বাইফোকাল লেন্স
মিয়ানমার কি রাখাইন প্রদেশ ধরে রাখতে পারবে?
একেএম শামসুদ্দিন
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
এক মাস ধরে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত উত্তেজনা নিয়ে এ দেশের মানুষ বেশ উদ্বিগ্নে আছে। বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজন অনেকেই মোবাইল ফোনে জানতে চান, মিয়ানমারের সঙ্গে কি শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ লেগেই যাবে? যেভাবে ভারী অস্ত্রের গোলা বাংলাদেশের ভূখণ্ডে এসে পড়ছে, তাতে বাংলাদেশের কি কোনো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত? সেনাবাহিনী কি ডেপ্লোয় হচ্ছে?
সেদিন আমার এক আত্মীয় উদ্বিগ্নচিত্তে মেসেজ পাঠিয়েছেন, ‘ভাই, অনেকে বলছে, বাংলাদেশ যুদ্ধে জড়িয়ে যেতে পারে। এটা কি ঠিক?’ উত্তরে বলেছি, ‘সম্ভাবনা কম। তবে মিয়ানমার উসকানি দিয়ে যাবে।’ এর পরদিনই ঢাকার এক দৈনিক পত্রিকার প্রধান শিরোনাম দেখলাম, ‘সংঘাতে জড়ানোর চেষ্টায় উসকানি’। ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকায় প্রায় ৪০টি দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকদের মিয়ানমার-বাংলাদেশে সীমান্ত পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করার পর বাংলাদেশ সরকারের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব খোরশেদ আলম সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বলেছেন, সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টি করে মিয়ানমার ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলাদেশকে সংঘাতে জড়াতে চাইছে। তিনি আরও বলেন, ‘ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ না করলে, গোলা বাংলাদেশে এসে পড়ার কথা নয়। ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলাদেশকে সংঘাতে জড়ানোর যে চেষ্টা, বাংলাদেশ তাতে যুক্ত হবে না।’
১৬ সেপ্টেম্বর রাতে নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তের পাহাড়ের পাদদেশের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে মর্টার শেল এসে পড়লে ছয়জন রোহিঙ্গা আহত হয়েছেন। আহত মো. ইকবাল নামে এক কিশোরের পরে মৃত্যু হয়। এরও তিন দিন আগে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার থেকে রকেট শেল ছুড়লে ওই শেল বাংলাদেশের ভূখণ্ডে এসে পড়ে। মিয়ানমারের হেলিকপ্টার ও ফাইটার এয়ারক্রাফট বাংলাদেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন করার পর বাংলাদেশে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে এনে কড়া প্রতিবাদ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ভূখণ্ডে মর্টারের যে গোলা এসে পড়েছে, তা ৮২ মিলিমিটার মর্টারের গোলা বলেই মনে হয়েছে। ৮২ মিলিমিটার মর্টারের গোলা সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৮০ মিটার পর্যন্ত যেতে পারে। সে হিসাবে বলা যায়, দুই থেকে তিন কিলোমিটারের মধ্যে আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার বাহিনীর সংঘর্ষ চলছে। প্রশ্ন হচ্ছে, এই গোলা কারা নিক্ষেপ করছে? আরাকান আর্মি না মিয়ানমার বাহিনী? মিয়ানমার যদিও বলেছে, আরাকান আর্মি ও আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) এসব গোলাবর্ষণ করেছে। মিয়ানমারের এ বক্তব্য সঠিক কি না, তা যাচাইসাপেক্ষ। তবে হেলিকপ্টার থেকে যে রকেট শেল নিক্ষেপ করা হয়েছে, তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, হেলিকপ্টারটি মিয়ানমার বাহিনীরই ছিল। কারণ আরাকান আর্মির কোনো হেলিকপ্টার নেই। মিয়ানমারের এ হেলিকপ্টার বাংলাদেশ সীমান্তের খুব কাছেই আরাকান আর্মির অবস্থানের ওপর গোলাবর্ষণ করে। সে হিসাবে বলা যায়, সীমান্তের শূন্যরেখা থেকে দু-তিন কিলোমিটার অভ্যন্তর এলাকাজুড়ে আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার বাহিনীর ব্যাপক যুদ্ধ চলছে।
সীমান্ত এলাকায় যদি এরূপ বড় ধরনের যুদ্ধ হয়, তাহলে, এর Spillover Effects সীমান্তের এপারে আসতেই পারে। এক্ষেত্রে তারা ইচ্ছা করে বাংলাদেশ ভূখণ্ড লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণ করেছে বলাটা মনে হয় ঠিক হবে না। বরং তাদের উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাবর্ষণ লক্ষ্যচ্যুত হয়ে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে এসে পড়ছে বলেই মনে হয়। অনেকেই বলছেন, চলমান এ সংঘর্ষের ফলে মিয়ানমার এখন এ ইস্যু সামনে এনে চুক্তি অনুযায়ী রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া পিছিয়ে দিতে পারে। প্রশ্ন হচ্ছে, মিয়ানমার এ পর্যন্ত বাংলাদেশের কোন অনুরোধটি রেখেছে? গত পাঁচ বছর ধরে যতবার কথা দিয়েছে, ততবারই তারা কথার বরখেলাপ করেছে। অঙ্গীকার ভঙ্গ করার জন্য মিয়ানমারের কোনো অসিলার দরকার হয় না। বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দিতে বাংলাদেশকে তাই আরও বিচক্ষণ ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে হবে। ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ‘কৌশলী’ পদক্ষেপ নেওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
১৬ মাস যুদ্ধবিরতির পর মে মাস থেকে আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার বাহিনীর আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। সর্বশেষ কয়েকটি সংঘর্ষে মিয়ানমার বাহিনীর শতাধিক সদস্য নিহত হয়েছে। ২ সেপ্টেম্বর আরাকান আর্মি বাংলাদেশের সীমান্তসংলগ্ন রাখাইনের মংডু শহরের একটি পুলিশ তল্লাশিচৌকিতে হামলা চালিয়ে ১৯ জন জান্তা পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে এবং তল্লাশিচৌকিটি দখল করে নেয়। আরাকান আর্মি ওই অঞ্চলের ছয়টি সীমান্ত ঘাঁটিও দখল করে নিয়েছে। এ ছয়টি সীমান্ত ঘাঁটিকে ঘিরে মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার থেকে নিয়মিত বিমান হামলা চালানো হয়েছে। ২ সেপ্টেম্বর পালেতওয়ার মিয়িক ওয়া গ্রামের কাছে এক সংঘর্ষে মিয়ানমার বাহিনীর ১০ জন সেনাসদস্য নিহত হয়। তাছাড়া ৩ সেপ্টেম্বর রাখাইনের অ্যান শহর এলাকার একটি হাইওয়েতে মিয়ানমার বাহিনীর একটি যানবহরে অতর্কিত আক্রমণ করে বেশ কয়েকজন সেনাসদস্যকে হত্যা করেছে আরাকান আর্মি।
এক যুগেরও বেশি সময় আগে আরাকানের (বর্তমানে রাখাইন) বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ২৬ জন তরুণকে নিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল আরাকান আর্মির। প্রথমদিকে ভাগ্যের অন্বেষণে উত্তরাঞ্চলের খনিতে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকরা ছিল এর সদস্য। ২০০৮ সালে চীন সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের কাচিন রাজ্যের লাইজাতে বিদ্রোহীগোষ্ঠী কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মির সহায়তায় আরাকান আর্মি প্রতিষ্ঠিত হয়। তারা হলো ইউনাইটেড লিগ অব আরাকানের (ইউএলএ) সশস্ত্র শাখা। ২০১৪ সালে আরাকান আর্মি প্রকাশ্যে ঘোষণা দেয় যে, ‘রাখাইন রাজ্য’কে মাতৃভূমি হিসাবে ফেরত পাওয়াই তাদের এ লড়াইয়ের লক্ষ্য। ২০১৬ সালের শেষের দিকে শান প্রদেশে উত্তরাঞ্চলীয় জোটের অংশ হিসাবে আরাকান আর্মি, কাচিনদের পাশাপাশি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামে। মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে মনে হয়েছে, পৃথক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্বপ্নপূরণের পথে অনেকদূর এগিয়ে গেছে আরাকান আর্মি। মিয়ানমারের জাতিগত সংঘাতের বিভিন্ন ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আরাকান আর্মির আনুমানিক ৩০ হাজার সদস্য দেশটির চীন প্রদেশের পালেতোয়া ও রাখাইন প্রদেশের কাইয়ুকতা, বুথিডং, রাথেডং ও পনিয়াগুনে শক্ত ঘাঁটি করেছে। উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠার অল্পদিনেই সশস্ত্র এ সংগঠনটি অনেক বিস্তার লাভ করেছে।
আরাকান আর্মির অস্ত্র ও গোলাবারুদের জোগানদাতা হলো তাদের প্রধান সহযোগী সশস্ত্রগোষ্ঠী কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মি ও অপর মিত্র ইউনাইটেড ওয়া স্টেট আর্মি। আরাকান আর্মির অস্ত্রের প্রধান সোর্সও হলো এ মিত্র দুই সশস্ত্র গ্রুপের দেশীয়ভাবে তৈরি অস্ত্রশস্ত্র। থাইল্যান্ড-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকার অস্ত্রের কালোবাজারিদের কাছ থেকেও অস্ত্র ও গোলাবারুদ ক্রয় করে থাকে আরাকান আর্মি। তাদের অস্ত্রভান্ডারে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এম-৬০ মেশিনগানও আছে। চীন মিয়ানমার জান্তাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাষ্ট্র হলেও আরাকান আর্মির কাছে চীনের তৈরি অস্ত্রও আছে। সম্প্রতি ৮২ মিলিমিটার মর্টারও তাদের অস্ত্রভান্ডারে যুক্ত হয়েছে। অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে, আরাকান আর্মি অ্যান্টি এয়ারক্রাফ্ট গান ক্রয় করেছে অথবা ক্রয়ের প্রক্রিয়ায় আছে। প্রশ্ন হচ্ছে, এত অস্ত্র ও যুদ্ধ সরঞ্জামের জন্য যে অর্থের প্রয়োজন হয়, তা আসে কোথা থেকে? জানা যায়, তাদের অর্থের প্রধানতম সোর্স হলো মাদক পাচার। ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য চোরাচালানের মাধ্যমে তাদের অর্থের জোগান হয়। তাছাড়াও দেশের বিভিন্ন রাজ্যে রাখাইনের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীরা তাদের অর্থের অন্যতম জোগানদাতা। পাশাপাশি দেশ ও বিদেশের কিছু সচ্ছল ব্যক্তিও নির্ধারিত হারে মোটা অঙ্কের চাঁদা দিয়ে থাকেন।
প্রতিষ্ঠার পর অতি অল্প সময়ের মধ্যে রাখাইনের মানুষের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে আরাকান আর্মি। রাখাইন জনগণের এমন সমর্থন পেয়ে আরাকান আর্মি রাখাইন প্রদেশে তাদের পূর্ববর্তী স্বাধীন রাজত্ব আবারও প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। আরাকান আর্মির প্রতি মানুষের সমর্থন এত প্রবল আকার ধারণ করেছে যে, প্রায় ৬০ শতাংশ এলাকায় তারা তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে বলে আরাকান আর্মি প্রধান জেনারেল তোয়াই ম্রা নাইং সম্প্রতি দাবি করেছেন। তারা ইতোমধ্যেই ওইসব এলাকায় তাদের প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তুলেছেন বলে দাবি করেন। বিচারব্যবস্থা ও কর ব্যবস্থাপনাও তৈরি হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য তারা নতুন পুলিশবাহিনীর প্রশিক্ষণও পরিচালনা করছেন। উল্লেখ্য, রাখাইন রাজ্যটি একসময়ের নাম ছিল আরাকান। এখানকার প্রধান জনগোষ্ঠী হলো আরাকানি। ধর্মে তারা থেরোবাদী বৌদ্ধ। তবে তারা নিজেদের মিয়ানমারের মূল ভূখণ্ডের বৌদ্ধদের থেকে আলাদা বলে দাবি করেন। আরাকান একসময় স্বাধীন রাষ্ট্র ছিল। ১৭৮৪-৮৫ সালে যুদ্ধে তৎকালীন বার্মার অধীনস্থ হয় আরাকান। তারপর ইংরেজদের হাতে চলে যায় পুরো বার্মা। তখন ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার একটি প্রদেশ হয় আরাকান। ১৯৪৮ সালে বার্মা বা মিয়ানমার স্বাধীনতা লাভের পর নতুন ফেডারেল প্রজাতন্ত্রে আরাকান বা রাখাইন হয় এর একটি অংশবিশেষ।
বর্তমানে মিয়ানমারের পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, মিয়ানমার সেনাবাহিনী বিদ্রোহী সশস্ত্র গ্রুপগুলোর সঙ্গে যুদ্ধে কুলাতে পারছে না। দিনদিন সেনা শাসনের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের এ আদিবাসী গোষ্ঠীগুলোর সংঘর্ষ আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। উত্তর রাখাইন, চীন, শান ও কাচিন রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় সেনাবাহিনী আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, আরাকান আর্মির সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অন্তত ১০ জন সামরিক অফিসারসহ ৯০ জন জান্তা পক্ষত্যাগ করে অস্ত্রশস্ত্রসহ আরাকান আর্মিতে যোগ দিয়েছে। এ তালিকা দিনদিন আরও লম্বা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সংশয় হয়, শেষ পর্যন্ত মিয়ানমার রাখাইন প্রদেশকে ধরে রাখতে পারবে তো?
ইউনাইটেড লিগ অব আরাকান ও আরাকান আর্মি রাখাইনকে স্বাধীন করতে এখন আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের প্রচেষ্টায় আছে। রোহিঙ্গাদের প্রতি যেহেতু আন্তর্জাতিক মহল সহানুভূতিশীল, কাজেই তাদের সমর্থন পেতে হলে, রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত হতে হবে। তাদের ধারণা, রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব স্বীকার করে নিয়ে পুনর্বাসনের অঙ্গীকার করলে তারা হয়তো যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন পাবে। এ কারণে অতি সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে রাখাইন আর্মি প্রধান জেনারেল তোয়াই ম্রা নাইং বলেছেন, ধর্ম বিবেচ্য নয়, জন্মসূত্রেই রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক। তিনি সরাসরি বলেছেন, রোহিঙ্গাদের জন্মভূমিতে ফিরিয়ে এনে যত দ্রুত সম্ভব নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করা উচিত। ১৯৮২ সালের যে আইনের বলে মিয়ানমার সামরিক সরকার রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব হরণ করেছিল; তারা সেই আইন সংশোধন/বিলোপের অঙ্গীকারও করেছে।
আরাকান আর্মি মিয়ানমার থেকে রাখাইন প্রদেশকে মুক্ত করার যে অঙ্গীকার নিয়ে লড়াই করে যাচ্ছে, তাতে সাফল্য আসবে তো? লক্ষ্য পূরণে তারা আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন পাবে কি? এমন অনেক প্রশ্নের মাঝে আরাকান আর্মি প্রধান সম্প্রতি দাবি করেছেন, ‘জাতিসংঘ থেকে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।’ তার এ দাবির মধ্যে কতটুকু সত্যতা আছে, তা নিয়ে হয়তো প্রশ্ন থাকতে পারে। তবে একথা ঠিক, যে দৃঢ়প্রত্যয় ও জনসমর্থন নিয়ে আরাকান আর্মি লড়াই করে যাচ্ছে, তার সুফল হয়তো একদিন পাবে। মিয়ানমার জান্তার অস্ত্রের কোনো নিশানাই তাদের দমন করতে পারবে না।
একেএম শামসুদ্দিন : সাবেক সেনা কর্মকর্তা
