Logo
Logo
×

দ্বিতীয় সংস্করণ

আসন্ন মুদ্রানীতি

ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে টাকার জোগান বৃদ্ধির পরামর্শ

Icon

যুগান্তর রিপোর্ট

প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২০, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

করোনার প্রভাব মোকাবেলা করে দেশের সার্বিক অর্থনীতিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বাজারে কম সুদে এবং সহজ শর্তে টাকার প্রবাহ বাড়াতে হবে। সম্প্রতি দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও অর্থনীতিবিদরা বাংলাদেশ ব্যাংককে আসন্ন মুদ্রানীতির জন্য এ পরামর্শ দিয়েছেন। তারা বলেছেন, করোনার আঘাতের কারণে অর্থনীতির যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে নিতে সব খাতের সক্রিয় ও আন্তরিক অংশগ্রহণ জরুরি। এজন্য যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি তার সবকিছু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে রয়েছে, সেগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। আর যেসব বিষয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে নেই, সেগুলোর ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল বিভাগকে যথাযথভাবে বলতে হবে। একই সঙ্গে সেটি হচ্ছে কি না, তা-ও নজরে রাখতে হবে। করোনায় সৃষ্ট অর্থনৈতিক স্থবিরতার কারণে স্বল্প আয়ের মানুষের আয় কমেছে বা অনেকের বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকেই পরিস্থিতি বিবেচনায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো পণ্য কিনছেন না। এতে অর্থনীতিতে স্থবিরতা আরও জেঁকে বসেছে।

এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য তাদের পরামর্শ হচ্ছে- আগে মানুষের মধ্যে করোনার ভয় কাটাতে হবে, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক কর্মসূচি ঘোষণা করতে হবে। কতদিনে করোনা কোন পরিস্থিতিতে যাবে, তার একটি আগাম কর্মপরিকল্পনা থাকতে হবে। এর ফলে মানুষ স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে আসতে উৎসাহিত হবে। মানুষের চলাচল পুরোপুরি শুরু হলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল হবে। তখনই বাজারে ঋণপ্রবাহ বাড়বে। সবার আগে বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত শিল্পকারখানাকে পুরোদমে সচল করতে হবে। নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এর মাধ্যমে মানুষের কর্মসংস্থান হবে। ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে। তখন উৎপাদিত পণ্য ভোক্তারা ক্রয় করবে। এভাবে অর্থনীতিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে আসন্ন মুদ্রানীতিতে কৌশল নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের জন্য প্রথম মুদ্রানীতি এ মাসের শেষদিকে ঘোষণা করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন এটি তৈরির কাজ চলছে। করোনার প্রভাবে যখন অর্থনীতি বিপর্যস্ত, তখন অর্থনীতিকে স্বাভাবিক ধারায় ফিরিয়ে আনতে কী ধরনের মুদ্রানীতি প্রণয়ন করা উচিত, সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ীসহ অংশীজনের মতামত চেয়েছিল। ৭ জুলাই পর্যন্ত অংশীজনের মতামত নেয়া হয়েছে। এতে মতামত দিয়েছেন দেশের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন, অর্থনীতিবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন ব্যক্তি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এগুলো এখন সমন্বয় করছেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, এবারের মুদ্রানীতিতে করোনার অভিঘাত থেকে অর্থনীতিকে উদ্ধার করে স্বাভাবিক ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ থাকবে। অংশীজনরাও সে ধরনের পরামর্শ দিয়েছেন।

অংশীজনরা আরও বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজের অংশ হিসেবে মুদ্রার সরবরাহ বাড়ানো এবং মূল্যস্ফীতির হারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। অন্যান্য খাতে যেসব পদক্ষেপ নেয়া জরুরি সেগুলো সম্পর্কে সরকাররের উচ্চপর্যায়ে জানাতে হবে। কেননা শুধু কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন করলে বা টাকার প্রবাহ বাড়ালে কাজ হবে না। অন্যান্য সেবাসহ যোগাযোগ অবকাঠামোও নিশ্চিত করতে হবে।

তারা আরও বলেছেন, করোনায় যাদের আয় কমে বা বন্ধ হয়ে গিয়ে ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে, আগে তাদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে পদক্ষেপ নিতে হবে। এজন্য যারা যে কর্মে ছিলেন, যেভাবে আয় করতেন, সে পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থান বাড়ানোর পদক্ষেপ থাকতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে বাজারে চলমান টাকার সরবরাহের বাইরে আরও অতিরিক্ত প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা জোগান দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকই দেবে ৮২ হাজার কোটি টাকা। সরকার থেকে দেয়া হচ্ছে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংকগুলো দিচ্ছে ৫০ হাজার কোটি টাকা।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম