Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

চেতনায় বুদ্বুদ

রাষ্ট্রপতিদের সঙ্গে কাজের সুযোগ ও অভিজ্ঞতা

Icon

বদিউর রহমান

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

রাষ্ট্রপতিদের সঙ্গে কাজের সুযোগ ও অভিজ্ঞতা

অনেকদিন পর একটা সুন্দর রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান দেখলাম। গত ২৪ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। স্বল্প সময়ে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে ক্ষমতার/পদের পালাবদলের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো। টিভিতে অনুষ্ঠানটি দেখতে গিয়ে বেশ ভালো লেগেছে বিদায়ি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ অ্যাডভোকেটকে দেওয়া সম্মান দেখে। এ শপথ অনুষ্ঠানের ছোট্ট দুটি বিষয় আমার কাছে একটু খটকা লেগেছে। এক. সাউন্ড সিস্টেম বোধকরি ত্রুটিপূর্ণ ছিল, মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কথা শুনতে কষ্ট হচ্ছিল, অপরদিকে শপথ শেষে চেয়ার বদলের তৃতীয়পক্ষীয় আওয়াজ-‘চেয়ার বদল, চেয়ার বদল’ খুব বাজে ঠেকেছে। দুই, ‘আমি’ বলার পর নতুন রাষ্ট্রপতি যে তার নাম বলবেন, তা বলতে অযথা বেশি সময় লেগেছে। তাতে এমন মনে হওয়া বোধকরি অসংগত হবে না যে, তিনি হয়তো ভেবেছেন স্পিকার ‘আমি’র পর নামটাও বলবেন এবং তখন তিনি নামটা বলবেন। আমি কর্ম-উপলক্ষ্যে বঙ্গভবনের অনেক শপথ অনুষ্ঠানের সময়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে থাকাকালীন দায়িত্ব পালন করেছি-অনুষ্ঠানের সার্বিক ব্যবস্থাপনা নিখুঁত রাখার বিষয়ে আমরা সচেষ্ট ছিলাম। চেয়ার বদল, চেয়ার বদলের আওয়াজটা তো ছিল অগ্রহণযোগ্য, এটা কেন হলো বুঝতে পাললাম না। তারপরও অনুষ্ঠানটি চমৎকার হয়েছে। আবদুল হামিদের বিদায় পর্বটি হৃদয়ে গেঁথে গেল আমার। মনে হচ্ছিল, এ সম্মান তার পাওনা ছিল, রাষ্ট্র এ সম্মান দিয়ে একটা নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করল। আশা করি, ভবিষ্যতেও এর ধারাবাহিকতা থাকবে। এমন বিদায়ে বিদায়িজনের কষ্ট হতে পারে, খারাপ লাগতে পারে; কিন্তু চেয়ারটাকে নিজের মনে না করলে কোনো কষ্ট লাগার কথা তো নয়ই, বরং সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন শেষে বিদায় নেওয়াটা আনন্দের। আমরা বিশ্বাস করি, মো. আবদুল হামিদ এমন বিদায়ে আনন্দই পেয়েছেন, কারণ তিনি সাদামাটা একজন আমুদে ব্যক্তিত্ব, এমন প্রটোকলের বন্দিজীবন তার যে ভালো লাগেনি, এটা তিনি অনেকবারই বলেছেন। আল্লাহ তাকে সুস্থতাসহ দীর্ঘজীবী করুন।

ছোট্ট একটা বিষয় এ ফাঁকে বলে রাখি-রাষ্ট্রপতির নামের বানান নিয়ে আমরা প্রথমে বেশ বেকায়দায় পড়ে গিয়েছিলাম। টেলিভিশন ও পত্রিকায় নতুন রাষ্ট্রপতির নামের বানানে আমরা ভিন্নতা লক্ষ করলাম। ১. মো. মোঃ, মোহাম্মদ-তেমন কিছু না হলেও দেশের এক নম্বর স্বীকৃত পদধারীর নামের বানান তো একরকম হওয়াই শ্রেয়, বাঞ্ছনীয়। নিশ্চয় সেটা হতে হয় তার প্রকৃত নামের সঠিক বানান অনুসারে। ২. সাহাবুদ্দিন আর শাহাবুদ্দিনের ‘স’ এবং ‘শ’-দুটিই আমরা পত্রপত্রিকায় দেখলাম। ৩. এর আগে তার নাম আমরা পত্রপত্রিকায়, এমনকি তার নিজের লেখাতেও চুপ্পু সহকারে দেখেছি-এটা অনেক অনেক বছরের ব্যবহৃত নাম তার; কিন্তু রাষ্ট্রপতি হওয়ার সময়ে কি তিনি অ্যাফিডেভিট করে ‘চুপ্পু’ বাদ দিয়েছেন? তা না হলে তার নামের এমন হাল হবে কেন? বিদায়ি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদও কিন্তু প্রথম মেয়াদে মো. আবদুল হামিদ অ্যাডভোকেট হিসাবেই রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন। গেজেটও সেভাবেই হয়েছিল, সংসদের সব পদেই তিনি নামের শেষে অ্যাডভোকেট বাদ দেননি, কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে কীভাবে যে তার ‘অ্যাডভোকেট’ বাদ পড়ল এবং কেন বাদ পড়ল-তা আজও বুঝলাম না। ধারণা করি, পদ বড় হলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে নাম ছোট হয়ে যায়, কিংবা নামের কোনো অংশ তখন হয়তো বেমানান ঠেকে। আমি বলি, জীবনের বড় অংশে ব্যবহৃত নামটা একটা পদে এসে ‘এদিক-সেদিক’ করা বরং সংস্কৃতিহীনতার প্রকাশ ঘটায় কিংবা সৎসাহসের অভাব হিসাবে স্বীকৃত হয়। কারও এটা না করাই উত্তম মনে করি। আমাদের কিছু সহকর্মী অবশ্য অ্যাফিডেভিট করে তাদের নাম বদলিয়েছিলেন, যা আমার ভালো লাগেনি।

চাকরি সূত্রে আমি অবশ্য এমন সৌভাগ্যবান যে, চাকরির শুরুতেই আমি দেশীয় পদবির রাজ-রাজাদের সঙ্গে কাজের সুযোগ পেয়েছিলাম। ১৯৭৯ সালের ১ মার্চ যোগদানের কিছু পরই কর্মোপলক্ষ্যে আমি বঙ্গভবনের সঙ্গে পরিচিত হয়ে পড়ি। ২৯-৩১ মার্চ ১৯৭৯ বঙ্গভবনের ভেতর প্রথম গিয়েই আমার কেবল মোগল বাদশাহদের কথা মনে হতো। জিয়াউর রহমান যখন মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে আসতেন, তখন তার আগমনিবার্তা দেওয়া হতো একটা মৃদু ঘণ্টার অনবরত বাজানোর মাধ্যমে। আমি সচিবদের অপেক্ষায় কক্ষের সামনে দাঁড়িয়ে সে ঘণ্টায় মোগল সম্রাটের আগমনিবার্তা অনুভব করতাম। মাঝেমধ্যে এডিসি আওয়াল এবং শাহ আলমের কক্ষে বসেও তা উপভোগ করতাম। আইয়ুব খানের আমলের রমনা পার্কের পূর্বপাশের প্রেসিডেন্ট হাউজ তো ছিল ছোট্ট পরিসরের, তখনকার গভর্নর হাউজ পরে বঙ্গভবন হয়ে রাজসিক হয়ে গেল। পাকিস্তানের রাজধানী যেহেতু করাচি, রাওয়ালপিন্ডি হয়ে ইসলামাবাদে ছিল, পূর্ব পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হাউজ তেমন বেশি গুরুত্ব বহন করত না। ওই ভবনটি বেশ মর্যাদা পেল বঙ্গবন্ধুর অবস্থানকালীন গণভবন হিসাবে। তারপর উপরাষ্ট্রপতি ভবন হয়ে এখন তো পরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কী যেন ট্রেনিং একাডেমি হয়ে গেল। এরশাদের প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক থাকাকালীন পুরোনো সংসদ ভবন বেশ গুরুত্বপূর্ণ হলো, এরপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে তো আবার সংসদ ভবন এখন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। মূলত ক্ষমতাধর ব্যক্তি যে ভবনে থাকেন, সে ভবনই তখন মহাগুরুত্বের হয়ে পড়ে। বঙ্গবন্ধুর আমলে গণভবনের মর্যাদা উঁচুতে ছিল, যেটা এখন প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন। ‘হাওয়া ভবন’ একসময় কত নামকরা ছিল, আর এখন?

