বৈশ্বিক মহামন্দা নিয়ে অপরাজনীতি পরিত্যাজ্য
ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী
প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২২, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে অতিসম্প্রতি মাত্র ৪৫ দিন দায়িত্ব পালন শেষে ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন।
উন্নত বিশ্বে ফ্রান্স, জার্মানি, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ প্রায় দেশগুলো দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে নির্ধারণ করতে যারপরনাই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পুরো বিশ্বকে এমন এক বিপর্যস্ত অবস্থায় নিপতিত করেছে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী অরাজক পরিস্থিতি পর্যালোচনায় বিরল দৃষ্টান্ত হিসাবে বিবেচ্য। বিশ্বব্যাপী প্রাকৃতিক গ্যাস-জ্বালানি তেল-নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীর উৎপাদন-সরবরাহ চরম প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন। বিভিন্ন বিকল্প পন্থায় নাগরিক সুবিধা সীমিতকরণে উল্লেখ্য দেশগুলো সংকট উত্তরণের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
উন্নয়নশীল-অনুন্নত বিশ্বে এর প্রভাব এত বেশি প্রবলাকার ধারণ করতে যাচ্ছে; সে সম্পর্কে আগাম কোনো মন্তব্য করা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। জনঅধ্যুষিত আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম অবস্থানে নেই। নিকট অতীতে বিদ্যুৎ বিপর্যয়-ক্রমবর্ধমান রিজার্ভের নিম্নমুখিতা-পর্যাপ্ত খাদ্যশস্যের মজুত সম্পর্কিত রাজনৈতিক নেতৃত্ব বা সংশ্লিষ্ট মহলের নানামুখী বিভ্রান্ত বক্তব্য আপামর জনগণকে নিদারুণ হতাশাগ্রস্ত করে চলছে। সরকার আন্তরিকভাবে জ্বালানি সাশ্রয় থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিটি সেবাখাতে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিয়েও শুধু কতিপয় মানবরূপী হিংস্র দানবদের কদর্য সিন্ডিকেট কারসাজিতে জনগণ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে অপারগ। দুই-এক দিন আগেই গণমাধ্যম সূত্রে প্রকাশিত-কথিত শিল্প দস্যুদের মুনাফা তীব্রতায় চিনির মূল্য ও মিল থেকে সরবরাহ বাজারে চরম অস্থিরতা তৈরি করেছে।
ষোল হাজার লিটার ভোজ্যতেলের অবৈধ মজুতের বিষয়টি ইতোমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। এরকম বহু ঘটনা প্রতিদিনকার সংবাদপত্রে পরিবেশিত হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। জনশ্রুতিমতে, পক্ষান্তরে বিভিন্ন দল-উপদলের কতিপয় রাজনীতিক ও কথিত উপদেষ্টা-মন্ত্রী-দায়িত্বশীল ব্যক্তির অবাঞ্ছিত অতিকথন আশার পরিবর্তে জনমনে নিরাশার চাষাবাদে উর্বরতা বাড়ছে। সামগ্রিক বৈশ্বিক অবস্থা বিবেচনায় জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে ন্যূনতম সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণের বিপরীতে সমস্যাগুলো দেশীয় উৎপাদিত দ্রব্য ও সরবরাহ সংকটের মতোই গুজবের জাল বিস্তার করছে।
সময়ের দাবি অনুযায়ী, পুরো বিশ্বব্যবস্থাকে আমলে নিয়ে যার যার অবস্থান থেকে ভূমিকা পালন অনিবার্য হয়ে পড়লেও শুধু রাজনৈতিক বৈরিতার কারণে দোষারোপ অপসংস্কৃতির অসহনীয় উত্তাপ ছড়ান হচ্ছে। জনগণের কল্যাণে সবকিছু রাজনীতির মোড়কে বন্দি করা মোটেও সমীচীন নয়। সমঝোতা-সহিষ্ণুতাকে অবজ্ঞা করে সহিংসতা-বিরোধ-বিচ্ছেদের রাজনীতি পরিহার সময়ের দাবি। এমনিতেই বিশ্বজুড়ে রাজনীতির প্রতি গণমানুষের অনাস্থার বহিঃপ্রকাশ নানা মাত্রিকতায় যন্ত্রণাদগ্ধ। সাহস-সততার সঙ্গে সত্যকে ধারণ করে সংঘটিত প্রকৃত দৃশ্যপট অনুধাবনে নিয়ে প্রত্যেকের দায়িত্বশীল ভূমিকাই প্রত্যাশিত। কোনো অপকৌশল অবলম্বন করে দেশ ধ্বংসের যে কোনো ধরনের রাজনৈতিক অপকর্ম দেশবাসী মেনে নেবে না। সময়ের আবর্তনে সবাকেই উপলব্ধি করতে হবে জনগণ অধিকমাত্রায় সচেতন এবং তাদের মিথ্যা প্রলোভন-প্রতিশ্রুতি দিনশেষে অসার শূন্যতায় প্রতীয়মান হবে। সময়ক্ষেপণ না করে সব দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে ব্যক্তিস্বার্থ পরিপূর্ণ ত্যাগে মানবিক প্রচেতার সমন্বয়ে সম্ভাব্য মহামন্দা-দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি গ্রহণের সক্ষমতা অর্জনই হতে হবে রাজনীতি-দল-সরকারের কাক্সিক্ষত উদ্দেশ্য।
৬ অক্টোবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) সংশোধিত বার্ষিক পূর্বাভাস অনুযায়ী, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পাশাপাশি নানাবিধ কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বিশ্ব অর্থনীতি। এ কারণে ২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে কমবে বাণিজ্য। চলতি বছর বিশ্বে পণ্য বাণিজ্যে প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৫ শতাংশ হলেও ২০২৩ সালে এর নাটকীয় পতন হবে। ওই বছর প্রবৃদ্ধি হবে মাত্র ১ শতাংশ। ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক এনগোজি ওকোনজো-আইওয়ালা বলেন, ‘২০২৩ সালের চিত্র উল্লেখযোগ্যভাবে অন্ধকার। বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতি বহুমুখী সংকটের মুখে। বেশিরভাগ দেশের অর্থনীতিতেই কঠোর মুদ্রানীতির প্রভাব পড়ছে। উপরন্তু জ্বালানি, খাদ্য ও সারের আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় বিশ্বজুড়ে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ঋণসংকট বাড়াচ্ছে। ফলে আগামী বছর বিশ্ববাণিজ্য আরও সংকুচিত হবে।’
সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) ওয়েবসাইটে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান অর্থনীতিবিদদের নিয়ে পরিচালিত জরিপ ‘ইকোনমিস্ট আউটলুক’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও বিশ্ব মন্দার আশঙ্কা করা হয়েছে। জরিপে অংশগ্রহণকারী ৭৩ শতাংশ অর্থনীতিবিদ মনে করেন ২০২৩ সালে মন্দা হতে পারে। তাদের মধ্যে ৬৪ শতাংশ মন্দার আশঙ্কা এবং বাকি ৯ শতাংশ শক্তিশালী মন্দার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এ ছাড়াও প্রবৃদ্ধি কমার পাশাপাশি উচ্চ মূল্যস্ফীতিও বৈশ্বিক সংকটে রূপ নিচ্ছে এবং মজুরি হ্রাস, দারিদ্র্য বৃদ্ধি ও সামাজিক অস্থিরতার আশঙ্কা রয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, উত্তরদাতা অর্থনীতিবিদদের প্রতি ১০ জনের ৯ জনই বলেছেন, ইউরোপের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি দুর্বল বা খুব দুর্বল হবে। চীনের ব্যাপারেও ৬৭ শতাংশ উত্তরদাতা একই ধরনের মতামত পোষণ করেছেন। তাদের মতে, মূলত ইউক্রেন যুদ্ধ-বিশ্বের দেশে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি-বিশ্বব্যাপী হুমকির মুখে পড়া জ্বালানি সরবরাহের কারণে বিভিন্ন দেশের প্রবৃদ্ধি কমে যাবে। ওই প্রতিবেদনে বিশ্বের অন্য অঞ্চলের তুলনায় দক্ষিণ এশিয়ায় ২০২৩ সালে মোটামুটি মানের প্রবৃদ্ধির ব্যাপারে মত দিয়েছেন ৬৫ শতাংশ অর্থনীতিবিদ।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিশ্ব অর্থনীতি বিষয়ক ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক অক্টোবর’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় যে বিঘ্ন করোনার সময় থেকে ঘটছে, তা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর আরও বেশি প্রকট হয়েছে। এ কারণে বিশ্বব্যাপী পণ্যের সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় একদিকে দাম বেড়েছে; অন্যদিকে উৎপাদনও কম হয়েছে। পণ্যমূল্য বাড়ার ফলে প্রায় সব দেশেই মূল্যস্ফীতির হার রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে। ইউরোপ-আমেরিকায় এখন গত ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং থাইল্যান্ডেও গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। উল্লেখ্য, সংস্থার অন্য প্রতিবেদন সূত্রে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতির হার আরও বৃদ্ধি পাবে এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা বাড়তে পারে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যানুসারে, চলতি বছরের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। ২০২১ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছিল যথাক্রমে ৫ দশমিক ৫৪ ও ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ। বিপরীতে ২০২০ সালের আগস্ট মাসে ছিল ৫ দশমিক ৬৮ এবং সেপ্টেম্বরে ছিল ৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এ ছাড়াও ২০১৫ থেকে ২০১৯ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসের মূল্যস্ফীতি ৫-৬ শতাংশের ঘরেই ওঠানামা করেছে। বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির হার গত এক যুগের মধ্যে কয়েকবার হ্রাস-বৃদ্ধি হলেও; কখনো অর্থনীতিতে বড় ধরনের আঘাত পরিলক্ষিত হয়নি। বর্তমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় দেশের উচ্চ মূল্যস্ফীতির হার অনেকাংশে চ্যালেঞ্জ হিসাবে দেখা দিয়েছে।
