Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

শতফুল ফুটতে দাও

উন্নয়নের উন্নয়ন চাই

Icon

ড. মাহবুব উল্লাহ্

প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২২, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

উন্নয়নের উন্নয়ন চাই

উন্নয়নের উন্নয়ন প্রয়োজন। যে কেউ এ কথাটি শুনে বলতে পারেন, এটা কেমন কথা! বাস্তবতা হলো, আমাদের দেশে বিভিন্ন খাতে উন্নয়নের জন্য নানা রকমের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। সংবাদপত্রে গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করা হয় প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।

এসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে আসেন রাষ্ট্রের কোনো না কোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। যতই দিন যাচ্ছে, আমরা দেখি প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও প্রচুর অর্থ ব্যয় করা হয়। প্রকল্পস্থলে শামিয়ানা টাঙিয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

বলা যায়, অনুষ্ঠানটি হয়ে ওঠে জাঁকজমকপূর্ণ। মনে হয় প্রকল্পের অবকাঠামো নির্মাণ করে বিশ্ব জয় করা হচ্ছে। একটু গভীরভাবে ভাবলে আমরা দেখব-এ ধরনের জাঁকজমকপূর্ণ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পেছনে অর্থ ব্যয়ের পুরোটাই অপচয়। তারপরও আমরা মিথ্যার জালে আবদ্ধ হয়ে আশ্বস্ত হই। শুধু উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নয়, প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানেও একই ধরনের অপচয়ের ঘটনা ঘটে। একটু চিন্তা করলে আমরা দেখতে পাব-এ ধরনের জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান না করলে যে পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় হতো, তা দিয়ে প্রকল্পের সম্পূরক ইনপুটের পেছনে এ অর্থ ব্যয় করে প্রকল্পটিকে আরও অর্থবহ করা সম্ভব। অর্থের অপচয় ঘটিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের পর দাবি করা হয়-দেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে দাঁড়িয়ে গেছে। এ ধরনের ভাবনা যে আত্মপ্রবঞ্চনার শামিল, তা আমরা কবে উপলব্ধি করব? আমি বলব, উন্নয়নেরও উন্নয়ন চাই। জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান না করে সেই অর্থ মূল প্রকল্পকে আরও সমৃদ্ধ করার পেছনে ব্যবহার করে যা অর্জন করা সম্ভব হতো, সেটাকেই আমি বলি ‘উন্নয়নের উন্নয়ন’।

প্রধানমন্ত্রী কৃচ্ছ্রসাধনের আহ্বান জানাচ্ছেন বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতির সংকটের প্রেক্ষাপটে। একটি উন্নয়নশীল দেশ সংকট ঘনীভূত হলে কৃচ্ছ্রসাধন করবে, কিন্তু স্বাভাবিক সময়ে এর প্রতি নজর না দিলে কৃচ্ছ্রসাধনের দর্শনগত তাৎপর্য হারিয়ে যায়। সত্যিকার অর্থে কৃচ্ছ্রসাধন করে আমরা দেশের জন্য আরও উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করতে পারি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রথম দুবছরে জাতীয়ভাবে কৃচ্ছ্রসাধনের বিষয়টি আলোচনার এজেন্ডায় ছিল। কৃচ্ছ্রসাধনের ইস্যুটি উত্থাপন করেছিলেন তৎকালীন প্ল্যানিং কমিশনের সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আনিসুর রহমান। তখন বাংলাদেশের পরিস্থিতি অর্থনৈতিকভাবে সংকটাপন্ন হওয়ায় কৃচ্ছ্রসাধনের উদ্যোগটি প্রশংসিত হয়েছিল। সে সময় বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে ভয়ানক সমস্যা ছিল প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার অভাব। অভাবের সমস্যাটি কিছুটা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছিল বাংলাদেশের জন্য দাতাগোষ্ঠীর সহানুভূতির ফলে। ওই সংকটময় সময়েও কৃচ্ছ্রসাধনে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়নি কায়েমি স্বার্থগোষ্ঠীর উন্নয়নবিরোধী তৎপরতার ফলে। এখন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে কৃচ্ছ্রসাধনের আহ্বান জানানো হচ্ছে, কিন্তু তা বাস্তবায়নের জন্য তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। আমদানি বাণিজ্যে বিলাসদ্রব্য আমদানির বিরুদ্ধে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্র ও জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে কৃচ্ছ্রসাধনের জন্য একটি পথরেখা অঙ্কন করতে হবে। কৃচ্ছ্রসাধন বলতে কী বোঝায় এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে কীভাবে কৃচ্ছ্রসাধনের নীতি অনসৃত হবে, তা পরিষ্কারভাবে জনগণকে জানাতে হবে। অন্যথায় কৃচ্ছ্রসাধনের কথা নিছক বুলিতেই পর্যবসিত হবে।

দ্রব্যমূল্যের অকল্পনীয় বৃদ্ধির ফলে ভোক্তা সাধারণ বেশকিছু পণ্যসামগ্রী ক্রয় করছেন না, অথবা মহার্ঘ হওয়ার ফলে নির্দিষ্ট পণ্যের জন্য অর্থ ব্যয় হ্রাস করছেন। এক্ষেত্রে বাজার পরিস্থিতি, বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি জনগণকে বাধ্যতামূলকভাবে কৃচ্ছ্রসাধনের পথে চলতে তাড়িত করছে। দৃষ্টান্তস্বরূপ বলা যায়, সয়াবিন তেলের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোক্তারা এর ব্যবহার হ্রাস করেছেন, অথবা কম দামি অন্য ধরনের ভোজ্যতেল ব্যবহার করে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছেন।

রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে একটি সর্বাত্মক কৃচ্ছ্রসাধনের চর্চা কীভাবে করা যায়, তা জনগণ ও ভোক্তাদের কাছে হাজির করতে হবে। সামনে কোনো এক সময়ে আমরা দুর্ভিক্ষকবলিত হতে পারি, সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী একাধিকবার জাতির সামনে বক্তব্য দিয়েছেন। কিন্তু এক্ষেত্রেও বড় ধরনের অস্পষ্টতা রয়েছে। এখন থেকেই ভবিষ্যতের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করার কৌশল নির্ণয় করতে হবে। হতদরিদ্র ও দুর্ভিক্ষকবলিত জনগোষ্ঠীকে কীভাবে বাঁচিয়ে রাখা যায়, সে বিষয়ে স্পষ্টভাবে পদক্ষেপগুলো চিহ্নিত করতে হবে। নিকট অতীতে ১৯৭৪ সালে দেশে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা ও স্মৃতি বর্তমান সংকটে ইতিবাচক ও নেতিবাচকভাবে কীভাবে ব্যবহার করা যায়, তার রূপরেখাটিও তুলে ধরতে হবে।

উন্নয়নের কথা বলতে গিয়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা প্রবৃদ্ধির গল্পটি বলি। নিছক প্রবৃদ্ধিই উন্নয়ন নয়। দেখতে হবে প্রবৃদ্ধির মান কেমন। প্রবৃদ্ধি কি দারিদ্র্য নিরসন করছে? প্রবৃদ্ধি কি কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করছে? প্রবৃদ্ধি কি অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাস করছে? প্রবৃদ্ধি কি টেকসই উন্নয়নের গ্যারান্টি দিচ্ছে? প্রবৃদ্ধির অঙ্কের মধ্যে এ প্রশ্নগুলোর সমাধান যদি নিহিত থাকে, তাহলে উন্নয়ন সঠিক পথে চলছে বলে বিবেচনা করা যায়। ভাবতে হবে টেকসই উন্নয়ন নিয়েও। বর্তমান প্রজন্ম যে হারে ভোগ করছে, এর ফলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ভোগের মাত্রা যদি হ্রাস না পায়, তাহলে বুঝতে হবে উন্নয়ন টেকসই হচ্ছে। উত্থাপিত প্রশ্নগুলোর সঠিক সমাধান নির্ণয় করে প্রবৃদ্ধির কৌশল নির্ধারণ করতে পারলে উন্নয়নের উন্নয়ন অর্জন করা সম্ভব। বর্তমানে বাংলাদেশ যে ধরনের প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে, সেই প্রবৃদ্ধি কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এবং দারিদ্র্য ও বৈষম্য নিরসনে সহায়ক হচ্ছে না। এ বিষয়টির ওপর যথাযথ গুরুত্বারোপ করতে হবে। তাহলেই বুঝব আমরা উন্নয়নের উন্নয়ন পথেই চলছি।

বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালাতে গিয়ে বহু ধরনের অপচয় ঘটে। উন্নয়নের অপচয় নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে এবং হবে। দেখা গেছে, বিপুল অর্থ ব্যয় করে প্রকল্পের জন্য ভবন নির্মাণ করা হয়। অথচ দেখা যায় ভবন নির্মাণের মতো কাজও প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত সময়ে সম্পন্ন করা যায় না। একবার কিংবা একাধিকবার প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করার ফলে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি পায়। এর ফলে যেসব ধারণাকে ভিত্তি করে প্রকল্পের ফিজিবিলিটি সমীক্ষণ করা হয়েছিল, সেই ধারণাগুলো অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যায়। ফলে প্রকল্পটি থেকে কাম্য মাত্রায় সুবিধা লাভ করা সম্ভব হয় না। ক্ষেত্রবিশেষে প্রকল্পটি শ্বেতহস্তীতে পরিণত হয়। প্রকল্পের জন্য দালানকোঠা নির্মাণ করা হলো, কিন্তু প্রয়োজনীয় লোকবল সৃষ্টি করা হলো না, প্রয়োজনীয় যন্ত্রসামগ্রী বসানো হলো না, তাহলে সবকিছু মিলে প্রকল্পের যে ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে, তা একটি পরিত্যক্ত ভবনে পরিণত হয়। উন্নয়ন তত্ত্বে সম্পূরক উপকরণগুলোর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা না হলে প্রকল্পের অধীনে নির্মিত ভবনাদি দ্রুত নষ্ট হতে থাকে। যার ফল দাঁড়ায়-প্রকল্পের জন্য ব্যয়িত অর্থ পানিতে ফেলে দেওয়ার শামিল।

স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বরাদ্দ নিয়ে জনগণের অসন্তুষ্টি রয়েছে। স্বাস্থ্য খাতের উন্নতির জন্য ব্যয় বরাদ্দ বৃদ্ধি করার দাবি রয়েছে। এ দাবি পূরণ করা হলে স্বাস্থ্য খাতের চেহারা আরও একটু সাবলীল হবে বলে একটা ধারণা আছে। কিন্তু প্রশ্ন জাগে, যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হয়, তা কি সঠিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে? একটি সংবাদপত্র স্বাস্থ্য খাতে অপচয় নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এ থেকে জানা যায়, স্বাস্থ্য খাতের জন্য নির্মিত ২৩৩টি স্থাপনা অব্যবহৃত অবস্থায় রয়েছে। এসব গাফিলতি নিয়ে দৈনিকটি সারসংক্ষেপ করে বলেছে, ১৬ বছর আগে হাসপাতাল ভবন তৈরি হয়েছে, কোনোদিন চিকিৎসা হয়নি। প্রশিক্ষণ স্কুল তৈরি হয়েছে, প্রশিক্ষণ চালু হয়নি। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর জেলায় অব্যবহৃত অবস্থায় আছে তিন স্থাপনা। সবকিছু মিলে উপসংহার হলো, অবকাঠামো নির্মাণে যত আগ্রহ, সেবা চালুতে নেই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অপরিকল্পিতভাবে কোটি কোটি টাকার স্থাপনা তৈরি করছে। অনেকগুলো ব্যবহার ছাড়াই নষ্ট হচ্ছে। ভবন নির্মাণের কাজ শেষে সরকারের দায়িত্ব ছিল প্রয়োজনীয় জনবলের সুসংস্থান করা। একটি হাসপাতালের বেড সংখ্যার অনুপাতে কতজন ডাক্তার, নার্স, হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট ও হেলথ টেকনোলজিস্ট দরকার, তার ভিত্তিতে এদের নিয়োগ দেওয়া। হাসপাতালে যেসব যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয়, সে প্রয়োজন মেটানোর জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। এর বাইরেও কিছু কর্মচারী, পাচক প্রভৃতি দরকার। এক্ষেত্রেও জনবল বরাদ্দ করা প্রয়োজন। একটি হাসপাতাল ভবন নির্মাণের পর ৮-১০ বছর ধরে জনবল ও প্রয়োজনীয় উপকরণাদির বরাদ্দ না হওয়ার ফলে প্রকল্পটি বয়ে বেড়ানো দেশের জন্য কল্যাণ ডেকে আনে না, বরং অকল্যাণ দেশের অর্থনীতিকে জাপটে ধরে। সময়মতো সবদিক থেকে একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এ থেকে নিঃসৃত কল্যাণ সামগ্রিকভাবে দেশের কল্যাণের সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে অধিকতর প্রবৃদ্ধি অর্জনের পথ সুগম করে দেবে।

