বাংলাদেশের জাতীয় কবি কে?
মো. আসাদ উদ্দিন
প্রকাশ: ১২ জুন ২০২২, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
এমন প্রশ্ন হাস্যকর ও অবান্তর মনে হতে পারে। ছোট্ট শিশুটিও জানে, এ দেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। কিন্তু কোনো একদিন প্রশ্নটি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে পারে। আজকের শিশু জানলেও যুগ যুগ পরের কোনো এক প্রজন্মের শিশুটি জানার সুযাগ না-ও পেতে পারে। দূর ভবিষ্যতে কেউ চাইলে এটি চ্যালেঞ্জও করতে পারবে। কর্তৃপক্ষ মনে করলে অন্য কাউকে জাতীয় কবি হিসাবে ঘোষণাও দিতে পারবে। কথাটা বেখাপ্পা শোনালেও এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। সত্যিই কি কেউ বলতে পারবে কীসের ভিত্তিতে তাকে জাতীয় দাবি করা হয়? কোনো দলিল কেউ দেখাতে পারবে?
কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে বিশ্বব্যাপী গবেষণা হয়েছে। তাকে নিয়ে এদেশেও উল্লেখ করার মতো গবেষণা হয়েছে, হচ্ছে। তার জীবন ও কর্ম নিয়ে অসংখ্য গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে; কিন্তু কোথাও এ ব্যাপারে প্রামাণিক তথ্য পাওয়া যায় না। যতটুকু পাওয়া যায়, তার সারমর্ম হলো, ১৯২৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর কলকাতার আলবার্ট হলে একটি সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। এর উদ্যোক্তা ছিলেন ‘সওগাত’ সম্পাদক মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, আবুল কালাম শামসুদ্দীন, আবুল মনসুর আহমদ, এস ওয়াজেদ আলী, হাবীবুল্লাহ বাহার প্রমুখ। এর আগে তাদের নিয়ে একটি ‘অভ্যর্থনা সমিতি’ গঠন করা হয়। সমিতির কার্যালয় স্থাপিত হয় ‘সওগাত’ অফিসে। এ সমিতির উদ্যোগেই আলবার্ট হলে নজরুলকে সর্বভারতীয় বাঙালিদের পক্ষ থেকে জাতীয় সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেছিলেন স্যার আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়। উপস্থিত ছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, ব্যারিস্টার ওয়াজেদ আলী এবং শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকসহ বিশিষ্টজন। বলা হয়ে থাকে, সেদিন ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কবিকে ‘জাতীয় কবি’ হিসাবে ঘোষণা দেওয়া হয়। সেই থেকে নজরুল হয়ে গেলেন জাতীয় কবি। মনে রাখা দরকার, সময়টি ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের জন্মের এবং কবির এ দেশে আগমনের চার দশকেরও বেশি আগের। এর বাইরে স্বাধীনতার আগে বা পরে আর কোনো ঘোষণার কথা সুনির্দিষ্টভাবে কেউ বলতে পারেন না। অর্থাৎ কলকাতার আলবার্ট হলের সেই ঘোষণাই প্রথম ও শেষ কথা।
মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়া ওই ঘোষণা ছাড়া রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির আর কোনো তথ্য নেই। প্রকৃত সত্য হলো, এ মর্মে অদ্যাবধি সরকারি প্রজ্ঞাপন, গেজেট বা কোনো দলিল পাওয়া যায়নি। কোনো কোনো নজরুল গবেষক সরেজমিন এ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করেছেন। তাদের লেখা গ্রন্থ ও প্রবন্ধে তারা স্বীকার করেছেন, কাজী নজরুল ইসলামের ‘জাতীয় কবি’ পদবি ধারণের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি নেই। তারা অনেক খোঁজাখুঁজি ও গবেষণা করে দেখেছেন, এ মর্মে সত্যিই লিখিত কোনো তথ্য বা দলিল নেই। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, বাংলা একাডেমি, জাতীয় আর্কাইভ ও নজরুল ইনস্টিটিউটের কোথাও তারা কোনো প্রমাণক পাননি। বস্তুত সরকারিভাবে ‘জাতীয় কবি’ হিসাবে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণাই দেওয়া হয়নি। কোনো প্রজ্ঞাপন বা গেজেট প্রকাশ করা হয়নি। মুখে মুখেই ‘জাতীয় কবি’ হয়ে আছেন প্রেম ও দ্রোহের কবি নজরুল।
প্রয়াত লেখক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ এক সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেছেন, কলকাতার আলবার্ট হলের ওই ঘোষণা ছাড়া পরবর্তীকালে কাগজে-কলমে নজরুলকে জাতীয় কবি হিসাবে ঘোষণা করা হয়নি। বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক ড. মোহাম্মদ আমীন তার প্রবন্ধে লিখেছেন, তিনি যখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ছিলেন, তখন ১৯৭২ সালের মে (কবির বাংলাদেশে আসার সময়) থেকে নিয়ে ১৯৭৬ সালের ৩০ আগস্ট পর্যন্ত সব গেজেট তিনি খুঁজে দেখেছেন। কোথাও তিনি নজরুলকে জাতীয় কবি ঘোষণার গেজেট নোটিফিকেশন, প্রজ্ঞাপন বা অনুরূপ কোনো সরকারি আদেশ পাননি। নজরুল বিশেষজ্ঞ জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম লিখিত ‘নজরুল-জীবনী’ গ্রন্থটি কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী গ্রন্থগুলোর মধ্যে অন্যতম। গ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এরপর পরিমার্জিত আকারে নজরুল ইনস্টিটিউট থেকে ২০১৩ এবং ২০১৭ সালে। ড. রফিকুল ইসলাম তার গ্রন্থে কালক্রমিকভাবে কবির জীবনী তুলে ধরেছেন। সেখানে ‘জাতীয় সংবর্ধনা’ এবং ‘জীবনের শেষ দিনগুলি’ শিরোনামে দুটি অধ্যায়ে নজরুলের তাবৎ সম্মাননা ও সংবর্ধনার তথ্য তুলে ধরেছেন। কিন্তু ‘জাতীয় কবি’ হিসাবে ঘোষণা করার কোনো তথ্য তিনি গোটা গ্রন্থের কোথাও উল্লেখ করেননি। তিনিও নিশ্চয়ই এমন ঘোষণার কোনো দলিল বা প্রমাণক পাননি।
নজরুল ইনস্টিটিউট এবং ভারতীয় সরকার একাধিক স্মৃতি অ্যালবাম প্রকাশ করেছে। এসব অ্যালবামে নজরুল সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য ও স্থিরচিত্র পাওয়া যায়। এগুলো কবি জীবনে প্রাপ্ত পদক বা সম্মাননার প্রামাণ্য দলিল ও তথ্য। ১৯৪৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কবিকে ‘জগত্তারিনী’ স্বর্ণপদক প্রদান করে। জানা যায়, আর্থিক সংকটের কারণে নজরুল স্বর্ণপদকটি বন্ধক রেখেছিলেন। পরবর্তী সময়ে টাকা ফেরত দিয়ে সেটি উদ্ধার করেন কল্যাণী কাজী। ১৯৬০ সালে ভারত সরকার কবিকে ‘পদ্মভূষণ’ উপাধি দিয়ে স্বর্ণপদক প্রদান করে। স্মৃতি অ্যালবাম এবং লিখিত প্রমাণপত্রে এসব পদকের ছবিসহ তথ্য রয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে ১৯৭২ সালের ২৪ মে কবিকে ভারত থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। কবির সঙ্গে তার দুই ছেলে সব্যসাচী ও অনিরুদ্ধ এবং তাদের স্ত্রী-সন্তানদেরও নিয়ে আসা হয়। তারা তেজগাঁও বিমানবন্দরে অবতরণ করলে আপামর জনতা তাকে সেখানে বিপুল সংবর্ধনা প্রদান করে। সেদিনই রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরী ও প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে কবিকে দেখতে যান। ধানমন্ডিতে কবির বসবাসের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে একটি বাড়ি দেওয়া হয়। বাড়িটির নাম দেওয়া হয় ‘কবি ভবন’। সেখানে কবিকে রাখা হয় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়। কবি ভবনে প্রতিদিন জাতীয় পতাকা উড্ডীন থাকত। ১৯৭৬ সালের জানুয়ারি মাসে নজরুলকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করে সরকারি আদেশ জারি করা হয়। একই বছর ২১ ফেব্রুয়ারি কবিকে ‘একুশে পদক’ দেওয়া হয়। নজরুলকে দেওয়া ‘জগত্তারিণী’ স্বর্ণপদক, ‘পদ্মভূষণ’ উপাধি, ‘ডি-লিট’ উপাধি, ‘একুশে পদক’ প্রভৃতির প্রামাণ্য দলিল পাওয়া যায়। ভারত থেকে কবিকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা, তার জন্য ‘কবি ভবন’ বরাদ্দ দেওয়া, তার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু ও রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎ করতে যাওয়া প্রভৃতির প্রমাণ পাওয়া যায়। কিন্তু জাতীয় কবি ঘোষণাসংক্রান্ত কোনো দলিল কোথাও পাওয়া যায়নি। এমনকি কোনো ছবি বা পত্রিকার সংবাদও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে সরকারি অনেক দলিলে তাকে জাতীয় কবি হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন আয়োজনে তাকে জাতীয় কবি হিসাবে লেখা ও বলা হয়। তার নামের সঙ্গে জাতীয় কবি ব্যবহার করে সংসদে একটি আইনও পাশ হয়েছে। আইনটি হলো, ‘জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৬’। অন্যদিকে ‘কবি নজরুল ইনস্টিটিউট আইন, ২০১৮’-এর ২ ধারায় তাকে জাতীয় কবি হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। ধারা ২-এর ৩ উপধারায় বলা হয়েছে-‘কবি’ অর্থ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। একইভাবে বিদ্যালয়ের পাঠ্যবইয়ে, অন্যান্য বইপুস্তকে, গবেষণাকর্মে, পত্রপত্রিকায়, সভা-সমাবেশে সর্বত্র কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবি বলেই উল্লেখ করা হয়।
কিন্তু এসবই পরোক্ষ স্বীকৃতি। এগুলো দ্বারা বোঝা যায়, পূর্ব থেকে তিনি জাতীয় কবি। তাই তার নামের সঙ্গে কথাটি উল্লেখ করা হয় মাত্র। প্রশ্ন হলো, এর লিখিত ভিত্তি কী? মৌখিক স্বীকৃতি গুরুত্বহীন নয় সত্য; কিন্তু আইনগতভাবে এর ভিত্তি অনেক দুর্বল। একটি লিখিত দলিলের বিপরীতে মৌখিক সাক্ষ্যের ন্যূনতম মূল্য নেই। ইতিহাস কখনো অলিখিত থাকে না। জ্ঞানত অলিখিত রাখা হয় না। এটি মুখস্থ রাখার বিষয় নয়। কোনো তথ্য বা ইতিহাস মুখে মুখে বেশিদিন ধরে রাখা যায় না। কালের বিবর্তনে এবং মানুষের প্রস্থানে একদিন তা বিলীন হয়ে যায়। তাই ইতিহাস-ঐতিহ্যের তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহে রাখার জন্য রাষ্ট্রকে বিপুল অর্থ খরচ করতে হয়। এগুলো সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা রাষ্ট্রের অন্যতম দায়িত্ব। লিখিত প্রমাণপত্রের বিকল্প নেই বলেই রাষ্ট্রকে এ কাজ করতে হয়। আমাদের দেশেও ইতিহাস ও তথ্য সংরক্ষণের জন্য অর্থের বরাদ্দ রয়েছে। কাজী নজরুল ইসলামও আমাদের ইতিহাসের অংশ। সাহিত্য ও সংস্কৃতির অন্যতম অনুষঙ্গ। সুতরাং তার বেলায় অন্যথা হবে কেন? রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি কোনো ক্ষুদ্র বিষয় নয়। লিখিত স্বীকৃতি দিতে বা গেজেট প্রকাশ করতে আইনগত কোনো বাধাও নেই। অন্যদিকে এটি সরকারের জন্য আহামরি কোনো বিষয়ও নয়। একেবারে সহজসরলভাবেই কাজটি করা সম্ভব। তাহলে এত গড়িমসির কোনো কারণ আছে কি? এতগুলো বছর অতিক্রান্ত হলো, অথচ কিছু করা হলো না! যুক্তি দিয়ে এ ব্যর্থতাকে গ্রহণযোগ্য করা কঠিন। যুক্তি নয়, বরং বাস্তবতার নিরিখে বিষয়টির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতে হবে।
প্রসঙ্গত, ১২ মে যুগান্তরে প্রকাশিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর একটি নিবন্ধের কথা স্মর্তব্য। নিবন্ধটির শিরোনাম ‘বাঙালি জাতিরাষ্ট্রের ঐক্যের প্রতীক’। তিনি ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের পূর্বাপর ঐতিহ্য নিয়ে নিবন্ধটি লিখেছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নেতা মাদারীপুরের স্কুলশিক্ষক পূর্ণচন্দ্র দাসের কারামুক্তি উপলক্ষ্যে কালীপদ রায় চৌধুরীর অনুরোধে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ‘ভাঙার গান’ কাব্যগ্রন্থের ‘পূর্ণ অভিনন্দন’ কবিতায় প্রথম ‘জয় বাংলা’ শব্দটি ব্যবহার করেন। এছাড়া নজরুল ‘নবযুগ’ পত্রিকায় প্রকাশিত তার ‘বাঙালির বাংলা’ নামক প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘বাঙলা বাঙালির হোক। বাঙালির জয় হোক। বাংলার জয় হোক।’ ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী উল্লেখ করেছেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য তনয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা থেকেই বঙ্গবন্ধু এই ‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি নিয়েছিলেন।
নজরুলের সেই ‘জয় বাংলা’ আজ জাতীয় স্লোগান হিসাবে স্বীকৃত। কিন্তু সেটি কেবল পরোক্ষ বা মৌখিকভাবে নয়। সরকারি গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে স্লোগানটিকে জাতীয় স্লোগানের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এমনই। যদিও এটি হয়েছে উচ্চাদালতের রায়ের ভিত্তিতে। একজন আইনজীবীর দায়েরকৃত রিটের শুনানি শেষে ২০২০ সালের ১০ মার্চ হাইকোর্ট বিভাগ ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসাবে উল্লেখ করে গেজেট প্রকাশের নির্দেশনা প্রদান করেন। সে পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এ বছর ২ মার্চ গেজেট প্রকাশ করে ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করেছে।
এখন কি তাহলে কাজী নজরুল ইসলামকে ‘জাতীয় কবি’ হিসাবে ঘোষণার গেজেট পেতেও উচ্চাদালতের আদেশের অপেক্ষা করতে হবে? এতদিন যেটি করা হয়নি, সেটি এখন করতে নিশ্চয়ই বাধা নেই। ভুল বয়ে বেড়ানো কোনো বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে না। কাজটি না হওয়ার চেয়ে বিলম্বে হলেও হওয়াটা জরুরি।
উদ্দেশ্যমূলকভাবে এত বছর গেজেট প্রকাশ করা হয়নি, ব্যাপারটি এমন হওয়ার কথা নয়। এখানে কোনো দুরভিসন্ধি বা নেতিবাচক মানসিকতার অস্তিত্ব খুঁজতে চাওয়া অনর্থক। বোধকরি, সংশ্লিষ্টদের কাছে এর প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়নি; অথবা ওভাবে তাদের নজরেও আসেনি ব্যাপারটি। অনেকটা অজান্তেই সময় চলে গেছে; কিন্তু সাহিত্যাঙ্গনে এখন এটি আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বটে। কবি পরিবার, নজরুল গবেষক, সাহিত্য-সংস্কৃতিসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এবং সচেতন নাগরিক সবারই প্রাণের দাবি এখন জাতীয় কবির গেজেট। অতএব, আর বিলম্ব কাম্য নয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই বিষয়টি অনতিবিলম্বে আমলে নেবেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতীয় কবির গেজেট প্রকাশ করে জাতিকে দায়মুক্ত করবেন।
মো. আসাদ উদ্দিন : আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট
asadiuk@yahoo.com
