চ্যাম্পিয়ন ট্রফি পেল বসুন্ধরা কিংস
স্পোর্টস রিপোর্টার
প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০১৯, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
তিন ম্যাচ আগেই নির্ধারণ হয়ে গিয়েছিল প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের শিরোপাধারী কারা। কিন্তু শেষ দিনেই ট্রফি দেবে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। তাই একটা মধুর অপেক্ষাতেই ছিল বসুন্ধরা কিংস। শনিবার সেই অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ আসরে এসেই জেতা শিরোপা হাতে পেয়েছে তারা।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত শেষ ম্যাচে চট্টগ্রাম আবাহনীর সঙ্গে ১-১ গোলে ক্লান্তির এক ড্র করে কর্পোরেট দলটি। ম্যাচ শেষে বসুন্ধরা কিংসের হাতে ট্রফি তুলে দেন বাফুফের কর্মকর্তারা। রানার্সআপ ঢাকা আবাহনী, সেরা খেলোয়াড় কলিন্দ্রেস (বসুন্ধরা), সর্বোচ্চ গোলদাতা রাফায়েল (শেখ রাসেল), সেরা গোলকিপার আশরাফুল ইসলাম রানা (শেখ রাসেল) এবং ফেয়ার প্লে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেড।
প্রায় সাত মাসের এক লিগ। অনেকটাই ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত ফুটবলাররা। তাছাড়া চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ নির্ধারণ হয়ে যাওয়ায় নির্ভার ছিল পয়েন্ট টেবিলের ওপরের সারির দলগুলো। নির্ভার দেখা গেছে চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসের ফুটবলারদেরও। তবে ৯০ মিনিটের খেলা হলেও প্রথমার্ধেই নির্ধারিত হয়ে যায় ম্যাচের ফলাফল।
এই ম্যাচ দিয়েই শেষ হল লিগের ১১তম আসর। ২৪ ম্যাচে ৬৩ পয়েন্ট অর্জন করে বসুন্ধরা। রানার্সআপ ঢাকা আবাহনীর ৫৮ পয়েন্ট। লিগের ট্রফি তুলে দেয়া হবে কিংসদের হাতে। সেই আনন্দ উদযাপন করতে সমর্থকরা ছুটে আসেন গ্যালারিতে। চ্যাম্পিয়ন লেখা বসুন্ধরার জার্সি পড়ে স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে প্রায় হাজার দশেক দর্শক ছুটে আসেন।
যখনই কলিন্ড্রেসদের পায়ে বল তখনই উৎসব রেণু ছড়িয়ে পড়ে দর্শকদের মধ্যে। ম্যাচের শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টায় ছিল বসুন্ধরা কিংস। কিন্তু চট্টগ্রাম আবাহনীর রক্ষণভাগ দারুণ প্রতিরোধ গড়ে তোলে। যদিও রক্ষণের ভুলেই প্রথম গোলটি হজম করেছিল তারা। একাধিক গোলের সুযোগগুলো হাতছাড়া না করলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারত চট্টলার দলটিই।
ম্যাচের ৭ মিনিটে বাঁ প্রান্ত দিয়ে কলিন্দ্রেসের বাড়িয়ে দেয়া বল সতীর্থ ফুটবলার বুঝে নেয়ার আগেই হেড করে ক্লিয়ার করেন প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডার। ১৫ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে কলিন্দ্রেসের ডান পায়ের শট অল্পের জন্য জড়ায়নি জালে। পরের মিনিটেই এগিয়ে যায় চ্যাম্পিয়নরা।
বক্সের বাইরে থেকে বসুন্ধরার ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার মার্কোস ভিনিসিয়াস শট নিলে বক্সে বল পেয়েও ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন চট্টলার নাইজেরিয়ান ডিফেন্ডার মুফতালাওয়াল। গোলকিপার ও মুফতালাওয়ালের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সুযোগে বলটি আশ্রয় নেয় জালে। প্রথম গোলের দেখা পায় বসুন্ধরা কিংস (১-০)। পরের মিনিটেই দারুণ একটা সুযোগ আসে চট্টগ্রাম আবাহনীর।
তবে বল ডান পোস্টে লেগে ফেরত আসায় গোলবঞ্চিত হয় তারা। প্রথমার্ধের অন্তিম সময়ে পেনাল্টি পায় চট্টগ্রাম আবাহনী। কিরগিজস্তানের ডিফেন্ডার ড্যানিয়েলের স্পট-কিক ডাইভ দিয়েও আটকাতে পারেননি গোলকিপার জিকো (১-১)। ফলে সমতায় ফেরে চট্টলার দলটি। ৫৫ মিনিটে চট্টগ্রাম আবাহনীর নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড এনকোচা কিংসলের শট অল্পের জন্য জাল খুঁজে পায়নি। ৬৭ মিনিটে বাঁ প্রান্ত দিয়ে কলিন্দ্রেসের শট চলে যায় বারের ওপর দিয়ে। শেষ পর্যন্ত ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়ে দু’দল।
রোল অব অনার
মৌসুম চ্যাম্পিয়ন রানার্সআপ
২০০৭ ঢাকা আবাহনী মোহামেডান
২০০৮-০৯ ঢাকা আবাহনী মোহামেডান
২০০৯-১০ ঢাকা আবাহনী মোহামেডান
২০১০-১১ শেখ জামাল মুক্তিযোদ্ধা
২০১২ ঢাকা আবাহনী মুক্তিযোদ্ধা
২০১২-১৩ শেখ রাসেল শেখ জামাল
২০১৩-১৪ শেখ জামাল ঢাকা আবাহনী
২০১৪-১৫ শেখ জামাল শেখ রাসেল
২০১৬ ঢাকা আবাহনী চ. আবাহনী
২০১৭-১৮ ঢাকা আবাহনী শেখ জামাল
২০১৮-১৯ বসুন্ধরা কিংস ঢাকা আবাহনী
প্রিমিয়ার লিগের পয়েন্ট টেবিল
দল ম্যাচ জয় ড্র হার গোল পার্থক্য পয়েন্ট
বসুন্ধরা কিংস ২৪ ২০ ৩ ১ ৪০ ৬৩
ঢাকা আবাহনী ২৪ ১৯ ১ ৪ ৩২ ৫৮
শেখ রাসেল ২৪ ১৬ ৪ ৪ ২৩ ৫২
সাইফ স্পোর্টিং ২৪ ১৪ ৫ ৫ ১৬ ৪৭
আরামবাগ ২৪ ১০ ৩ ১১ ১ ৩৩
শেখ জামাল ২৪ ৭ ৭ ১০ -৬ ২৮
মুক্তিযোদ্ধা ২৪ ৬ ৮ ১০ -১২ ২৬
চ. আবাহনী ২৪ ৫ ১০ ৯ -৪ ২৫
মোহামেডান ২৪ ৬ ৭ ১১ -৯ ২৫
রহমতগঞ্জ ২৪ ৪ ১০ ১০ -১৯ ২২
ব্রাদার্স ২৪ ৫ ৬ ১৩ -২১ ২১
নোফেল ২৪ ৫ ৫ ১৪ -১৯ ২০
বিজেএমসি ২৪ ২ ৫ ১৭ -২২ ১১
(সর্বনিু পয়েন্টধারী দু’দলের চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে অবনমন হয়েছে)
