বরুড়ার কচুর লতির বাজার ২৫ দেশে
মাসে আসছে তিন লাখ ডলার * প্রতিদিন রপ্তানি ৮০ টনের বেশি
তাবারক উল্লাহ কায়েস, কুমিল্লা
প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
দেশের সীমানা ছাড়িয়ে কুমিল্লার কচুর লতি যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপসহ বিশ্বের ২৫টি দেশে। জেলার বরুড়া উপজেলায় বাণিজ্যিক ভাবে চাষ হওয়া এ সবজির বাজার তৈরি হয়েছে দেশে-বিদেশে। প্রতিদিন ৮০ টনেরও বেশি লতি রপ্তানি হচ্ছে এ উপজেলা থেকে। দেশে যার বাজার মূল্য ৩০-৩২ লাখ টাকা। ঢাকা-চট্টগ্রাম হয়ে বিমানবন্দরের মাধ্যমে মাসে রপ্তানি হচ্ছে আড়াই থেকে তিন লাখ ডলার মূল্যের লতি।
দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও জনপ্রিয় হয়ে ওঠা এ কচু ও লতির চাষ হয় কীটনাশকের ব্যবহার ছাড়াই। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পোকা দমন ও এ অঞ্চলের মাটি উঁচু এবং উর্বর হওয়ায় এখানে বিষমুক্ত ও গুণগতমানের লতির উৎপাদন হয়ে থাকে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, দেশ-বিদেশে চাহিদা বাড়ায় এবং উৎপাদন খরচের তুলনায় লাভ বেশি হওয়ায় বাণিজ্যিক ভাবে কচু চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। একবার রোপণ করলে বছরের ৯ মাস ফলন পাওয়া যায়। তবে মধ্যস্বত্বভোগী থাকায় কৃষকদের লাভের একটি অংশ চলে যাচ্ছে তাদের হাতে। তাই, কৃষকরা সরাসরি রপ্তানিকারকদের কাছে বিক্রির সুযোগ পেতে সরকারের সহায়তা চান।
উপজেলার আগানগর, ভবানীপুর, খোশবাস ও শিলমুড়ি ইউনিয়নসহ বরুড়ায় চলতি মৌসুমে ১০০ হেক্টরের বেশি জমিতে কচু ও লতির চাষ হয়েছে। স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যাপারীরা প্রতিদিনই কৃষকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কচু ও লতি সংগ্রহ করছেন। বাড়িতে নারীরা এসব লতি ও কচু পরিষ্কার করে আঁটি বাঁধেন। কচু আর লতিকে ঘিরে স্থানীয় ভাবেও কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
কচু ও লতি ব্যবসায়ী আবদুল মতিন ও মোস্তফা কামাল জানান, চাষিদের এখন আর বাজারে যেতে হয় না। উপজেলায় অর্ধশতাধিক ব্যাপারী রয়েছেন, তারাই কৃষকদের কাছ থেকে কেজিতে মোটা লতি ৪৫-৫০, চিকন ২৫-৩০ টাকায় সংগ্রহের পর প্রতিদিন বিকালে ট্রাকে ঢাকা-চট্টগ্রাম পাঠিয়ে দেন। সেখান থেকে বাছাই করা লতি ও কচু কিনে এজেন্সিগুলো বিদেশে পাঠাচ্ছে। বাকিগুলো চলে যাচ্ছে বিভিন্ন আড়তে।
বরুড়ার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. গোলাম সারওয়ার ভূঁইয়া বলেন, ফলন এবং ভালো দাম পেয়ে এখানকার কৃষকরা ক্রমেই লতি চাষে ঝুঁকছেন। সুস্বাদু এ লতির আরেকটা ভালো বৈশিষ্ট্য হচ্ছে খাওয়ার পর গলা চুলকায় না। কারণ, পরিচ্ছন্নভাবে চাষ করা লতির জমিতে কৃষকরা অতিরিক্ত জিংক ব্যবহার করে থাকেন।