বঙ্গভবনের মূল দুই অংশের সামনের দিকটায় অফিস, পেছনের অংশে রাষ্ট্রপতির বাসভবন। ঢুকতেই প্রথমে ডানে রাষ্ট্রপতির অফিস, তার পশ্চিম পাশে তার সামরিক সচিবের, পাশে তার একান্ত সচিবের, উত্তর দিকে এগোলে প্রথমে ডানে সচিবদের অপেক্ষা কক্ষ, তার পশ্চিম পাশে এডিসিদের কক্ষ, আরেকটু উত্তরে এগোলে মন্ত্রিসভা/মন্ত্রিপরিষদ কক্ষ, ওটার দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে রাষ্ট্রপতির সচিবের কক্ষ (এখন এ বিন্যাস পরিবর্তন হয়েছে কি না জানি না)-সবই চমৎকারভাবে পরিবিষ্ট। করিডর দিয়ে এগোলেই বাম পাশে দরবার হল, ডান পাশে বৈঠকের ঘরও রয়েছে। দরবার হলের উত্তর পাশের চমৎকার বিশাল লন-বেশির ভাগ সময়েই সংবর্ধনা এবং আপ্যায়নের জন্য ব্যবহৃত হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চাকরিকালীন দীর্ঘসময় সপ্তাহে অন্তত দুই দিন (জিয়ার ও সাত্তারের আমলে) আমার বঙ্গভবনে যেতে হতো দুটি সভা উপলক্ষ্যে। সাপ্তাহিক মন্ত্রিপরিষদের সভা হতো তখন প্রতি শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টায় আর সোমবার সকালে (জিয়ার আমলে) হতো শুধু মন্ত্রীদের একটা ক্লাস-জাতীয় সমন্বয় সভা। এ সভায় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী ছাড়া অফিসারদের কেউ যেতে পারতেন না, কেউ লেকচার দিলে তিনি ছাড়া। তবে টেবিলে প্যাড-পেনসিল দেওয়ার জন্য আমার প্রবেশ ছিল অবারিত। জিয়ার পর সাত্তারের আমলও পুরো কাটালাম। তারপর বছরখানেক এরশাদের বৈঠকগুলো তো প্রায়ই সিএমএলএ সচিবালয়ে অর্থাৎ পুরোনো সংসদ ভবনে। ক্ষমতার ভবন-বদল দেখলাম, উপভোগ করলাম, কখনো কখনো বিরক্ত ছিলাম। এক নম্বর রাজাকার শাহ আজিজও যে কীভাবে ক্ষমতার মালিক বনে গেলেন, তাও দেখলাম। বঙ্গবন্ধুর কলিজাটা তার দেহের থেকেও বড় ছিল বলেই এই শাহ আজিজকে তিনি জেলে পাঠিয়ে রক্ষা করে দিলেন। সাবেক আইজিপি ই এ চৌধুরী যখন অতিরিক্ত আইজিপি, তখন এক একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, কীভাবে বঙ্গবন্ধুর হুকুমে শাহ আজিজকে কম্বলে মুড়ে পুলিশ ভ্যানের তলায় ঢুকিয়ে জনচক্ষুর আড়াল করে জেলে নিয়ে বাঁচিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারপর আমরা কী দেখলাম? আমরা দেখলাম, বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা হয়েও নৃশংস হত্যাকাণ্ডে নিহত হলেন, আর জিয়ার বদৌলতে এক নম্বর রাজাকার শাহ আজিজ হয়ে গেলেন জিয়ার প্রধানমন্ত্রী। ভাগ্যের কী পরিহাস! ‘পেট্রিয়ট’ কবিতাটি পড়লেই আমার কেবল মনে হয়-এটা যেন বঙ্গবন্ধুকে নিয়েই লেখা হয়েছিল। কী মহামূল্যবান সমাপ্তি ছিল পেট্রিয়টের জীবন-দাজ আই এন্টার অ্যান্ড দাজ আই গো!

আমরা তো হরেক রকমের রাষ্ট্রপতি পেয়েছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুও রাষ্ট্রপতি ছিলেন, আবার তার খুনি মোশতাক রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন; বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীকে আমরা রাষ্ট্রপতি হিসাবে পেলাম, আবার বিচারপতি সায়েমকেও পেলাম শুধু রাষ্ট্রপতি নয়, প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসাবেও; বঙ্গবন্ধু সদয় হয়ে মোহাম্মদউল্লাহকেও এ বিরল সম্মান দিলেন, যিনি নাকি পরে স্থানীয় পরিষদের এক নির্বাচনেও প্রার্থী হয়েছিলেন। আবার এরশাদের নিয়োজিত এক বিচারপতি আব্দুর রহমানকেও পেলাম এ পদে; বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদকেও দুবার দুই রূপে রাষ্ট্রপতি হিসাবে পেলাম, আবার ইয়াজউদ্দিনকেও পেলাম খালেদা জিয়ার আমলে। জিয়াউর রহমান এবং এরশাদ তো সেনাছাউনির পরদা থেকে সামরিক আইন প্রশাসক হয়ে পরে রাজনীতির জাতে উঠে রাষ্ট্রপতি বনে গেলেন। ওসমানী এবং ড. কামাল তো পেরে ওঠেননি। এবার অবশ্য শেখ হাসিনা যদি ড. কামালকে রাষ্ট্রপতি বানিয়ে দিতেন, তাহলে মজাটা কেমন হতো? ২০১৮-এর জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি তো এই ড. কামালকেই ‘ওস্তাদ মেনে নিয়েছিলেন, যার নিজেরই রাজনৈতিক চাল-চুলো কিছু নেই। ইয়াজউদ্দিন আমার এসএম হলের প্রভোস্ট ছিলেন, রাষ্ট্রপতি হয়ে তিনি আল্লাহ যে আছেন তা টের পেয়েছিলেন। পরে তিনি যে খেল দেখালেন, নিজে নিজে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানও বনে গেলেন, কিন্তু লেজে-গোবরে করে ফেললেন সব। অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসাবেও কেউ কেউ নাম লিখিয়ে ধন্য হয়েছেন, পরে কেউ কেউ আবার অস্থায়ী থেকে নিয়মিতও হয়েছেন। এখন রাষ্ট্রপতির সাংবিধানিক ক্ষমতা বড়ই সীমিত-কেবল প্রধামন্ত্রী আর প্রধান বিচারপতি নিয়োগ ছাড়া বাকি সব কাজ করতে হয় প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে। তাও আবার প্রধানমন্ত্রী কী পরামর্শ দিলেন বা আদৌ কোনো পরামর্শ দিলেন কি না-কোনো কিছু নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না। কবর জিয়ারত আর মিলাদে উপস্থিত হওয়া ছাড়া কোনো ক্ষমতা না থাকার খেদ থাকলেও তিনিই আবার দ্বিতীয়বার কেন যে অনুরোধে ঢেঁকি গিললেন আমরা বুঝলাম না। বর্তমান রাষ্ট্রপতি শেখ হাসিনার একক পছন্দের, এমনকি আওয়ামী লীগের কোনো ফোরামেও তাকে নিয়ে কোনো আলোচনাও হয়নি। আওয়ামী লীগের পার্লামেন্টারি বোর্ড শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রপতি পছন্দের একক ক্ষমতা দিয়ে দিয়েছিল-এই যুক্তিতে বর্তমান রাষ্ট্রপতি মনোনয়ন গণতান্ত্রিক হয়েছে বলা যাবে কি? নামে নামে মিল থাকলেও তিনি নিশ্চয়ই আগের সাহাবুদ্দীন হবেন না, যদিও আগেরজনও দ্বিতীয় মেয়াদে শেখ হাসিনারই পছন্দের ছিলেন। পরে শেখ হাসিনা তার ওপর যৌক্তিক বা অযৌক্তিক যাই হোক, অসন্তষ্টও হয়েছিলেন। বর্তমান রাষ্ট্রপতির নিশ্চয় সেটা মনে থাকার কথা। আমাদের ধারণা, শেখ হাসিনার একক পছন্দের হিসাবে বর্তমান রাষ্ট্রপতি অবশ্যই ‘এই সাহাবুদ্দিন সেই সাহাবুদ্দীন নন’ হবেন।

বদিউর রহমান : সাবেক সচিব, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান

রাষ্ট্রপতি

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম