‘তুলে নিয়ে বিয়ে করলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার!’
প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য
প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০১৮, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
‘তুলে নিয়ে বিয়ে করলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার!’ শিরোনামে রোববার যুগান্তরে প্রকাশিত প্রধান সংবাদসহ সংশ্লিষ্ট আরও তিনটি সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. মিজানুর রহমান, পিপিএম (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্)। রোববার রাতে নিজের স্বাক্ষরিত প্রতিবাদটি যুগান্তর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। এতে মূল বক্তব্য হিসেবে তিনি দাবি করেন, প্রকাশিত সংবাদে তাকে জড়িয়ে এবং তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়েছে, তা মিথ্যা ও বানোয়াট। বলা হয়, তার সম্মানহানি করার লক্ষ্যে এ ধরনের মিথ্যা বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়েছে। তাছাড়া তিনি বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন অত্যন্ত ভালো, যা পুলিশ বিভাগে সবাই অবগত আছেন। আমার স্ত্রীর সঙ্গে জীবনে কখনও কোনো ঝগড়া-বিবাদ হয়নি; সুতরাং তাকে ডিভোর্স দেয়ার প্রশ্নই আসে না। তাছাড়া মরিয়ম আক্তার ইকোর বিরুদ্ধে দুটি মামলার মধ্যে একটি বিচারাধীন ও অন্যটি তদন্তাধীন আছে। মামলার সত্য-মিথ্যার বিষয়ে আদালত এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন।’
প্রতিবাদপত্রের অপর এক স্থানে তিনি উল্লেখ করেন, ‘মরিয়ম আক্তার ইকো গত বছরের মার্চ মাসের শেষদিকে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হেড অফিসের একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ৮ মার্চ রমনা থানার একটি জিডি (নং-৫৪০) থানা কর্তৃক সুষ্ঠু তদন্ত না হওয়ায় আমার কাছে আসেন। তখন আমি তাকে তৎকালীন রমনা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মশিউর রহমানের কাছে পাঠাই। পরে মো. মশিউর রহমান আমাকে মৌখিকভাবে জানায়, মরিয়ম আক্তার ইকো একজন প্রতারক এবং মিথ্যাবাদী। রমনা থানার জিডি নং-৫৪০ তারিখ ০৮/০৩/২০১৫। তদন্তকালে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। ডিবি পুলিশ কর্তৃক তদন্তেও এ বিষয়ে সত্যতার প্রমাণ পাইনি। মরিয়ম আক্তার ইকো প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তাকে বিভিন্ন সময়ে হয়রানি করেন। পরে বিভিন্ন অভিযোগে মরিয়ম আক্তার ইকো প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে চাকরিচ্যুত হয়। দরখাস্তে উল্লিখিত মরিয়ম আক্তার ইকোর সঙ্গে আমার ফেসবুকে পরিচয়ের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। ওই মহিলাকে গাড়িতে করে আমার ভাইয়ের বেইলি রোডের বাসায় অস্ত্র ঠেকিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি সত্য নয়। মরিয়ম আক্তার ইকো আমার ভাইয়ের ১নং বেইলি রোডস্থ বেইলি রিজ অ্যাপার্টমেন্টের এম-৪ বাসায় রাত অনুমান ৮টার দিকে কর্তব্যরত দারোয়ান মো. মোস্তফার নিষেধ অমান্য করে জোর করে বাসায় প্রবেশ করে ভাংচুর এবং রান্নাঘরে ঢুকে নিজের ওড়নায় আগুন লাগিয়ে ক্ষতিসাধন করে। ওই সময়ে আমি ও আমার স্ত্রী বাসার বাইরে ছিলাম। এ ব্যাপারে বাসায় অবস্থানরত আমার ভাগিনা আসিফ আরেফিন রমনা থানায় মামলা দায়ের করে। মামলাটি রমনা থানা পুলিশ তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দাখিল করে।’ একইভাবে প্রতিবাদে ইকোর সঙ্গে তার বিয়ের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। দাবি করা হয়, আমার ছবির সঙ্গে তার ছবি সংযুক্ত করে ফেসবুকে আপলোড করে ইকো। বলা হয়, মেয়ের মা কুইন তালুকদার গত ১৮ ডিসেম্বর যে অভিযোগ এনেছেন, তা ২ জানুয়ারি লিখিতভাবে প্রত্যাহার করে নেন।
প্রতিবেদকের বক্তব্য : প্রকাশিত সংবাদটিতে মিথ্যা বা অসত্য বলে কোনো তথ্য নেই। নেই প্রতিবেদকের নিজস্ব কোনো বক্তব্য। বরং যা ছাপা হয়েছে তা প্রমাণ করার মতো যথেষ্ট তথ্য-উপাত্ত যুগান্তরের হাতে রয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. মিজানুর রহমান অবশ্যই পুলিশের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। কিন্তু শুধু তিনি কেন, মিথ্যা সংবাদ ছেপে কোনো নাগরিকের সম্মান ক্ষুণœ করার অধিকার দেশের প্রচলিত আইন কাউকে দেয়নি। যুগান্তরের সম্পাদকীয় নীতিও সেটি নয়। যুগান্তর তার দীর্ঘ পথচলায় সাহসের সঙ্গে জনস্বার্থে সমাজের অন্যায়-দুর্নীতির বিরুদ্ধে গঠনমূলক ও তথ্যনির্ভর সংবাদ প্রকাশ করে আসছে। তাই প্রতিবেদক দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চায়, মরিয়ম আক্তার ইকোর সঙ্গে ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিয়ে ও বিয়ে-পরবর্তী সময়ে যেসব ঘটনা ঘটেছে এবং এর বাইরে এই পুলিশ কর্মকর্তাকে নিয়ে আরও যেসব অডিও, আপত্তিকর ভিডিও ও স্থিরচিত্র এখনও সংরক্ষিত আছে, তার বেশিরভাগ প্রকাশ করা হয়নি। অনেক কিছু প্রকাশযোগ্য নয়। সঙ্গতকারণে প্রকাশিত সংবাদ প্রমাণে যুগান্তর কর্তৃপক্ষ সদা প্রস্তুত রয়েছে।
