Logo
Logo
×

খবর

পর্যালোচনা কমিটির প্রথম বৈঠক

বৈদেশিক ঋণের খরচ বাড়াতে চার নির্দেশনা

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৭ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

চলমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় বৈদেশিক ঋণ ও অনুদানের অর্থ আছে এমন প্রকল্পের বাস্তবায়ন বাড়াতে চার নির্দেশনা দিয়েছে পর্যালোচনা কমিটি। বুধবার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে বৈঠক হয়। এতে ৩৬ জন সিনিয়র সচিব ও সচিব অংশ নেন।

সভায় অংশ নেওয়া দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুগান্তরকে জানান, সভায় বৈদেশিক সহায়তা (ঋণ ও অনুদান) আছে ২৭৯টি প্রকল্পের অবস্থা খতিয়ে দেখা হয়। এগুলোর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি প্রকল্পে ধীরগতি বিরাজ করছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে কমিটির পক্ষ থেকে দেওয়া নির্দেশনাগুলো হলো-প্রথমত, প্রকল্পের গতি বাড়িয়ে বৈদেশিক অর্থের খরচ বাড়াতে তৎপর হতে হবে। দ্বিতীয়ত, প্রকল্প বাস্তবায়ন পর্যায় কোথাও সমস্যা হলে প্রয়োজনে মুখ্য সচিবের হস্তক্ষেপ কামনা করা যাবে। তৃতীয়ত, প্রকল্প পরিচালক নিয়োগে কোনোভাবেই দেরি করা যাবে না। চতুর্থত, প্রকল্পে প্রস্তুতি কার্যক্রম আগেভাগেই করে রাখতে হবে। যেমন ক্রয় পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন পরিকল্পনা ইত্যাদি কাজ করা থাকলে বাস্তবায়ন সহজ হয়।

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, সার্বিকভাবে বৈদেশিক সহায়পুষ্ট প্রকল্পে কোনো সমস্যা আছে কিনা সেটি দেখা হয়েছে। সেগুলো দ্রুত সমাধানের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রকল্পের গতি বাড়িয়ে বৈদেশিক অর্থের ব্যয় বাড়াতে যে কোনো ব্যবস্থা নিতে তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, গত ২৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে পরিকল্পনা কমিশনের সভা হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বৈদেশিক অর্থায়নপুষ্ট প্রকল্পগুলোর অর্থায়ন যথাযথভাবে ব্যবহারের বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি হয়েছে। এই কমিটি ত্রৈমাসিকভিত্তিক অগ্রগতি খতিয়ে দেখবে। এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম বৈঠকটি হচ্ছে। বৈঠকে আরও যে দুটি বিষয় আলোচনা হবে সেগুলো হলো-গ্রিন অ্যান্ড ক্লাইমেট রোজলিয়েন্ট ডেভেলপমেন্ট (জিসিআরডি) নীতিমালার আলোকে প্রকল্প নির্ধারণ এবং প্রজেক্ট প্ল্যানিং সিস্টেম (পিপিএস) সফটওয়্যারের মাধ্যমে অনলাইনে প্রকল্প প্রক্রিয়করণ।

আইএমইডি সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো বৈদেশিক সহায়তা থেকে ব্যয় করেছে ২৮ হাজার ৩৮৪ কোটি টাকা বা ৩০ দশমিক ২০ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে ব্যয় হয়েছিল ২৯ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা বা ৩১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। তুলনা করলে দেখা যায়, এখন পর্যন্ত এ অর্থবছরে কম ব্যয় হয়েছে ৭৭১ কোটি টাকা। এদিকে চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে এডিপি বরাদ্দ দেওয়া আছে ৯৪ হাজার কোটি টাকা। আগামী ১২ মার্চ অনুষ্ঠেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে উত্থাপন হতে যাওয়া সংশোধিত এডিপিতে কমছে সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা। এমন পরিস্থিতিতে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হলো।

বৈঠকে আরও বক্তব্য দেন কমিটির সদস্য সচিব ও পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকার।

বৈঠকে এডিপি/আরএডিপি অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরণের আগে মন্ত্রণালয়/বিভাগ যথাযথভাবে পরীক্ষা করে পরিকল্পনা কমিশনে অনলাইনে প্রেরণের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়। এ ছাড়া বৈদেশিক অর্থায়ন প্রাপ্তির লক্ষ্যে গ্রিন অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স ডেভেলপমেন্ট নীতিমালার আলোকে যথাযথ যাচাই করে প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানোর জন্য সভায় নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এছাড়া চলতি অর্থবছরের প্রস্তাবিত আরএডিপিতে প্রকল্প ঋণ/অনুদান ব্যবহারে ৩৪ শতাংশের নিচে অগ্রগতিসম্পন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগসমূহের প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করা হয়। বৈদেশিক অর্থায়নপুষ্ট প্রকল্পসমূহের ধীর অগ্রগতির কারণ বা চ্যালেঞ্জ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয় বৈঠকে। বৈদেশিক অর্থায়নপুষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রকিউরমেন্ট প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপে উন্নয়ন সহযোগীর কাছ থেকে সম্মতি বা অনাপত্তি গ্রহণের বিষয়টি সহজীকরণের জন্য প্রয়োজনে রাষ্ট্রদূতগণসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে সভা করার বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগকে (ইআরডি) অনুরোধ করা হয়। একই সঙ্গে ভারতীয় ঋণের মাধ্যমে বাস্তবায়িত কিছু প্রকল্পে উদ্ভূত জটিলতা দ্রুত নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ইআরডিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম