Logo
Logo
×

দ্বিতীয় সংস্করণ

রাজধানীর ডিপিএস এসটিএস স্কুল

সুদে ঋণ নিয়ে টিউশন ফি পরিশোধে চাপ

Icon

যুগান্তর রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৬ জুন ২০২০, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সুদে ঋণ নিয়ে টিউশন ফি পরিশোধে চাপ

ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি পরিশোধে ঋণের ব্যবস্থা করেছে রাজধানীর ডিপিএস এসটিএস (দিল্লি পাবলিক) স্কুল কর্তৃপক্ষ। মাইডাস ফাইন্যান্সিং কোম্পানির কাছ থেকে দুই বছর মেয়াদে এ ঋণ নিতে পারবেন অভিভাবকরা। এজন্য ১৪ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে। এছাড়া ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা সার্ভিসসহ অন্যান্য চার্জ দিতে হবে।

ওই ঋণ নিয়ে অভিভাবকদের স্কুলের টিউশন ফি পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। শনিবার অভিভাবকদের এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠানো হয়। এভাবে সুদে ঋণ নিয়ে টিউশন ফি পরিশোধের চাপ দেয়ায় অভিভাবকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

কয়েকজন অভিভাবক যুগান্তরকে বলেন, স্কুলের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষকরা স্কুলের অনলাইন শিক্ষার উদ্যোগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষায় অবিচ্ছিন্ন ধারাবাহিকতা বজায় রাখছে। অনলাইন ক্লাসগুলোয় অভিভাবক-শিক্ষার্থীরা শতভাগ সমর্থ রয়েছে।

বর্তমানে স্কুলের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে শিক্ষার্থীদের কাছে টিউশন ফি আদায় করাটা জরুরি হয়ে পড়েছে। তারা আরও জানান, স্কুলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে অনেক অভিভাবক আর্থিক সংকটে আছেন। এজন্য স্কুলের পক্ষ থেকে মাইডাস ফাইন্যান্সিং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে অভিভাবকদের ঋণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মাইডাসের জেনারেল ম্যানেজার মনিরুল ইসলাম বলেন, অভিভাবকদের টিউশন ফির বিপরীতে ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা করতে স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। মাইডাস কর্তৃপক্ষ বিষয়টির সঙ্গে সম্মতি প্রকাশ করেছে। বিশেষ একটা স্কিমের অধীনে এ ঋণ দেয়া হবে।

তিনি বলেন, তিনটি উপায়ে তারা ঋণ দেয়ার চিন্তা করছেন। একটি হচ্ছে- সশরীরে অফিসে গিয়ে ফরম গ্রহণ করে প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।

দ্বিতীয়টি হচ্ছে, অনলাইনে ফরম রাখা হবে। সেখান থেকে নিয়ে আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। আর তৃতীয়টি হচ্ছে, স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে ঋণের আবেদনের ফরম রাখা হবে। সেখান থেকে ফরম নিয়ে আবেদন করতে হবে।

তবে ফরম বিতরণের প্রক্রিয়া যেটাই হোক না কেন, স্কুল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন সম্পন্ন করা হবে। স্কুল ভর্তির কাগজপত্র দেখে আবেদনকারী ঋণ পাওয়ার যোগ্য কি না, সেটা নির্ধারণ করা হবে। এরপর ঋণ দেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, ঋণ বাবদ ১৪ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে। আবেদন ফরমের দাম দিতে হবে ২০০ টাকা। এছাড়া সার্ভিস চার্জ দিতে হবে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা।

এর আগে আরেক দফা টিউশন ফির জন্য প্রতিষ্ঠানটি চাপ সৃষ্টি করে। তখন অভিভাবকদের পক্ষ থেকে টিউশন ফি মওকুফের আবেদন করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছিল। তবে প্রতিষ্ঠানটি এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত ৫০ শতাংশ টিউশন ফি মওকুফ করছে বলে সম্প্রতি অভিভাবকদের ইমেইলে জানিয়েছে।

এ বিষয়ে ডিপিএস এসটিএস স্কুলের অভিভাবক ফোরামের সভাপতি ব্যরিস্টার ওমর ফারুক যুগান্তরকে বলেন, যেখানে মানুষ প্রতিদিন নিজেদের মৌলিক চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন, সেখানে লোন নিয়ে টিউশন ফি পরিশোধ করতে বলছেন।

বিষয়টি নিয়ে ডিপিএস এসটিএস স্কুল ঢাকার অধ্যক্ষ মধু ওয়াল বলেন, আমরা অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাদের জানিয়েছি, সম্প্রতি শেষ হওয়া সাধারণ ছুটির দুই সপ্তাহের মধ্যে তারা বকেয়া টিউশন ফি পরিশোধ করতে পারবেন। 

এছাড়া ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে কোনো টিউশন ফি বাড়াবে না স্কুল কর্তৃপক্ষ। বার্ষিক টিউশন ফি পরিশোধের ক্ষেত্রে চারটি কিস্তি থেকে বাড়িয়ে ১০টি কিস্তি করা হয়েছে এবং এজন্য অতিরিক্ত কোনো চার্জ নেয়া হবে না। 

এছাড়া মাইডাস ফাইন্যান্সিংয়ের পক্ষ থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে যেন অভিভাবকরা ২৪ মাসের ইএমআই লোনে টিউশন ফি পরিশোধের সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন।

পাবলিক

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম