Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

নীতি দুর্নীতি অর্থনীতি

ঈদুল আজহা এনে দেয় বহুমুখী ব্যবসার সুযোগ

Icon

ড. আর এম দেবনাথ

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২২, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ঈদুল আজহা এনে দেয় বহুমুখী ব্যবসার সুযোগ

রাত পোহালেই পবিত্র ঈদ-ঈদুল আজহা, কুরবানির ঈদ। মাস হিসাবে এটা আষাঢ় মাস, খ্রিস্টীয় জুলাই মাস। সবে নতুন অর্থবছর শুরু হয়েছে। রপ্তানির ক্ষেত্রে আমরা ৫০ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছি। তবু বেশকিছু অনিশ্চয়তার মধ্যে শুরু হয়েছে নতুন অর্থবছর। চারদিকে বৈরী পরিবেশ। প্রকৃতি আমাদের ছাড়ছেই না। দুই বছর ধরে করোনার আক্রমণ চলছে। মাঝখানে কিছুটা কমেছিল, কিন্তু আবার এর প্রকোপ বেড়েছে। মানুষের মৃত্যু ঘটছে।

এদিকে বেশ কিছুদিন ধরে চলছে বন্যার ধংসযজ্ঞ। বৃহত্তর সিলেট, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চল বন্যায় উপদ্রুত। হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন, খাদ্যহীন। ঘরবাড়ি তাদের জলে তলিয়ে গেছে। গরু-ছাগলের খাদ্য নেই, নেই আশ্রয়স্থল। এদিকে বাজারে চলছে মূল্যস্ফীতি। বন্যা ও যুদ্ধের অজুহাতে একশ্রেণির ব্যবসায়ী বাজার গরম করে রেখেছে। জিনিসপত্রের দাম বাড়ছেই। স্বস্তির কোনো লক্ষণ নেই। স্বস্তির অভাবের মধ্যেই এবার পালিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। চারদিকে প্রস্তুতি-সরকারি ও বেসরকারি। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতায় ঢাকায় এবং দেশের অন্যত্র পশুর হাটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেবল ঢাকা মহানগরীতেই বেশ কয়েকটি হাটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে একটি স্থায়ী বাজার বাদে আরও ব্যবস্থা করা হয়েছে অস্থায়ী ১০টি হাটের। উত্তর সিটি করপোরেশনে গাবতলীর বিরাট হাট বাদেও বসছে ৯টি হাট। এছাড়া সারা দেশে ব্যবস্থা হয়েছে হাজার হাজার ছোট-মাঝারি-বড় হাটের।

কুরবানির ঈদের প্রধান বৈশিষ্ট্য এই পশুর হাট। এর রয়েছে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিক দিক এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক দিক। বন্যা, মূল্যস্ফীতি, করোনার নতুন সংক্রমণ সত্ত্বেও ঈদের নামাজের প্রস্তুতি চলছে সর্বত্র। যথারীতি ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদ এবং হাইকোর্ট প্রাঙ্গণের জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে ঈদের প্রধান জামাত। আষাঢ়ি বৃষ্টিকবলিত না হলে সকালবেলা পবিত্র ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে।

লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি এতে অংশগ্রহণ করবেন। তারপর চলবে কুশল বিনিময়। শিশু-যুবক-বৃদ্ধ সবাই বিনিময় করবে কুশল। শিশুদের আনন্দই হচ্ছে এখানে বড় একটা উপভোগ্য বিষয়। অবশ্য বন্যা উপদ্রুত এলাকার মানুষ ঈদ পালন করবে বেশ কষ্টের মধ্যে। এ কষ্ট সীমাহীন। প্রকৃতির বিরূপ আচরণ থেকে নিস্তার নেই। উল্লেখ্য, কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে দেশের অন্যতম বড় ঈদের জামাত। লাখ লাখ মুসল্লি এতে অংশগ্রহণ করবেন।

ঈদে ঢাকাসহ সারা দেশের মানুষ যাতে বাবা-মায়ের সঙ্গে দেশের বাড়িতে ঈদ উদযাপন করতে পারে, তার জন্য সর্বত্র এখন ট্রেন-বাস-লঞ্চের টিকিট সংগ্রহের ব্যস্ততা। ট্রেনের টিকিট যেন সোনার হরিণ। এবার দক্ষিণবঙ্গের মানুষের জন্য বড় সুখবর হচ্ছে পদ্মা ব্রিজ। ফেরি পারাপারের জন্য আর তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে না। পদ্মা সেতু তাদের সেই কষ্ট লাঘব করে দিয়েছে। লাখ লাখ মানুষ যেমন ‘দেশের বাড়িতে’ ঈদ করতে যাবে, তেমনি হাজার হাজার মানুষ এবার দেশের বাইরেও যাবে ঈদ উপলক্ষ্যে বেড়াতে। দেশের ভেতরেও পর্যটন কেন্দ্রগুলো পর্যটকদের ভিড়ে মুখরিত হবে।

এ সবের একটা অর্থনীতি আছে। পরিবহণ ব্যবসা, হোটেল-মোটেল ব্যবসা, পর্যটন ব্যবসার একটা উল্লেখযোগ্য সময় এটা। এ সময়ে শত শত কোটি টাকার ব্যবসা হয় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, সিলেট ইত্যাদি অঞ্চলের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে। এবার কুয়াকাটাও যোগ হবে এই তালিকায়। বিনা ফেরিতে এখন ঢাকা থেকে বরিশালের কুয়াকাটায় যাওয়া যাবে। আনন্দই আলাদা।

ধর্মীয় ও আনুষ্ঠানিক দিক এবং পর্যটন ব্যবসার দিক বাদে ঈদের বড় একটা অর্থনৈতিক দিক রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় অর্থনীতির বিষয় হচ্ছে পশুর হাট এবং চামড়ার বাজার। এর সঙ্গে আছে লবণসহ আরও কিছু পণ্যের বাজার। কুরবানির ঈদে কত পশু বেচাকেনা হয়? এর সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। কাগজের খবরে বলা হচ্ছে, এবার পশুর হাটে সোয়া কোটির মতো গরু-ছাগল-মহিষ ইত্যাদি বেচাকেনার জন্য উঠবে।

গত বুধবার থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবেই এসব পশু বিক্রি শুরু হয়েছে। ক্রেতারা যাচ্ছেন বাজারে। এবার নয়, বছর দুয়েক আগে থেকেই নতুনভাবে প্রবর্তিত হয়েছে অনলাইনে পশু কেনার ব্যবস্থা। এ ব্যবস্থা দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। অনেকেই হাটের ঝামেলা পছন্দ করেন না। তারা অনলাইনে পশু ক্রয় করতে পছন্দ করেন। এ বাজারটি ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রিত বাজারে পরিণত হচ্ছে। বলা হচ্ছে, এবার পশুর কোনো অভাব ঘটবে না।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মাংসে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। খামারিরাও তা-ই বলছেন। তারা ভারতীয় গরু যাতে না আসতে পারে তার জন্য সরকারের পদক্ষেপ দাবি করেছেন। এবার পশু বাজারে বেশি উঠলেও সমস্যা আছে এক জায়গায়। পশু খাদ্যের দাম বেশি। এ কারণে পশু পালনে খরচ পড়েছে বেশি। আবার মূল্যস্ফীতিতে মানুষের ক্রয়ক্ষমতায় টান পড়েছে। এ অবস্থায় যদি বিদেশি গরু আমদানি হয়, তাহলে খামারিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। সরকারও দেখা যাচ্ছে এ ব্যাপারে সচেতন। গরু চোরাচালান রোধে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

তবে এখানে সমস্যা আরও কিছু আছে। পশুর সরবরাহ বেশ বেশি। কিন্তু মানুষের হাতে টাকা নেই। কুরবানির বাজারে টাকা আসে চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী-শিল্পপতি, রেমিট্যান্স প্রাপকদের কাছ থেকে। চাকরিজীবীরা বেতনের সঙ্গে কিছু বোনাসও পান। এসব টাকা ঈদের বাজারে খরচ হয়। এবার সব খাতের চাকরিজীবীরা বোনাস পাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় আছে। বিশেষ করে পোশাক শিল্পের সবাই বোনাস নয়, নিয়মিত বেতনের টাকা পাবে কিনা তা নিয়ে বরাবরের মতো এবারও সংশয় আছে। আবার ধনীদের কিছু টাকা এবার চলে যাচ্ছে বন্যা ত্রাণে। অনেক প্রতিষ্ঠান সরকারের ত্রাণ তহবিলে অর্থ প্রদান করছে।

ব্যবসায়ীদের অনেকে বন্যা ত্রাণে টাকা ব্যয় করছেন। অধিকন্তু এবার রেমিট্যান্সে টান পড়েছে। অন্যান্য বছর বিদেশে কর্মরত বাঙালিরা ঈদ উপলক্ষ্যে ভালো টাকা দেশে বাবা-মায়ের কাছে পাঠাতেন। এবার রেমিট্যান্সের প্রবাহ কম। গেল অর্থবছরের (২০২০-২১) তুলনায় ২০২১-২২ অর্থবছরে রেমিট্যান্স কম এসেছে ১৪-১৫ শতাংশ। ক্যাশ প্রণোদনা দেওয়া সত্ত্বেও রেমিট্যান্সের প্রবাহ ঊর্ধ্বমুখী রাখা যাচ্ছে না। হুণ্ডিওয়ালারা ডলারপ্রতি সরকারি হারের চেয়ে বেশি টাকা দিচ্ছে। ফলে রেমিট্যান্স প্রাপকরা গড়ে যে টাকা পাচ্ছে তাতে শ্লথ বৃদ্ধি লক্ষ করা যাচ্ছে। অবশ্যই এর প্রভাব পড়বে কুরবানির পশুর হাটে। এ নিয়ে খামারিরা আশঙ্কায় ভুগছেন-দেখলাম কাগজগুলোতে। বিশেষ করে বড় গরুর ক্রেতা বাজারে কম দেখা যাচ্ছে।

পশুর হাটের সঙ্গে যুক্ত আরেকটি বড় ব্যবসা। সেটা হচ্ছে চামড়ার ব্যবসা। এর সঙ্গে জড়িত চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির ব্যবসা। আছে লবণের ব্যবসা। প্রতিবছরের মতো সরকার এবারও চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে, সরকারি দামের জায়গায় কুরবানিদাতারা দাম পান কম। সরকারি দাম এবার কিছুটা বেড়েছে। লবণযুক্ত চামড়া কিনতে হবে প্রতি বর্গফুট ৪৭-৫২ টাকা দরে।

আর ঢাকার বাইরের দর ৪০-৪৪ টাকা। সারা দেশে খাসির লবণযুক্ত চামড়া ১৮-২০ টাকা। এখানে সমস্যা হচ্ছে, চামড়ার বাজারে ঈদের দিন ‘একদিনের ব্যবসায়ী’ বলে একশ্রেণির ব্যবসায়ীর উদ্ভব হয়। কাগজে দেখলাম, তাদের জন্য কুরবানির চামড়ার দাম বেঁধে দেওয়া হয়নি। দেওয়া হয়েছে লবণযুক্ত চামড়ার দাম। সাধারণত লবণযুক্ত চামড়ার ক্রেতা হচ্ছে ট্যানারি মালিক ও আড়তদাররা। যুগান্তরের খবরে এ ক্ষেত্রে অস্বচ্ছতার কথা বলা হয়েছে। এই অস্বচ্ছতার কারণে চামড়ার দাম নিয়ে শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। এর ফল ভোগ করবেন ‘একদিনের ব্যবসায়ীরা’ এবং সাধারণ কুরবানিদাতারা।

এসবের টানাপোড়েনে গ্রামাঞ্চলে বহু চমড়া নষ্ট হয়। লবণের অভাবে হয়, টাকার অভাবে হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হন কুরবানিদাতারা, এমনকি মাদ্রাসাগুলোও, যেখানে কুরবানিদাতারা চামড়া দান করেন। দামের প্রশ্ন বাদে বড় সমস্যা আরেকটা হচ্ছে অর্থ সরবরাহ। চামড়ার বড় বড় ব্যবসায়ী, রপ্তানিকারক, ট্যানারি মালিকরা ‘চিরস্থায়ী ঋণখেলাপি’। তারা সাধারণত ব্যাংক থেকে ঋণ নেন, কিন্তু টাকা ফেরত দেন খুব কমই।

এমনকি কয়েকজন বড় ট্যানারি মালিক আছেন, যারা টাকা পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত। এই খেলাপি গ্রাহকদেরও এবার বড় রকমের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। মাত্র দুই শতাংশ ‘ডাউন পেমেন্ট’ করে খেলাপি ঋণ পুনঃতফশিল করা যাবে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্দেশ দিয়েছে। পুনঃতফশিলের পর নতুন ঋণও তারা পাবে। এর জন্য দেখা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৪৪৩ কোটি টাকা ঋণের ব্যবস্থা করেছে। এখানেও অনিশ্চয়তা রয়েছে।

বলা হচ্ছে, অনেক চামড়া ব্যবসায়ীর ‘ডাউন পেমেন্ট’ করার মতো টাকাই নেই। তাহলে তারা নতুন ঋণ পাবেন কী করে? আসলে নতুন ঋণ নয়, ঋণের টাকায় ঋণ শোধ। অর্থাৎ ব্যবসায়ীরা ব্যাংকের টাকা ফেরত দেন না। এ পরিস্থিতিতে বাজারে টাকা সরবরাহে ঘাটতি বাড়তে পারে। এতে বহু চামড়া নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা জন্মায়। এদিকে রয়েছে লবণের সমস্যা। লবণের সরবরাহ সমস্যা এবং মূল্য সমস্যা উভয়ই চামড়া রপ্তানি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেখা যাক এবার লবণের অবস্থা কী দাঁড়ায়।

এসব ব্যবসা বাদে ইদানীং কুবরানি উপলক্ষ্যে আরেক ব্যবসার জন্ম হয়েছে। সেটা হচ্ছে ফ্রিজের ব্যবসা। ভালো খবর এখানে আছে। ফ্রিজের বাজারের সিংহভাগ এখন দেশীয় কোম্পানিগুলোর হাতে। খবরে দেখা যাচ্ছে, সারা বছরে যত ফ্রিজ বিক্রি হয়, ঈদের সময় বিক্রি হয় তার ৩০-৪০ শতাংশ। এ উপলক্ষ্যে প্রচুর বাণিজ্য হয়। বলা হচ্ছে, এই শিল্পে এখন ২০-২২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োজিত আছে। এ শিল্পে আমদানির পরিমাণ কম। আবার ইদানীং এ খাতে রপ্তানিও শুরু হয়েছে। বছরে ৩০-৪০ লাখ ফ্রিজ বিক্রি হয় বলে জানা যাচ্ছে।

ফ্রিজের ব্যবসা বাদে চামড়া খাতের রপ্তানি ব্যবসার পরিমাণ কম নয়। প্রায় ১২৫ কোটি ডলার মূল্যের চামড়া ও চামড়াজাত দ্রব্য প্রতিবছর এখন রপ্তানি হচ্ছে। যেসব কোম্পানি ফ্রিজ রপ্তানি করছে, তাদের মধ্যে রয়েছে যমুনা গ্রুপ, ওয়ালটন, সিঙ্গার ইত্যাদি। এবারের ঈদে ভালো ব্যবসা করতে পারবে না মোটরসাইকেলওয়ালারা। মহাসড়কে আগামী সাতদিন তাদের চলাচল নিষিদ্ধ। পরিশেষে বলতে হয়, ঈদ উপলক্ষ্যে শুধু পশু নয়-মোরগ-মুরগি, খাসির মাংসসহ মসলাপাতিরও বিক্রি বাড়ে। পেঁয়াজ-রসুন, ভালো চাল, চিনি, ডাল ইত্যাদি বাজারও জমে। আর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সিটি করপোরেশন বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

ড. আর এম দেবনাথ : অর্থনীতি বিশ্লেষক; সাবেক শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

কুরবানির ঈদ

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম