সাকিব-হৃদয়ে নতুন চূড়ায় বাংলাদেশ
ওয়ানডেতে নিজেদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ ও রানের হিসাবে সবচেয়ে বড় জয়ের দুটি রেকর্ডই নতুন করে লিখল টাইগাররা
ক্রীড়া প্রতিবেদক
১৯ মার্চ ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
গ্রাহাম হিউমের বলে বোল্ড হওয়ার পর নিজের ওপর চরম বিরক্ত হলেন তৌহিদ হৃদয়। অভিষেকেই স্বপ্নের তিন অঙ্কের উচ্চতা ছোঁয়ার সুযোগ ছিল হাতছোঁয়া দূরত্বে। আউট হওয়ার পর যেন তার ড্রেসিংরুমে যেতেই বড্ড কষ্ট হচ্ছিল। তবু বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে সবচেয়ে উজ্জ্বল শুরুর কীর্তিটা এখন তারই। অভিষেক রাঙানো তৌহিদের হৃদয় ভাঙল আট রানের আক্ষেপে। অভিষেকে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ (৯২) রান করলেও আট রানের হতাশায় পুড়েছেন তিনি। তার আগে ওয়ানডেতে দশম সেঞ্চুরির দুয়ার থেকে ফিরতে হলো বাংলাদেশ ক্রিকেটে রেকর্ডের বরপুত্র সাকিব আল হাসানকে। ওয়ানডেতে সাত হাজার রানের মাইলফলক ছোঁয়ার দিনে নড়বড়ে নব্বইয়ের (৯৩) শিকার হলেন এই বাঁ-হাতি অলরাউন্ডারও। এ দুই ব্যাটারের দিনে বাংলাদেশ দল পা রাখল নতুন উচ্চতায়। শনিবার সিলেটে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে আট উইকেটে ৩৩৮ রানের পাহাড় গড়ে বাংলাদেশ জিতেছে ১৮৩ রানে। ওয়ানডেতে নিজেদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ ও রানের হিসাবে সবচেয়ে বড় জয়ের দুটি রেকর্ডই নতুন করে লিখল টাইগাররা।
বাংলাদেশের আগের সর্বোচ্চ স্কোর ছিল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। ২০১৯ বিশ্বকাপে নটিংহ্যামে আট উইকেটে ৩৩৩ রান ছিল আগের সর্বোচ্চ। সব মিলিয়ে এটি বাংলাদেশের ২৪তম তিনশর বেশি রানের স্কোর।
সাত রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করা সাকিব বসেছেন মুশফিকের পাশে। ওয়ানডে ক্রিকেটে নব্বইয়ের ঘরে চারবার করে থেমেছেন এই দুই ব্যাটার। এর মধ্যে সাকিব দুবার নব্বইয়ের ঘরে নটআউট ছিলেন। আউট হলেন দুবার। মুশফিক তিনবার আউট হয়েছেন নড়বড়ে নব্বইয়ে, অপরাজিত ছিলেন এক ইনিংসে। তিন সংস্করণ মিলে আবার দুজনই আটবার করে নড়বড়ে নব্বইয়ে থামলেন। সব মিলিয়ে নব্বইয়ের ঘরে সবচেয়ে বেশি ২৮ ইনিংস শচীন টেন্ডুলকারের।
একই দিনে আরেকটি মাইলফলক ছুঁয়েছেন সাকিব। ওয়ানডেতে ৩০০ উইকেট এবং সাত হাজার রানের মাইফলক ছোঁয়া বিশ্বের দ্রুততম অলরাউন্ডার এখন তিনি। এজন্য সাকিবের লেগেছে মাত্র ২২৮ ম্যাচ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আগের সিরিজে সাকিব ৩০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন। সাত হাজার রানের মাইলফলক ছুঁতে সাকিবের প্রয়োজন ছিল মাত্র ২৪ রান। এদিন তিনি থামেন ৮৯ বলে ৯৩ রানে। সাত হাজার রান ও ৩০০ উইকেটের মাইলফলকে এর আগে পা রাখেন শ্রীলংকার সনথ জয়সুরিয়া ও পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদি।
এদিকে ওয়ানডে অভিষেকে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়লেন তৌহিদ হৃদয়। ২০১১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচেই ৬৩ রান করেছিলেন নাসির হোসেন। নাসির ও হৃদয় ছাড়া বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডে অভিষেকে ফিফটি করেছেন শুধু ফরহাদ রেজা। ২০০৬ সালে তিনি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করেন ৫০ রান। হৃদয় সেঞ্চুরির দৌড়ে ভালোভাবে নিজেকে এগিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু হিউমের এক ওভারেই সব গড়বড় হয়ে যায়। ৮১ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট পতনের পর পাঁচ নম্বরে নেমে আট চার ও দুই ছয়ে ৮৫ বলে ৯২ রান করেন তরুণ এই ব্যাটার। ওয়ানডে অভিষেকে নব্বইয়ের ঘরে আউট হওয়া ষষ্ঠ ব্যাটার হৃদয়। ওয়ানডে ক্রিকেটে একই ইনিংসে দুই ব্যাটারের নব্বইয়ের ঘরে আউট হওয়ার এটি ১১তম নজির।
ব্যাটিংয়ে সাকিব-হৃদয়ের পর বোলিংয়ে জ্বলে ওঠেন ইবাদত, নাসুম ও তাসকিন। ৩০.৫ ওভারে ১৫৫ রানে গুটিয়ে যায় আয়ারল্যান্ড।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাকিব-হৃদয়ে নতুন চূড়ায় বাংলাদেশ