আগে উল্লিখিত সংবাদপত্রের ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০০৬ সালের ১৬ এপ্রিল তখনকার স্বাস্থ্যমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলায় কোন্ডা ইউনিয়নে কোন্ডা ২০ শয্যা হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। একই বছর ৭ জুলাই তিনি হাসপাতালটি উদ্বোধন করেন। দুটি অনুষ্ঠানেই উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী এবং স্থানীয় সংসদ-সদস্য আমান উল্লাহ আমান। ব্যস এটুকুই। হাসপাতালটি কোনো দিন চালু হয়নি।

এই হাসপাতালে গিয়ে গত ৩১ অক্টোবর দেখা যায়, চত্বরজুড়ে আগাছা। তিনটি ভবনের একটির সামনে পোশাক কারখানার আধা পোড়া বর্জ্য, ছাইয়ের স্তূপ। মূল ভবনের ইট ও সিঁড়ির রেলিং কে বা কারা খুলে নিয়ে গেছে। পরিত্যক্ত এই হাসপাতালের বিষয়ে কথা বলার মতো সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরাফাতুর রহমান ওই সংবাদপত্রের প্রতিবেদককে বলেন, ‘হাসপাতালটি একটি বিচ্ছিন্ন জায়গায়, লোকালয় থেকে দূরে। সেখানকার অনেক জিনিস চুরি হয়ে গেছে। সবচেয়ে বড় কথা, এ হাসপাতাল চালু করার জন্য যে জনবল দরকার, তা নেই।’

ধামরাই উপজেলায়ও আছে এমন স্থাপনা। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে শ্রীরামপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে ১০ কিলোমিটার দক্ষিণে গেলে কৃষ্ণনগর গ্রাম। সেই গ্রামে ২০০৬ সালের ৩ নভেম্বর কৃষ্ণনগর ২০ শয্যা হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থাপনা ইউনিটের তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলী কর্নেল মো. ফজলুর রশীদ মৃধা। ৩ একর জমির ওপর ছয়টি দোতলা ভবন নিয়ে এ হাসপাতাল। হাসপাতালটিতে কোনো দিন কোনো রোগী ভর্তি হয়নি। সেখানকার অধিবাসীরা জানিয়েছেন, হাসপাতাল তৈরির জন্য এলাকার মানুষের কাছ থেকে জমি কেনা হয়েছিল। কিন্তু হাসপাতালটি এখন পরিত্যক্ত।

বেশ কবছর আগে একই সংবাদপত্র থেকে জানতে পেরেছিলাম, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সড়ক যোগাযোগের জন্য কয়েকশ সেতু নির্মাণ করা হলেও সংযোগ সড়কের অভাবে সেতুগুলো ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এ পরিস্থিতি আমাদের উন্নয়নের চাকাকে সামনের দিকে ঘুরতে না দিয়ে উন্নয়নের গলায় ফাঁসের মতো গ্রন্থি সৃষ্টি করেছে। সে জন্যই বলি-উন্নয়নের উন্নয়ন চাই।

ড. মাহবুব উল্লাহ : শিক্ষাবিদ ও অর্থনীতিবিদ

উন্নয়নের উন্নয়ন.

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম