপুরা ও আসাম রাজ্যে। ট্রানজিটের পণ্য পরিবহনের ট্রায়াল রান (পরীক্ষামূলক চলাচল) হিসেবে ভারতীয় এসব পণ্য আসছে। চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে সড়কপথে নির্বিঘ্নে পণ্য ভারতে পৌঁছানো যাচ্ছে কি না, তা দেখতেই এই ট্রায়াল রান। এতে সন্তুষ্ট হলে মূল পণ্য পাঠানো শুরু করতে পারে ভারত।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর দিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোয় পণ্য পরিবহনের জন্য ২০১৮ সালের অক্টোবরে দিল্লিতে ভারত-বাংলাদেশ সচিব পর্যায়ে চুক্তি সই হয়। চলতি বছরের শুরুতে ট্রায়াল রান হওয়ার কথা ছিল। তবে করোনা পরিস্থিতিতে তা পিছিয়ে যায়।

চুক্তি অনুযায়ী চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ভারতীয় পণ্য থেকে ট্যারিফ পাবে। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য আনার ক্ষেত্রে বর্তমানে যে ট্যারিফ চালু রয়েছে, এ ক্ষেত্রে সেই একই ট্যারিফ পরিশোধ করতে হবে। এ ছাড়া অন্যান্য ট্যারিফ আদায় করবে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস।

কাস্টম হাউসের উপ-কমিশনার এসএম শামসুজ্জামান এ প্রসঙ্গে যুগান্তরকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে আসা পণ্যবোঝাই ভারতীয় কনটেইনার চট্টগ্রাম বন্দরে খোলা হবে না। এগুলো স্ক্যানিং করা হবে। যদি স্ক্যানিংয়ে ঘোষণাবহির্ভূত কিছু থাকে সে ক্ষেত্রে চালান খালাস স্থগিত করে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে বিষয়টি অবহিত করা হবে। সব ধরনের ট্যারিফ পরিশোধ শেষে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সড়কপথে কনটেইনার আখাউড়া-আগরতলা স্থলবন্দর হয়ে ভারতে প্রবেশ করবে। মাঝে আর কোনো চার্জ আদায় করা হবে না।’

তিনি জানান, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস যেসব চার্জ আদায় করবে তার মধ্যে রয়েছে ডকুমেন্ট প্রসেসিং ফি প্রতি চালানে ৩০ টাকা, বিবিধ প্রশাসনিক ফি প্রতি টনে ১০০ টাকা, ট্রান্সশিপমেন্ট ফি প্রতি টনে ২০ টাকা, এসকর্ট চার্জ প্রতি টনে ৫০ টাকা, কনটেইনার স্ক্যানিং ফি প্রতি কনটেইনার ২৫৪ টাকা এবং সিকিউরিটি চার্জ প্রতি টনে ১০০ টাকা। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আখাউড়া পর্যন্ত পণ্যের সঙ্গে কাস্টমসের লোকজন থাকবে। তারা এসকর্ট দিয়ে পণ্য আখাউড়া পর্যন্ত পৌঁছে দেবে। এ জন্য কাস্টম হাউসের ৩ সদস্যের একটি টিম করা হবে। তবে দেশি আমদানিকারকদের পণ্য থেকে যে আমদানি শুল্ক নেয়া হয়, সেটা আদায় করা হবে না। কারণ, এসব পণ্য আমাদের দেশে ব্যবহৃত হবে না। নিয়মানুযায়ী যে দেশে পণ্য ব্যবহৃত হবে, সেই দেশই আমদানি শুল্ক আদায় করবে।

এদিকে ট্রানজিটের পণ্য চট্টগ্রাম বন্দরে কিছু বাড়তি সুবিধা পাবে বলে আলোচিত হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে দেশীয় আমদানিকারকরা যেখানে বন্দরে কনটেইনার রাখার ক্ষেত্রে চার দিন পর্যন্ত ফ্রি সুবিধা পান, সে ক্ষেত্রে ট্রানজিটের পণ্য এই সুবিধা পাবে ২৮ দিন পর্যন্ত।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) জাফর আলম যুগান্তরকে বলেন, ‘ট্রান্সশিপমেন্টের ক্ষেত্রে ২৮ দিনের ট্যারিফ ফ্রি সুবিধা রয়েছে। তবে ট্রানজিটের ক্ষেত্রে নয়।’

ভারতীয় পণ্যবোঝাই জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে অগ্রাধিকার বার্থিং পাবে বলেও বিভিন্ন মহলে আলোচিত হচ্ছে। তবে চট্টগ্রাম বন্দরের এই কর্মকর্তা জানান, চুক্তিতে ‘প্রায়োরিটি বার্থিংয়ের’ কোনো বিষয় নেই। চট্টগ্রাম বন্দরে যে নিয়মিত বার্থিং মিটিং হয়, সেখানে ভারতীয় পণ্যবোঝাই জাহাজ বার্থিং দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

এমভি সেঁজুতি জাহাজের স্থানীয় এজেন্ট ম্যাঙ্গো শিপিং লাইনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়াকুব ভূঁইয়া সুজন জানান, জাহাজটি সকাল ৮টা নাগাদ বহির্নোঙরে ভিড়বে। বন্দরের এনসিটি-১ জেটিতে বার্থিং দেয়া হবে। আজই ভারতীয় পণ্যবোঝাই চারটি কনটেইনার জাহাজ থেকে খালাস করা হবে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম