পৃথিবীজুড়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয় : দায়ী কে?
ড. মো. কামরুজ্জামান
প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২২, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সৃষ্টির শুরু থেকেই প্রাকৃতিক বিপর্যয় মানুষের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল। আর এ কারণে প্রকৃতির কাছে মানুষ ছিল বড়ই অসহায়। আদিমকাল থেকেই প্রকৃতির এ প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে তারা লড়াই করে টিকে থেকেছে। মানুষ তার বুদ্ধি ও কৌশল দিয়ে প্রকৃতির পরিবেশকে বাসযোগ্য করে তুলেছে। সময়ের পরিক্রমায় মানব সভ্যতায় পরিবর্তন হয়েছে। মানুষ প্রকৃতিকে জেনেছে, চিনেছে এবং বুঝতে সক্ষম হয়েছে। এ চেনা-জানা ও যথাযথ ব্যবহারের মধ্য দিয়েই সমাজ-সভ্যতা বিকশিত হয়েছে। মানুষ নিজেদের প্রয়োজনে প্রকৃতিকে ব্যবহার করতে শিখেছে। প্রকৃতিকে মানুষ শুধু ব্যবহার করতেই শেখেনি; বরং সেটাকে জয় করার কৌশলও রপ্ত করেছে। মানবসৃষ্ট এ কৌশল প্রকৃতিতে নানা পরিবর্তন সাধন করেছে। প্রকৃতিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নানা ধরনের প্রভাব বিস্তার করেছে। বিজ্ঞানের শক্তিবলে প্রকৃতি মানুষের হাতের মুঠোয় এসেছে। বিজ্ঞান জগতে এ শক্তির আগমন ঘটেছে পঞ্চদশ শতাব্দীতে। এ শতাব্দীতে পৃথিবীতে বিভিন্ন স্বাধীন দেশের অভ্যুদয় ঘটেছে। এ সময় ইউরোপজুড়ে শিল্পবিপ্লবের উত্থান ঘটেছে। শিল্পের জন্য দিকে দিকে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ও নানা পণ্যের চাহিদা বেড়ে গেছে। কাঁচামাল ও পণ্যের জোগান দিতে সরবরাহকারীরা নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর ফলে গরিব দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ লুণ্ঠিত হয়েছে। সীমাহীন মুনাফা অর্জনে শিল্পপতিদের লালসার চরম বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। নিজ দেশের প্রাকৃতিক সম্পদকে তারা রিজার্ভ ও পুঞ্জীভূত করেছে। ভিনদেশের সম্পদ কুক্ষিগত করতে কুনজর দিয়েছে। উৎপাদিত পণ্য বিক্রির জন্য তারা তাদের ইচ্ছাধীন বাজার সৃষ্টি করেছে। প্রাকৃতিক সম্পদসমৃদ্ধ অপেক্ষাকৃত দুর্বল দেশকে তারা দখল করেছে।
তবে মানুষ যতই শক্তিশালী হোক না কেন, প্রকৃতির কাছে তারা আজও অসহায়। প্রকৃতিকে জয় করলেও প্রকৃতির ওপরই তারা নির্ভরশীল। উদাহরণস্বরূপ বিশ্বময় জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি উল্লেখ করা যেতে পারে। বাংলাদেশে বিগত কয়েক বছর ধরে প্রচণ্ড গরম অনুভূত হচ্ছে। শহর-বন্দর ও গ্রামের ১৭ কোটি মানুষ এ গরমে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বৃষ্টিহীন রৌদ্রের খরতাপে পুড়ে চৌচির হয়ে যাচ্ছে বাংলার মাটি। কৃষক, শ্রমিক আর দিনমজুররা হয়ে পড়েছে দিশেহারা। প্রচণ্ড গরমে গ্রামের মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে আসছে গাছতলায়। বর্তমানে মধ্য আষাঢ়েও গরম এতটুকু হ্রাস পায়নি। গ্রাম, শহর আর গঞ্জের মানুষের মুখে একটিই বয়ান ‘গরম, গরম, অসহ্য গরম’। মানুষ প্রকৃতিকে জয় করলেও প্রকৃতির গরমের কাছেই তারা ধরাশয়ী হয়ে পড়েছে। কিন্তু এসব সাধারণ মানুষ সীমাহীন গরমের উৎসমূলের সন্ধান জানে না। একসময় বাংলাদেশের সর্বত্র জালের মতো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল অসংখ্য নদ-নদী ও খাল-বিল। আর এ কারণেই বাংলাদেশকে নদীমাতৃক দেশ বলা হতো। বিআইডব্লিউটিএ’র অধীনে একসময় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নদী ও শাখা নদীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৪ হাজার। আর বিআইডব্লিউটিএ’র আওতার বাইরে নদী ও উপনদীর সংখ্যা ছিল সব মিলে ২২ হাজার। অর্থাৎ বাংলাদেশের নদী, শাখা নদী ও উপনদীর সংখ্যা সব মিলিয়ে ছিল ২৬ হাজার। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২৬ হাজার নদীর মধ্য থেকে এখন টিকে আছে মাত্র ৮০টি নদী। পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, শীতলক্ষ্যা, সুরমা, কর্ণফুলী ইত্যাদি দেশের প্রধান নদী। কিন্তু ভারতের ফারাক্কা বাঁধ, তিস্তা বাঁধ এবং আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প নদীগুলোর স্বাভাবিক গতিধারা ব্যাহত করেছে। এসব কারণে নদীতে নাব্য সংকট ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। বড় বড় নদীগুলো আজ পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। নদীর বুক চিরে জেগে উঠেছে ধু ধু বালুচর। আর সে বালুচরে শোভা পাচ্ছে বাড়িঘর। আর কৃষক সেখানে শুরু করেছেন কৃষি আবাদ। অন্যদিকে নদীখেকোরা রাষ্ট্রীয় শক্তি ব্যবহার করে নদী ও জলাশয়গুলো ভরাট করেছে। তারা সেখানে নির্মাণ করেছে বহুতল ভবন। স্লুইসগেট, ব্রিজ এবং বাঁধ নির্মাণ করে তারা হাজার হাজার খাল-বিলের অস্তিত্ব বিলীন করেছে। আর সেখানে নির্মিত হয়েছে ঘরবাড়ি, অফিস-আদালত ও কলকারখানা। পরিবেশ গবেষকদের মতে, প্রকৃতির সঙ্গে এ অন্যায্য আচরণই এ রকম দাবদাহ সৃষ্টির কারণ। এসব কারণেই জলবায়ুতে আজ মারাত্মক পরিবর্তন দেখা দিয়েছে।
বিগত ৫০ বছর ধরেই বাংলাদেশের নৌপথ ছিল অবহেলিত। দেশনায়ক রাজনীতিবিদ, আমলা ও কামলা-কারও মাঝেই এ পথ নিয়ে কোনো বিস্ময় পরিলক্ষিত হয়নি। অথচ পৃথিবীর মধ্যে অতি অল্পসংখ্যক রাষ্ট্রের মধ্যে এটি একটি মাত্র রাষ্ট্র, যার পুরোটাকেই নৌপথে সংযুক্ত করার ব্যাপক সুযোগ ছিল। কিন্তু বিগত ৫০ বছরের ধারাবাহিক উন্নয়নের চাপে উক্ত পথ এক-তৃতীয়াংশে নেমে এসেছে! বিপরীতে দেশে সড়কপথ বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েকশ গুণ। পানিতে ঘেরা দেশে সড়ক তৈরি করতে নির্মাণ করতে হয়েছে হাজার হাজার সেতু। এসব সেতু উন্নয়ন প্রকল্পের আওতাধীন বলেই বিবেচিত। আর এসব মেগা প্রকল্পে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে এডিবি, বিশ্বব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক নানা সংস্থা। এসব সংস্থার মূল আগ্রহ সেতুকে কেন্দ্র করেই। কারণ, সেতুর পেছনে আছে গাড়ির বিজনেস। দেশের উন্নয়নের চিত্র এমনই যে, যেখানে অসংখ্য সেতু আছে; কিন্তু তার দুই পাশে কোনো রাস্তা নেই। আবার অনেক সেতু আছে, যার নিচে পানি নেই! অথচ এটি সর্বজনবিদিত, বাংলাদেশের জনঘনত্ব অনেক বেশি এবং জনসংখ্যার তুলনায় জমির পরিমাণ অনেক কম। চীনে প্রতি বর্গকিমি. জায়গায় মানুষের বসবাস ১৪৮ জন, ভারতে ৩৮২ জন আর বাংলাদেশে সেই সংখ্যা ১,২৪০! (bhugolhelp.com, 27-06-2022)। এসব বিবেচনায় রেখেই উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া জরুরি ছিল; কিন্তু এ জাতীয় পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়নি বিধায় নৌপথও গুরুত্ব পায়নি। সার্বিক বিবেচনায় বাংলাদেশে সর্বপ্রথমই নৌপথ গুরুত্ব পাওয়ার কথা ছিল; উচিত ছিল নৌপরিবহণ উন্নয়ন, সংস্কার ও আধুনিকায়ন। এরপর গুরুত্ব পাওয়ার কথা ছিল রেলপথ। কিন্তু স্বাধীনতার দীর্ঘ পরিক্রমায় রেলপথের উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নয়ন ঘটেনি। কোথাও এ পথ বেড়েছে, আবার কোথাও কমেছে। সব মিলিয়ে প্রায় সমান সমান। অন্যদিকে দেশের সড়ক, মহাসড়ক ও হাজার হাজার সেতু হাজার হাজার নদীকে গিলে খেয়ে ফেলেছে। আগামীতেও এ প্রক্রিয়া চলমান থাকবে। কারণ, এখানে রয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর লাভ; জড়িত আছে ঋণদাতাদের লাভ; কনসালটেন্টদের লাভ; ঠিকাদারদের লাভ ও সরকারের লাভ। চারদিকে শুধু লাভ আর লাভ। আর বাস্তবে এটি এমনি এক লাভ, যা জনগণকে দেখিয়ে বাহবা নেওয়া যায়।
প্রচণ্ড দাবদাহের আরেকটি কারণ হলো, দেশের বনাঞ্চল ধ্বংস করা। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় একটি দেশের মোট আয়তনের ২৫ শতাংশ এলাকা বনাঞ্চল থাকা অপরিহার্য। গ্রাম-বাংলার সর্বত্রই একসময় বন-জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল। প্রাচীন বাংলার মোট ভূখণ্ডের ১৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ বনভূমি ছিল। কিন্তু হিংস্র মানুষরূপী বনখেকোরা বন-জঙ্গলগুলোকে খেয়ে ফেলেছে। পরিবেশ আন্দোলন কর্মীদের মতে, দেশে বর্তমান বনভূমির পরিমাণ মাত্র ৭ বা ৮ শতাংশ। অথচ এ বন-জঙ্গলই ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু নদীখেকোর মতো বনখেকোরাও বাংলার বনাঞ্চলকে নিধন করে সেখানে অট্টালিকা নির্মাণ করেছে। এ কারণে চিরসবুজের বাংলা আজ মরুভূমিতে রূপান্তর হতে চলেছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং ঘন বনাঞ্চল হলো সুন্দরবন। পরিবেশবিদরা মনে করেন, সুন্দরবন বেঁচে আছে বলেই বাংলাদেশ বেঁচে আছে। সুন্দরবন না থাকলে সিডরের রাতেই বাংলাদেশ সাগরের তলদেশে হারিয়ে যেত। শত শত বছর ধরে এ সুন্দরবনই বাংলাদেশকে বাঁচিয়ে রেখেছে। কিন্তু সে সুন্দরবনও আজ অস্তিত্ব সংকটে ভুগতে বসেছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশসহ পৃথিবীতে নানা ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় পরিলক্ষিত হচ্ছে। নিত্য ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড় আর জলোচ্ছ্বাসে বিশ্ববাসী নিঃস্ব হচ্ছে। খরা, অনাবৃষ্টি ও অতিবৃষ্টির কারণে পৃথিবী বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। শীতে এশিয়া যখন জবুথবু, তখন দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে আমেরিকা ও ইউরোপে। আর পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকায় ক্রমাগত গলছে বরফ। বাংলাদেশে শুরু হয়েছে ফণী, আম্পান, আইলা ও নার্গিসসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। নদীতে হারিয়ে যাচ্ছে বাস ও চাষযোগ্য জমি। আর ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে মানুষ হচ্ছে নিঃস্ব ও ভূমিহীন। বিশ্বব্যাপী উষ্ণতা বেড়েই চলেছে। ভূপৃষ্ঠের তলদেশে পানির স্তর ক্রমাগত নিচে নেমে যাচ্ছে। গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে জলবায়ুর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। পরিবেশগত সব ব্যবস্থা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী ১৬ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে পরিবেশ দূষণের কারণে। আর বাংলাদেশে এ সংখ্যা ২৮ শতাংশ। পরিবেশ দূষণের কারণে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী দেখা দিচ্ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। দরিদ্র নারী ও শিশুরা ক্ষতির শিকার হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। শিশুদের বুদ্ধিমত্তা বিকাশ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। নারীদের গর্ভের শিশু মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। দূষিত বায়ুর প্রভাবে চোখ, নাক ও গলার সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে। ফুসফুসের নানা সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। ত্রুটিপূর্ণ জন্ম ও ক্যানসার মারাত্মক আকারে বেড়ে গিয়েছে। জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। মরুভূমির আয়তন দীর্ঘ হচ্ছে। জলাভূমি হারিয়ে যাচ্ছে। প্রতি বছর এক কোটি হেক্টর বন বিলীন হচ্ছে। সমুদ্রের মাছগুলো নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। প্রতি বছর বায়ু ও পানি দূষণে ৯০ লাখ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। (আন্তোনিও গুতেরেস, জাতিসংঘ মহাসচিব, http://www.un.org/ ৪ ডিসেম্বর, ২০২০)
প্রকৃতির রোষানলে পড়ে পৃথিবী আজ ক্লান্ত ও বিপর্যস্ত। বিপর্যস্ত এ পৃথিবীকে বাঁচাতে তাই সব দেশই সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছে। দেশ ও জাতি রক্ষায় তারা তাদের উন্নত জ্ঞান, শ্রেষ্ঠ প্রযুক্তি ও গবেষণা ব্যবহার করে চলেছে। কিন্তু কিছুতেই কিছুই করতে পারছে না। মূলত মানুষের অপ্রয়োজনীয় উচ্চাকাঙ্ক্ষা আর আবিষ্কার থেকে জন্ম হচ্ছে নানা বিপর্যয়। বিজ্ঞানীদের মতে, মানুষের প্রযুক্তির প্রতি অতিমাত্রায় ঝোঁকপ্রবণতা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের বড় কারণ হতে পারে। মানুষের আবিষ্কৃত রোবটই একদিন মানবতাকে ধ্বংস করে দেবে বলে মন্তব্য করেছিলেন বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং। তিনি আরও বলেছিলেন, মানুষের গবেষণার মাধ্যমে সৃষ্টি হবে কিছু ভাইরাস বা জীবাণু, যা জীবজগৎকে চরম বিপর্যয়ে নিয়ে যাবে। পৃথিবীতে করোনাভাইরাসের চেয়েও বহুগুণ শক্তিশালী ভাইরাস আবিষ্কৃত হবে, যা সুন্দর পৃথিবীকে নিমিষেই ধ্বংস করে দেবে। পৃথিবীতে সৃষ্টি হতে পারে মহাজাগতিক বিস্ফোরণ ও সৌরঝড়। এতে পৃথিবীতে সৃষ্টি হবে বর্তমানের চেয়েও প্রচণ্ড দাবদাহ, যা জ্বালিয়ে ভস্ম করে দিতে পারে সমগ্র সৃষ্টিজগৎকে। পৃথিবী ধ্বংসের সবচেয়ে বড় উপকরণ হলো মানবসৃষ্ট পারমাণবিক অস্ত্র। এটার অপপ্রয়োগের কারণে তৈরি হতে পারে গ্লোবাল ওয়ার্মিং। বিস্তীর্ণ এলাকা হয়ে যেতে পারে মরুভূমি। বেড়ে যেতে পারে মারাত্মক জীবাণুর প্রকোপ। আর ছোট এ নীল গ্রহটি হয়ে যেতে পারে বসবাসের একেবারেই অযোগ্য।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এ বিপর্যয়ের জন্য মানুষের কর্মকাণ্ডকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেছেন, মানুষ প্রকৃতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। মানুষ প্রাণিকুলের আবাসন ধ্বংস করছে। বন্যপ্রাণীর বসবাসের জায়গার ওপর হস্তক্ষেপ করছে। ফলে বিক্ষিপ্ত এসব প্রাণী থেকেই উৎপত্তি হচ্ছে ভাইরাস। প্রকৃতিবিরুদ্ধ কাজ চলমান থাকলে করোনার চেয়েও শক্তিশালী ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটতে পারে, যা পৃথিবী থেকে মানবজাতিকে বিলুপ্ত করে দিতে পারে মর্মে তিনি সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছেন।
ড. মো. কামরুজ্জামান : অধ্যাপক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
dr.knzaman@gmail.com
