অবশেষে গ্রেফতার আদম তমিজি হক
আদালতে তোলা হতে পারে আজ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
আলোচিত ব্যবসায়ী আদম তমিজি হককে অবশেষে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গুলশানের বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। পরে তাকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আজ রোববার তাকে আদালতে তোলা হতে পারে।
এদিকে তমিজি হকের গ্রেফতারের খবরে রাতেই বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা ডিবি কার্যালয়ের সামনে হাজির হন। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তমিজি হককে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তমিজি হকের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় একটি মামলা আছে। ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হারুন অর রশিদ আরও জানান, তমিজি হক একাধিক বিয়ে করেছেন। তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ এবং প্রতারণার অভিযোগও আছে।
ডিবি প্রধান বলেন, মামলা তো আছেই। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে হঠাৎ করেই তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় এসে বললেন তার মা হলেন অর্ধেক ইসরাইলের নাগরিক। তাই তাকে যেন ইসরাইল উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এমনকি আমেরিকার মেরিন সেনাদের তিনি আহ্বান করেছেন তাকে উদ্ধারের জন্য। শুধু তাই নয়, তিনি তার পাসপোর্ট আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেললেন। যে দেশের শিল্প কারখানা দিয়ে তিনি চলেন সেই দেশের পাসপোর্ট পুড়িয়ে কেন তিনি আনন্দ উল্লাস করলেন সে বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। যদি মনে হয় তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ তাহলে তাকে চিকিৎসার জন্য মানসিক হাসপাতালে (রিহ্যাবে) পাঠানো হবে। আর যদি মনে হয় তিনি এসব করছেন ইচ্ছাকৃতভাবে, সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে, তাহলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শনিবার রাত ১১টায় ডিবি কার্যালয়ের প্রধান ফটকে তমিজি হককে পুলিশবেষ্টিত অবস্থায় দেখা যায়। এ সময় ন্যাড়া মাথায় তমিজিকে নীল পাঞ্জাবি পরিহিত দেখা যায়। এমনকি দাড়ি কেটে ক্লিন সেভড ছিলেন তজিমি। তাকে একনজর দেখার জন্য ডিবি কার্যালয়ের গেটে ইউটিউবারদের ভিড় জমে যায়। একপর্যায়ে ভিড় সামাল দিতে পুলিশ তাকে দ্রুত অন্যত্র সরিয়ে নেয়। এর আগেও ১৬/১৭ নভেম্বর তার বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশের এলিট ফোর্স র্যাব। এ সময় কয়েক দফা তাকে বাড়ির বাইরে আনার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যার হুমকি দেওয়ায় তাকে গ্রেফতার থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয় র্যাব। সংশ্লিষ্টরা জানান, মি. কুকি নামে পরিচিত আদম তমিজি হক মূলত একজন ব্যবসায়ী। বাংলাদেশের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব রয়েছে তার। দীর্ঘসময় প্রবাসে থাকলেও কয়েক বছর আগে হঠাৎ দেশে ফিরে ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচনের ঘোষণা দেন তিনি। এমনকি রাতারাতি আওয়ামী লীগের পদ পেতেও সক্ষম হন। অবশ্য শেষ পর্যন্ত তাকে মেয়র পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।
জানা যায়, চলতি বছর নভেম্বরে টঙ্গী এলাকার এক রাজনীতিকের সঙ্গে তিনি বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে বাংলাদেশি পাসপোর্ট পুড়িয়ে দেশ ছাড়েন তমিজি। বিদেশের মাটিতে বসে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার শুরু করেন তিনি। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেন। পরে তাকে দ্রুত আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। একাধিক মামলা হয় সাইবার নিরাপত্তা আইনে।
