মেট্রোরেলের উদ্বোধন ২৮ ডিসেম্বর
উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী : সেতুমন্ত্রী
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২২, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
স্বপ্নের মেট্রোরেলের উদ্বোধন আগামী ২৮ ডিসেম্বর। দেশের প্রথম এই বৈদ্যুতিক ট্রেনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের অভ্যর্থনা উপকমিটির প্রস্তুতি সভায় বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানান সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শুরুতে ট্রেনটি চলবে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত। একজন নারীচালক প্রথম ট্রেন চালাবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, মেট্রোরেল চালু হলে উত্তরা থেকে মতিঝিল হয়ে কমলাপুর রুটের যানজট কমবে, জনজীবনে স্বস্তি মিলবে। আপাতত এই সড়কের অর্ধেক অংশের বিদ্যমান সমস্যার সমাধান মিলবে। বাকি অর্ধেকের মধ্যে মতিঝিল পর্যন্ত অংশ আগামী বছরের ডিসেম্বরে এবং কমলাপুর পর্যন্ত অংশ ২০২৪ বা ২০২৫ সালের মধ্যে চালু হবে। তারা জানান, মেট্রোরেল চালু হলে ঢাকার যানজট অনেকাংশে কমবে। যাত্রীরা নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন। যাত্রা হবে আরামদায়ক, দ্রুতগতির ও নিরবচ্ছিন্ন। ঢাকার বিদ্যমান গণপরিবহণ নির্ধারিত সময়ে চলাচল করতে পারছে না। একেক দিন একেক সময়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছায়। আর মেট্রোরেল ছুটবে ১০০ কিলোমিটার গতিতে। শুরুতে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত আসতে সময় লাগবে প্রায় ২০ মিনিট। পরে যাত্রার সময় লাগবে ১৬ থেকে ১৭ মিনিট। মেট্রোরেল পুরোপুরি চালু হলে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহণ করতে পারবে।
মেট্রোরেল বাস্তবায়নে কাজ করছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। এ কোম্পানির আওতায় উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত এমআরটি-৬ নামক মেট্রোরেল বাস্তবায়ন কাজ চলছে। যার আংশিকের উদ্বোধন আগামী ২৮ ডিসেম্বর। এই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এমএএন সিদ্দিক যুগান্তরকে জানান, মেট্রোরেল উদ্বোধনের জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। উদ্বোধনের তারিখের ব্যাপারে এখনো কোনো নির্দেশনা জানতে পারিনি। তবে গণমাধ্যম সূত্রে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী মহোদয়ের আগামী ২৮ ডিসেম্বরের ঘোষণা শুনেছি। তিনি বলেন, মেট্রোরেল চালুর আগে সব ধরনের প্রস্তুতি নিখুঁতভাবে যাচাই-বাছাই করে সম্পন্ন করা হয়েছে। দিনের পাশাপাশি রাতেও ট্রেন চালিয়ে দেখা হয়েছে। মেট্রোরেল চালুর পর প্রথম থেকে সব সিটে যাত্রী নেওয়া হবে না। ধাপে ধাপে যাত্রীর সংখ্যা বাড়ানো হবে। ২০০ জন, ৩০০ জন এভাবে ধাপে ধাপে বাড়ানো হবে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশে ১০ সেট ট্রেন চলাচল করবে। মেট্রোরেলের সার্বিক বিষয় দেখভালের জন্য কারিগরি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি মেট্রোরেলের কার্যক্রম তদারকি কাজ শুরু করেছে।
ভাড়া : সরকার নির্ধারিত মেট্রোরেলের সর্বনিম্ন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ টাকা। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের ভাড়া হবে ৬০ টাকা। মতিঝিল পর্যন্ত চালু হলে ভাড়া হবে ১০০ টাকা। কমলাপুর পর্যন্ত চালু হলে ভাড়া হতে পারে ১২০ টাকা। এ ছাড়া প্রথম স্টেশন থেকে পল্লবী ও মিরপুর-১১ নম্বর স্টেশনের ভাড়া ৩০ টাকা, মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনের ভাড়া ৪০ টাকা, শেওড়াপাড়া স্টেশনের ভাড়া ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। স্মার্ট কার্ডে ভাড়া পরিশোধ করলে ১০ শতাংশ ছাড় দেওয়ার বিষয়ে চিন্তা করছে ডিএমটিসিএল। মেট্রোরেলে নিয়মিত চলাচলকারীদের সাপ্তাহিক, মাসিক ও পারিবারিক কার্ড দেওয়া হবে। মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনে থাকা যন্ত্রে এসব কার্ডে টাকা রিচার্জ করার সুযোগ থাকবে।
স্টেশন : উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। এই পথে ৯টি স্টেশন রয়েছে। সেগুলো হল-উত্তরা (উত্তর) দিয়াবাড়ি, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া এবং আগারগাঁও। এ ছাড়া আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত স্টেশন রয়েছে ৭টি। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে-বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কাওরান বাজার, শাহবাগ, টিএসসি, প্রেস ক্লাব ও মতিঝিল। মতিঝিল থেকে ১ দশমিক ১৬ কিলোমিটার কমলাপুর অংশের স্টেশনের সংখ্যা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।
