Logo
Logo
×

দ্বিতীয় সংস্করণ

জরিপের তথ্য

স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠীর অল্প বয়সিদের গর্ভধারণ বেশি

রংপুরে সর্বোচ্চ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

দেশে স্বল্প আয়ের পরিবারগুলোতে ১৮ বছরের আগে (অল্প বয়সে) গর্ভধারণের প্রবণতা বেশি। এ হার রংপুরে সর্বোচ্চ (৪৮.৯ শতাংশ)। সম্প্রতি দেশের ৬৪টি জেলায় ৩ হাজার ১৭৫টি পরিবারে পরিচালিত এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে। বুধবার ঢাকার একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠানে জরিপটি প্রকাশ করা হয়।

‘মনিটরিং দ্য ইমপ্লিমেন্টেশন অব এসডিজিস ফর এনশিওরিং গার্লস অ্যান্ড চাইল্ড রাইটস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক জরিপটি ২০২১ সালের জুন থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত পরিচালিত হয়। ওয়াই-মুভস প্রকল্পের আওতায় যৌথভাবে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, অপরাজেয় বাংলাদেশ, ইয়েস বাংলাদেশ এবং ইউথ ফর চেঞ্জ জরিপটি চালায়। যুবাদের মাধ্যমে জরিপটির তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। দৈবচয়ন প্রক্রিয়ায় দেশের ৬৪টি জেলায় ৩ হাজার ১৭৫টি পরিবার, বিশেষ করে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সি নারী অংশ নেয়। এতে দেখা যায়-সর্বনিম্ন আয়ের পরিবারে (মাসিক ২৫০০ টাকা) ১৮ বছর বয়সের আগে গর্ভধারণের হার সবচেয়ে বেশি (৪৬.৩ শতাংশ)। অংশগ্রহণকারী নারীদের ৩৫.৮ শতাংশ জানায়, ১৮ বছর বয়সের আগে তারা গর্ভধারণ করেন। এ হার রংপুরে সর্বোচ্চ (৪৮.৯ শতাংশ)। জরিপে আরও বলা হয়-অংশগ্রহণকারীদের (১৪-৪৯ বছর বয়স) ৯৩.৯ শতাংশ পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত এবং ৭৮.৪ শতাংশ তা অনুসরণ করে। ৬৯.৩ শতাংশ পরিবারে পুরুষ ও নারী সদস্য একত্রে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়। এ পদ্ধতি সম্পর্কে তারা মূলত টেলিভিশন (৫৩.৭ শতাংশ), কমিউনিটি ওয়ার্কার (৩৩.২ শতাংশ) এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম (২৯.৫ শতাংশ) থেকে তথ্য পেয়েছে। জরিপের সুপারিশে বলা হয়-সচেতনতা বৃদ্ধিতে রাষ্ট্র ও সুশীল সমাজের আরও জোরালো ভূমিকা পালন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সহিংসতা বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়ন নিশ্চিতে মনিটরিং ব্যবস্থা, বাজেট বৃদ্ধি, তথ্যের ঘাটতি পূরণ করা দরকার।

যুব উন্নয়ন সংস্থা ইয়েস বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক শামীম আহমেদ মূল প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন। তিনি জানান, ২১.৯ শতাংশ নারীর পারিবারিক মাসিক আয় ২ হাজার ৫০০ টাকার কম এবং ৯.৫ শতাংশের আয় ১০ হাজার টাকার বেশি। ১৮ শতাংশ নারী জানায়, গত ১২ মাসে তারা শারীরিক সহিংসতার শিকার হয়েছে। ১৪.৭ শতাংশ নারীর দাবি পড়াশোনা ও চাকরি ক্ষেত্রে পরিবারের পুরুষ সদস্যের দ্বারা তারা বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। ৪৬.৭ শতাংশ নারী ঘরে ও বাইরে শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সংসদ সদস্য অপরাজিতা হক বলেন, নারী, বিশেষ করে কন্যাশিশুদের অধিকার নিশ্চিতে সরকার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এ জরিপের ফলাফল সেই কার্যক্রমকে আরও সমৃদ্ধ করতে সহায়তা করবে। বিশেষ অতিথি সংসদ সদস্য আদিবা আঞ্জুম মিতা বলেন, শিশুদের ভবিষ্যৎ উন্নয়নে সরকার কাজ করছে।

বাল্যবিয়ে প্রতিরোধেও অগ্রগতি হয়েছে। নারীবান্ধব সমাজব্যবস্থা নিশ্চিতে সরকার কাজ করছে। প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর কবিতা বোস বলেন, নারীদের সার্বিক উন্নতির জন্য রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি অত্যন্ত জরুরি। নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজে নেওয়ার সক্ষমতা নারীদের অর্জন করবে-এ প্রতিশ্রুতি নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। সবাইকে একত্রে কাজ করতে হবে। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের প্রকল্প ব্যবস্থাপক (কৈশোরকালীন এবং প্রজনন স্বাস্থ্য) ডা. মনজুর হোসেন বলেন, কিশোর-কিশোরীদের উন্নয়নে আমরা নিরলসভাবে কাজ করছি। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অপরাজেয় বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ওয়াহিদা বানু। এতে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর আয়েশা সিদ্দিকী নার্গিস, গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিটের (জিআইইউ) উপপরিচালক (ইনোভেশন) আরিফুল হক মামুন, মুস্তাসিম বিল্লাহ, ড. মুনিরা বেগম, ফেরদৌসী বেগম বক্তব্য দেন।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম