শপথের পর প্রথম ভাষণ
উদার সংবিধানের প্রতিশ্রুতি এরদোগানের
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান আরও উদার সংবিধান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। শনিবার তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেওয়ার পর প্রথম ভাষণে তিনি এ প্রতিশ্রুতি দেন। এদিকে, নতুন মন্ত্রিসভাও ঘোষণা করেছেন রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। এতে স্বাস্থ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী ছাড়া মন্ত্রিসভার প্রায় সব সদস্যকে পরিবর্তন করা হয়েছে। বিবিসি, রয়টার্স ও ডেইলি সাবাহ।
প্রথম ভাষণে এরদোগান সব নাগরিকের মধ্যে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন তুলে ধরে বলেন, সবার রাজনৈতিক মতাদর্শ এবং জাতিসত্তাকে শ্রদ্ধা করতে হবে।
তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় পার্লামেন্টে শনিবার তার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দেশটির জাতীয় টেলিভিশন অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করে। শপথে এরদোগান বলেন, আমি প্রেসিডেন্ট হিসাবে মহান তুর্কি জাতি ও এর ইতিহাসের সামনে আমার সম্মান ও সততার, রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষার শপথ করছি। তিনি আরও বলেন, আমি সংবিধান, আইনের শাসন, গণতন্ত্র, আতাতুর্কের নীতি ও সংস্কার এবং ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্রের নীতি মেনে চলব।
এরপরই প্রেসিডেন্ট প্যালেসে এক জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে বেশ কয়েকজন রাষ্ট্রীয় নেতা উপস্থিত ছিলেন। প্রেসিডেন্ট প্যালেসে জমকালো অনুষ্ঠানে অতিথিদের স্বাগত জানান এরদোগান ও তার স্ত্রী এমিনে এরদোগান।
নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণা : সাবেক প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা মেহমেত সিমসেককে এরদোগানের নতুন মন্ত্রিসভায় অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট হয়েছেন সেভডেত ইলমাজ। ১৮ সদস্যের মন্ত্রিসভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান হাকান ফিদান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন আলী ইয়ারলিকায়া। অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন মেহমেত সিমসেক। প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন ইয়াসার গুলার, তিনি তুরস্কের চিফ অব জেনারেল স্টাফ জেনারেল। শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন ইউসুফ তেকিন। আইনমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন ইলমাজ তুনশি। পরিবার ও সমাজসেবামন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন মাহিনুর ওজদেমি। যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন ওসমান আসকিন। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন ফাহরেত্তিন কোচা, তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া সিমসেক যখন ২০০৯ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে তুরস্কের অর্থমন্ত্রী ও উপপ্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তখন তিনি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। এখন তার মূল ভূমিকা হতে পারে, বছরের পর বছর ধরে চলা নীতি থেকে বের হয়ে এসে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি সত্ত্বেও সুদের হার কমিয়ে আনা ও বাজারের নিয়ন্ত্রণ রাষ্ট্রের হাতে নিয়ে আসা।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তুর্কি মুদ্রা লিরা ক্রমেই তার মান হারিয়েছে। আর এসব বিষয় সংস্কারে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন এরদোগান। চলতি বছরের এপ্রিলে তুরস্কে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ে ৪৪ শতাংশ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সুদের হার বাড়ানোয় বিরোধীরা এরদোগানের ব্যাপক সমালোচনা করেন। সমালোচনার জেরে জনগণের কাছেও কিছুটা জনপ্রিয়তা হারান এরদোগান। আর এ কারণেই এবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দ্বিতীয় ধাপে গড়ায়। এ জন্যই এরদোগানকে বিরোধী জোটের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল কিলিসদারোগলু বিপক্ষে জয় পেতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে।
এর আগে, ১৪ মে অনুষ্ঠিত প্রথম দফার ভোটে তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোগান এগিয়ে থাকলেও নির্বাচিত হতে ব্যর্থ হন। দেশটির নির্বাচনের নিয়ম অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট হতে হলে ৫০ শতাংশ সমর্থন পেতে হয়। প্রথম দফার নির্বাচনে এরদোগান পেয়েছিলেন ৪৯ দশমিক ৫২ শতাংশ ভোট। অন্যদিকে, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল কিলিসদারোগলু পান ৪৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ। ২৮ মে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে ৫২ দশমিক ১২ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন এরদোগান। অন্যদিকে, কামাল পান ৪৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ ভোট।
