পদ্মা সেতু এলাকায় ‘বঙ্গবন্ধু অপেরা হাউজ’ নির্মাণ
অনুমোদনের জন্য যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে
সাংস্কৃতিক অগ্রগতিতে এটি হবে অনন্য সংযোজন -সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী
হক ফারুক আহমেদ
প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
পদ্মা সেতু এলকায় ‘বঙ্গবন্ধু অপেরা হাউজ’ নির্মাণসংক্রান্ত কাগজপত্র অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর পাঠানো হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, আসছে সপ্তাহেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে। এটি নির্মাণ হলে দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং চর্চায় এক ভিন্ন মাত্রা যুক্ত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ যুগান্তরকে বলেন, ‘আগামী সপ্তাহেই পদ্মা সেতুসংলগ্ন এলাকায় দেশের প্রথম অপেরা হাউজ (বঙ্গবন্ধু অপেরা হাউজ) নির্মাণ বিষয়ে সব কাগজপত্র প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের জন্য পাঠানো হবে। আশা করছি, এসংক্রান্ত প্রাথমিক অনুমোদন আমরা সহসাই পাব। অনুমোদন পাওয়া গেলে এটি হবে আমাদের দেশ ও জাতির সাংস্কৃতিক অগ্রগতিতে একটি বিশাল কাজ।’
তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া আমাদের আরও ২৪টি প্রকল্প বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপির) সবুজ পাতায় যুক্ত রয়েছে। অর্থাৎ এই পাতায় অন্তর্ভুক্ত প্রকল্পগুলো পর্যায়ক্রমে একনেকে অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় আছে। আমরা চেষ্টা করছি উপজেলা পর্যায়ের সংস্কৃতি কেন্দ্র নির্মাণের। পাশাপাশি জেলা শিল্পকলা একাডেমির মধ্যে যেগুলো সংস্কার দরকার সেগুলো সংস্কারের চেষ্টা করছি।’
প্রাথমিকভাবে সিডনি অপেরা হাউজের আদলে হাতিরঝিলে ‘ঢাকা অপেরা হাউজ’ নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। কাজও এগিয়ে গিয়েছিল অনেকখানি। সেখানে জমি অধিগ্রহণ করে এটি নির্মাণ করা হবে-এমনটাই পরিকল্পনায় ছিল। কিন্তু জমির মূল্য অনেক বেশি হওয়ায় পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনা হয়। এ ছাড়া অপেরা হাউজটি হাতিরঝিলে নির্মাণ করা হলে ওই এলকার যান চলাচলে সমস্যা হতে পারে। এসব বিবেচনায় অপেরা হাউজটি পদ্মা সেতুর আশপাশে নির্মাণ করা যায় কিনা সেরকম একটি প্রস্তাবনা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হচ্ছে প্রাথমিক অনুমোদনের জন্য। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত পাওয়ার পর পরবর্তী কাজ শুরু হবে। ডিজাইন, ড্রইং হবে।
চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী ‘বঙ্গবন্ধু অপেরা হাউজ’ নির্মাণে জাপানের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা চেয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে ‘ঢাকা অপেরা হাউজ কমপ্লেক্স’ শীর্ষক এ প্রকল্পের নকশা গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে উপস্থাপনও করা হয়েছিল। অপেরা হাউজটি যেখানেই নির্মাণ করা হোক না কেন এখানে অনেকগুলো মিলনায়তন, সিনেপ্লেক্স আর অনেকগুলো মঞ্চ থাকবে।
এ প্রসঙ্গে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ যুগান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউনিয়ন পর্যায় থেকে সংস্কৃতি চর্চাকে তুলে আনার কথা বলেছেন। একই কথা আমরা বলে আসছি ১ যুগ ধরে। উপজেলা পর্যায়ে মিলনায়তন, ইউনিয়ন পর্যায়ে মুক্তমঞ্চ প্রয়োজন। ঢাকা শহরে আরও ৫০টি অডিটোরিয়াম প্রয়োজন। প্রত্যেকটি বিভাগীয় শহরে অডিটোরিয়াম প্রয়োজন। অধিকাংশ জেলা শহরে মিলনায়তন থাকলেও আধুনিক সুযোগ সুবিধা নেই, লোকবল নেই। সারা দেশে জেলা উপজেলায় কোনো প্রশিক্ষক নেই। অপেরা হাউজ নির্মাণের পাশাপাশি এই বিষয়গুলোও নিশ্চিত করা প্রয়োজন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার ছয়টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন, যার সবগুলোই সংস্কৃতিবিষয়ক। এর মধ্যে রয়েছে-গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের জন্য নতুন বহুতল ভবন, পুরান ঢাকার রোজ গার্ডেন, ঢাকায় কবি নজরুল ইনস্টিটিউট ভবন, কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ শিল্পকলা একাডেমি ও আঞ্চলিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং জাতীয় জাদুঘরে শিশু গ্রন্থাগার। একই দিন তিনি কপিরাইট ভবনের নবনির্মিত ১২তলা ভবন উদ্বোধন করেন।
