অপুর সংসারে নাগিন নাচ
টুইটারে অনেকে বলছেন, সদ্যপ্রয়াত শ্রীদেবীই নাকি প্রেরণা ওই নাচের! কেউ কেউ বলছেন, সুদূর ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ থেকে আমদানি! বিদেশ থেকে নয়, খোদ বাংলাদেশের অন্দরমহলেই জন্ম নিয়েছে ওই নাচ। যাতে মোহিত বিশ্বক্রিকেট। মুখে মুখে ঘুরছে ‘নাগিন নাচ’-এর ইতিকথা।
দিনকয়েক আগে ২১৪ তাড়া করে শ্রীলংকাকে হারিয়ে জয়োৎসবে হঠাৎ নাগিন ডান্স নেচেছিলেন ম্যাচের নায়ক মুশফিকুর রহিম। নিদাহাস ট্রফিতে এমন অদ্ভুতুড়ে নাচে থমকে গিয়েছিল ক্রিকেটবিশ্ব। ক্রিকেটে এমন সেলিব্রেশন আর কখনও দেখা যায়নি। ধারাভাষ্যকাররা তখন নাম দেন, ‘কোবরা ডান্স’।
বাংলাদেশে কিন্তু এটা প্রথম থেকেই নাগিন ডান্স হিসেবে পরিচিত। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই নাচের ‘জনক’ হিসেবে মুশফিকুরের নাম চালু হয়ে গেলেও আসল ঘটনা অন্য। বাংলাদেশের সবাই বলছেন, এর জনক নাজমুল ইসলাম অপু। সেই অপুর সংসারে হঠাৎ জন্ম নাগিন নাচের!
নাগিন ডান্স শুরু হয় কোথায়? অপুর সঙ্গে এখানে জড়িয়ে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ড্যারেন স্যামির নাম। নাগিন নাচের আবিষ্কারক অপু তুলে ধরেছেন এই নাচের জন্মবৃত্তান্ত। তার কথায়, ‘বাংলাদেশ লিগে ২০১৬ সালে রাজশাহী কিংসের হয়ে খেলার সময় বিপক্ষ টিমের ক্যাপ্টেন ছিল ড্যারেন স্যামি। ওকে ভয় দেখানোর জন্য নাগিন নাচ দেখাতাম। মজার ব্যাপার হল, ও ভয়ও পেত, মজাও পেত! ওখান থেকেই শুরু ব্যাপারটা। একটা ম্যাচে উইকেট নেয়ার পর আমি ওই নাচ নাচি। সেখান থেকেই শুরু।’ বাংলাদেশে এই নাগিন নাচই ‘অপুর নাচ’ হিসেবে পরিচিত।
হালফিলে এ নাচ সেলিব্রেশন হিসেবে তুলে ধরা হলেও এখন এই নাচ শ্রীলংকা-বাংলাদেশের ক্রিকেটীয় ঝামেলার অঙ্গ, কয়েক মাস আগে যার শুরু। বাংলাদেশ সফরে এসেছিল শ্রীলংকা। বাংলাদেশ টেস্ট, ওয়ানডে, টি ২০তে কার্যত কিছু করতে পারেনি। দুই টিমের ঠোকাঠুকি চলছিলই। দুই টিমের ক্রিকেটাররা একে অপরকে স্লেজিংও করছিলেন। এক ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক হয় বাঁ-হাতি স্পিনার অপুর। তিনি ওই ম্যাচে নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক উইকেট নিয়ে নাগিন নাচ নাচেন। তখন থেকেই পাল্টা জবাব হিসেবে বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা তুলে ধরতে থাকেন অপুর নাচ!
শ্রীলংকাকে হারিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে নিদাহাস কাপের ফাইনালে পৌঁছনোর ম্যাচে শুধু জয়ের পর নয়, অন্তত তিনবার উইকেট নেয়ার পর সাকিবের টিম এই নাচ নেচেছে। নাগিন নাচ সার্বিক জনপ্রিয়তা নিদাহাস ট্রফিতে। মুশফিকুরের ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্সের পর। শুক্রবার ছয় মেরে শ্রীলংকাকে হারানোর পর পুরো টিম নাগিন নাচ নেচেছে। গ্যালারিতে থাকা বাংলাদেশি সমর্থকরাও যোগ দিয়েছিলেন ওই সেলিব্রেশনে।
নাজমুল ওরফে অপু রয়েছেন বাংলাদেশ টি ২০ টিমে। প্রথম একাদশেও সুযোগ পাচ্ছেন। শুক্রবারও ছিলেন। কিন্তু উইকেট না পাওয়ায় তিনি নিজের ট্রেডমার্ক ‘নাগিন নাচ’ নাচতে পারেননি। এই সময়ের সৌজন্যে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
অপুর সংসারে নাগিন নাচ
টুইটারে অনেকে বলছেন, সদ্যপ্রয়াত শ্রীদেবীই নাকি প্রেরণা ওই নাচের! কেউ কেউ বলছেন, সুদূর ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ থেকে আমদানি! বিদেশ থেকে নয়, খোদ বাংলাদেশের অন্দরমহলেই জন্ম নিয়েছে ওই নাচ। যাতে মোহিত বিশ্বক্রিকেট। মুখে মুখে ঘুরছে ‘নাগিন নাচ’-এর ইতিকথা।
দিনকয়েক আগে ২১৪ তাড়া করে শ্রীলংকাকে হারিয়ে জয়োৎসবে হঠাৎ নাগিন ডান্স নেচেছিলেন ম্যাচের নায়ক মুশফিকুর রহিম। নিদাহাস ট্রফিতে এমন অদ্ভুতুড়ে নাচে থমকে গিয়েছিল ক্রিকেটবিশ্ব। ক্রিকেটে এমন সেলিব্রেশন আর কখনও দেখা যায়নি। ধারাভাষ্যকাররা তখন নাম দেন, ‘কোবরা ডান্স’।
বাংলাদেশে কিন্তু এটা প্রথম থেকেই নাগিন ডান্স হিসেবে পরিচিত। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই নাচের ‘জনক’ হিসেবে মুশফিকুরের নাম চালু হয়ে গেলেও আসল ঘটনা অন্য। বাংলাদেশের সবাই বলছেন, এর জনক নাজমুল ইসলাম অপু। সেই অপুর সংসারে হঠাৎ জন্ম নাগিন নাচের!
নাগিন ডান্স শুরু হয় কোথায়? অপুর সঙ্গে এখানে জড়িয়ে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ড্যারেন স্যামির নাম। নাগিন নাচের আবিষ্কারক অপু তুলে ধরেছেন এই নাচের জন্মবৃত্তান্ত। তার কথায়, ‘বাংলাদেশ লিগে ২০১৬ সালে রাজশাহী কিংসের হয়ে খেলার সময় বিপক্ষ টিমের ক্যাপ্টেন ছিল ড্যারেন স্যামি। ওকে ভয় দেখানোর জন্য নাগিন নাচ দেখাতাম। মজার ব্যাপার হল, ও ভয়ও পেত, মজাও পেত! ওখান থেকেই শুরু ব্যাপারটা। একটা ম্যাচে উইকেট নেয়ার পর আমি ওই নাচ নাচি। সেখান থেকেই শুরু।’ বাংলাদেশে এই নাগিন নাচই ‘অপুর নাচ’ হিসেবে পরিচিত।
হালফিলে এ নাচ সেলিব্রেশন হিসেবে তুলে ধরা হলেও এখন এই নাচ শ্রীলংকা-বাংলাদেশের ক্রিকেটীয় ঝামেলার অঙ্গ, কয়েক মাস আগে যার শুরু। বাংলাদেশ সফরে এসেছিল শ্রীলংকা। বাংলাদেশ টেস্ট, ওয়ানডে, টি ২০তে কার্যত কিছু করতে পারেনি। দুই টিমের ঠোকাঠুকি চলছিলই। দুই টিমের ক্রিকেটাররা একে অপরকে স্লেজিংও করছিলেন। এক ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক হয় বাঁ-হাতি স্পিনার অপুর। তিনি ওই ম্যাচে নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক উইকেট নিয়ে নাগিন নাচ নাচেন। তখন থেকেই পাল্টা জবাব হিসেবে বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা তুলে ধরতে থাকেন অপুর নাচ!
শ্রীলংকাকে হারিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে নিদাহাস কাপের ফাইনালে পৌঁছনোর ম্যাচে শুধু জয়ের পর নয়, অন্তত তিনবার উইকেট নেয়ার পর সাকিবের টিম এই নাচ নেচেছে। নাগিন নাচ সার্বিক জনপ্রিয়তা নিদাহাস ট্রফিতে। মুশফিকুরের ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্সের পর। শুক্রবার ছয় মেরে শ্রীলংকাকে হারানোর পর পুরো টিম নাগিন নাচ নেচেছে। গ্যালারিতে থাকা বাংলাদেশি সমর্থকরাও যোগ দিয়েছিলেন ওই সেলিব্রেশনে।
নাজমুল ওরফে অপু রয়েছেন বাংলাদেশ টি ২০ টিমে। প্রথম একাদশেও সুযোগ পাচ্ছেন। শুক্রবারও ছিলেন। কিন্তু উইকেট না পাওয়ায় তিনি নিজের ট্রেডমার্ক ‘নাগিন নাচ’ নাচতে পারেননি। এই সময়ের সৌজন্যে।