ওয়ানডেতে নিজেদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ ও রানের হিসাবে সবচেয়ে বড় জয়ের দুটি রেকর্ডই নতুন করে লিখল টাইগাররা
গ্রাহাম হিউমের বলে বোল্ড হওয়ার পর নিজের ওপর চরম বিরক্ত হলেন তৌহিদ হৃদয়। অভিষেকেই স্বপ্নের তিন অঙ্কের উচ্চতা ছোঁয়ার সুযোগ ছিল হাতছোঁয়া দূরত্বে। আউট হওয়ার পর যেন তার ড্রেসিংরুমে যেতেই বড্ড কষ্ট হচ্ছিল। তবু বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে সবচেয়ে উজ্জ্বল শুরুর কীর্তিটা এখন তারই। অভিষেক রাঙানো তৌহিদের হৃদয় ভাঙল আট রানের আক্ষেপে। অভিষেকে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ (৯২) রান করলেও আট রানের হতাশায় পুড়েছেন তিনি। তার আগে ওয়ানডেতে দশম সেঞ্চুরির দুয়ার থেকে ফিরতে হলো বাংলাদেশ ক্রিকেটে রেকর্ডের বরপুত্র সাকিব আল হাসানকে। ওয়ানডেতে সাত হাজার রানের মাইলফলক ছোঁয়ার দিনে নড়বড়ে নব্বইয়ের (৯৩) শিকার হলেন এই বাঁ-হাতি অলরাউন্ডারও। এ দুই ব্যাটারের দিনে বাংলাদেশ দল পা রাখল নতুন উচ্চতায়। শনিবার সিলেটে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে আট উইকেটে ৩৩৮ রানের পাহাড় গড়ে বাংলাদেশ জিতেছে ১৮৩ রানে। ওয়ানডেতে নিজেদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ ও রানের হিসাবে সবচেয়ে বড় জয়ের দুটি রেকর্ডই নতুন করে লিখল টাইগাররা।
বাংলাদেশের আগের সর্বোচ্চ স্কোর ছিল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। ২০১৯ বিশ্বকাপে নটিংহ্যামে আট উইকেটে ৩৩৩ রান ছিল আগের সর্বোচ্চ। সব মিলিয়ে এটি বাংলাদেশের ২৪তম তিনশর বেশি রানের স্কোর।
সাত রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করা সাকিব বসেছেন মুশফিকের পাশে। ওয়ানডে ক্রিকেটে নব্বইয়ের ঘরে চারবার করে থেমেছেন এই দুই ব্যাটার। এর মধ্যে সাকিব দুবার নব্বইয়ের ঘরে নটআউট ছিলেন। আউট হলেন দুবার। মুশফিক তিনবার আউট হয়েছেন নড়বড়ে নব্বইয়ে, অপরাজিত ছিলেন এক ইনিংসে। তিন সংস্করণ মিলে আবার দুজনই আটবার করে নড়বড়ে নব্বইয়ে থামলেন। সব মিলিয়ে নব্বইয়ের ঘরে সবচেয়ে বেশি ২৮ ইনিংস শচীন টেন্ডুলকারের।
একই দিনে আরেকটি মাইলফলক ছুঁয়েছেন সাকিব। ওয়ানডেতে ৩০০ উইকেট এবং সাত হাজার রানের মাইফলক ছোঁয়া বিশ্বের দ্রুততম অলরাউন্ডার এখন তিনি। এজন্য সাকিবের লেগেছে মাত্র ২২৮ ম্যাচ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আগের সিরিজে সাকিব ৩০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন। সাত হাজার রানের মাইলফলক ছুঁতে সাকিবের প্রয়োজন ছিল মাত্র ২৪ রান। এদিন তিনি থামেন ৮৯ বলে ৯৩ রানে। সাত হাজার রান ও ৩০০ উইকেটের মাইলফলকে এর আগে পা রাখেন শ্রীলংকার সনথ জয়সুরিয়া ও পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদি।
এদিকে ওয়ানডে অভিষেকে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়লেন তৌহিদ হৃদয়। ২০১১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচেই ৬৩ রান করেছিলেন নাসির হোসেন। নাসির ও হৃদয় ছাড়া বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডে অভিষেকে ফিফটি করেছেন শুধু ফরহাদ রেজা। ২০০৬ সালে তিনি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করেন ৫০ রান। হৃদয় সেঞ্চুরির দৌড়ে ভালোভাবে নিজেকে এগিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু হিউমের এক ওভারেই সব গড়বড় হয়ে যায়। ৮১ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট পতনের পর পাঁচ নম্বরে নেমে আট চার ও দুই ছয়ে ৮৫ বলে ৯২ রান করেন তরুণ এই ব্যাটার। ওয়ানডে অভিষেকে নব্বইয়ের ঘরে আউট হওয়া ষষ্ঠ ব্যাটার হৃদয়। ওয়ানডে ক্রিকেটে একই ইনিংসে দুই ব্যাটারের নব্বইয়ের ঘরে আউট হওয়ার এটি ১১তম নজির।
ব্যাটিংয়ে সাকিব-হৃদয়ের পর বোলিংয়ে জ্বলে ওঠেন ইবাদত, নাসুম ও তাসকিন। ৩০.৫ ওভারে ১৫৫ রানে গুটিয়ে যায় আয়ারল্যান্ড।