১৫ অক্টোবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত সূত্রমতে, ২০২৩ সালে সম্ভাব্য বৈশ্বিক এ মহামন্দা ও দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে বিশ্বব্যাংক ১৭০ বিলিয়ন ডলারের তহবিল গঠন করেছে। সংস্থাটির মতে, বিশ্বমন্দার আগেই বর্তমানে বিশ্বে ৪৮টি দেশের প্রায় চার কোটি মানুষ চরম খাদ্যসংকটে রয়েছে; যার মধ্যে কোস্টারিকা, বসনিয়া ও রুয়ান্ডার অবস্থা সবচেয়ে কঠিন। বৈশ্বিক মন্দার কবলে পড়লে বিশ্বের ৩৫ কোটি মানুষ খাদ্যসংকটে পড়বে। করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আর মোড়ল দেশগুলোর আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা বিশ্বকে ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে। এরই মধ্যে সংকটের আঁচ লেগেছে ছোট-বড় সব অর্থনীতির দেশের। এতে করে জ্বালানি তেলের চড়া দাম ও লাগামহীন মূল্যস্ফীতিতে খাদ্য ঘাটতি সৃষ্টি হবে। এ সংকট থেকে মানুষকে বাঁচাতে সরকার প্রধানদের সতর্ক হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভার। তার ভাষ্যমতে, ‘বিশ্ব নেতাদের নির্লিপ্ততা বিশ্ববাসীকে মহাসংকটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। বছর দুয়েক আগেও বিশ্বজুড়ে শান্তি ছিল। মূল্যস্ফীতি, সুদের হার নিয়ে কোনো চাপ ছিল না। সে অবস্থা থেকে আমরা চরম অনিশ্চয়তার দিকে যাচ্ছি। ভূ-রাজনৈতিক সংকট আর সংঘাত পুরো বিপজ্জনক অবস্থায় ঠেলে দিচ্ছে।’
২০ অক্টোবর ‘বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আভাস ও বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ উত্তরণ কোন পথে’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) বৈশ্বিক মহামন্দার কারণে বাংলাদেশ সাতটি সংকটের সম্মুখীন হতে যাচ্ছে বলে মতপ্রকাশ করেছে। সংকটগুলো হচ্ছে যথাক্রমে-খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, ডলারের ঘাটতি, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি, ইউক্রেন যুদ্ধ, কোভিড-১৯ মহামারি এবং জলবায়ু পরিবর্তন। প্রাসঙ্গিকতায় সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আভাস দেখা যাচ্ছে। বিশ্বজুড়েই মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বগতিতে। বিভিন্ন দেশে প্রবৃদ্ধি হয় নিচে অথবা নেতিবাচক। বাংলাদেশও সেই প্রভাব অনুভব করছে। এই সংকটটি চলমান ও আরও ঘনীভূত হচ্ছে।’
১৭ অক্টোবর বিশ্ব খাদ্য ফোরাম ২০২২-এর উদ্বোধনী অধিবেশনে ভার্চুয়ালি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা যুদ্ধ এবং খাদ্য নিয়ে রাজনীতি বন্ধ করে সবার কাছে খাবার পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্বের ৮০ কোটির বেশি মানুষ ক্ষুধার্ত অবস্থায় ঘুমাতে যায়, যা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আরও খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে। মানুষ হিসাবে আমাদের অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে, প্রত্যেকেরই খাদ্য নিয়ে বেঁচে থাকার এবং একটি সুন্দর জীবনযাপনের অধিকার রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যদি অস্ত্র তৈরিতে বিনিয়োগ করা অর্থের একটি ভগ্নাংশ খাদ্য উৎপাদন এবং বিতরণে ব্যয় করা হয়, তবে এই পৃথিবীতে কেউ ক্ষুধার্ত থাকবে না।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্রমতে, বাজারে চিনি সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই এবং খুব শিগ্গির আরও ১ লাখ টন চিনি আমদানি করা হচ্ছে। একটু তদারকি করলে চিনির বাজার স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আশা। সিন্ডিকেট কারসাজিতে চিনির মূল্যবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ২৪ অক্টোবর থেকে ভর্তুকি মূল্য ৫৫ টাকা দরে চিনি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ছাড়াও আরও নানামুখী কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে এসব সিন্ডিকেট-দুর্বৃত্তদের সমূলে উৎপাটন করে আপামর দেশবাসীর সামগ্রিক স্বার্থ সুরক্ষায় সবার ঐক্যবদ্ধ সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা প্রবলভাবে অনুভূত। দেশের অগ্রযাত্রায় নির্লজ্জ, অন্তরায় সৃষ্টিকারী চিহ্নিত এ দুর্বৃত্তদের সব নষ্ট কর্মযজ্ঞ ও অর্থলিপ্সু অপকৌশলের মূলে কঠিন কুঠারাঘাত এবং সত্য-বস্তুনিষ্ঠ আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা জরুরি ভিত্তিতে গ্রহণ করা না হলে সম্ভাব্য দুর্ভোগ গভীর থেকে গভীরতম হওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে।
ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী : শিক্ষাবিদ; সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
