যেভাবে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া সম্ভব
ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম
প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে ঘোষণা করেছেন, ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে উন্নত ও স্মার্ট। তিনি ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে তিনি রূপকল্প ২০২১, ২০৩১ ও ২০৪১ ঘোষণা করেছিলেন। ওই রূপকল্পগুলোয় তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করার বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। উল্লেখ্য, ওই রূপকল্পে ২০৩১ সালে বাংলাদেশকে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে দারিদ্র্যকে পরাজিত করে উন্নত দেশে রূপান্তরিত করার বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে বাংলাদেশ ডিজিটালের সীমানা অতিক্রম করে স্মার্টের দিকে অগ্রসর হয়েছে।
ডিজিটাল বাংলাদেশের চারটি পিলার রয়েছে। এগুলো হলো-মানবসম্পদের উন্নয়ন, ডিজিটাল সরকারব্যবস্থা, ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে জনগণের মধ্যে সংযোগ স্থাপন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে তথ্য ও প্রযুক্তির বহিঃপ্রকাশ। অন্যদিকে, স্মার্ট বাংলাদেশেরও চারটি পিলার রয়েছে। এগুলো হলো-দেশের জনগণের মধ্যে স্মার্টের বিকাশ, স্মার্ট সরকারব্যবস্থা, দেশের অর্থনীতিতে স্মার্টের স্পর্শ ও স্মার্ট সামাজিক কাঠামো।
স্মার্ট বাংলাদেশ কীভাবে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারে, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট পরিকল্পনা প্রয়োজন। স্মার্ট বাংলাদেশের চার পিলারের প্রথমটি হলো-রাষ্ট্রের নাগরিকদের স্মার্ট হতে হবে। সে ক্ষেত্রে দেশের নাগরিকরা কীভাবে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্থানীয় ও অন্যান্য সমস্যার সমাধান করতে পারবে, সেদিকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, কারিগরি শিক্ষার প্রসার, ইকোসিস্টেম পুনরুদ্ধার, পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, বিদ্যুৎ সরবরাহ, কর্মসংস্থান, কৃষিজমির সীমানির্ধারণ, পোকামাকড় ও রোগবালাই দমন, জমি ক্রয়-বিক্রয়ে ডিজিটাল সিস্টেম, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ, কৃষিপণ্য উৎপাদনে প্রযুক্তিগত সেবা প্রদান নিশ্চিতকরণ, উৎপাদন থেকে বাজারজাতকরণ পর্যন্ত পণ্যের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণ, পরিবেশগত উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণে করণীয়, স্বাস্থ্যসেবা ও প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ নাগরিকদের স্মার্ট হিসাবে গড়ে তুলতে সহায়ক হতে পারে। ডিজিটাল সিস্টেমে ওই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য ও সেবা দৃশ্যমান থাকারও বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ফলে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি ও প্রযুক্তিগত শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। বিগত দশকে বাংলাদেশ কারিগরি ও প্রযুক্তিগত শিক্ষায় অনেকটা অগ্রসর হয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৭০ মিলিয়ন মানুষ ইন্টারনেট সুবিধা পাচ্ছে, যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪২ শতাংশ। ২০২১ সালের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশে ২০২৩ সালের মধ্যে আরও ২০ লাখ মানুষ বাড়তে পারে। বর্তমানে দেশের ৫০ শতাংশের বেশি মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করছে। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৫ সালের মধ্যে ৬৩ শতাংশের বেশি মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহারের আওতায় আসবে।
স্মার্ট নাগরিকদের কারিগরি ও প্রযুক্তিগত শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। তথ্য ও উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে কারিগরি ও প্রযুক্তিগত শিক্ষা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ক্ষমতা রয়েছে। দেশটিতে কম্পিউটার সায়েন্স, আইন, কৃষি, ব্যবসা ও প্রকৌশলীর ওপর ব্যাপক গুরুত্ব দেওয়া হয়। ফলে গ্র্যাজুয়েটরা সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষায় জ্ঞান অর্জনে সক্ষম হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করে থাকে। তাছাড়া প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ শতাংশের বেশি শিক্ষক অন্য দেশ থেকে এসেছে। ফলে ছাত্র ও শিক্ষকদের মধ্যে সংস্কৃতির দিকেও দূরত্ব অনেক কম। তাছাড়া র্যাংকিং অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শীর্ষস্থানে জায়গা করে নিয়েছে। অনেক সময় গ্র্যাজুয়েটরা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কারিগরি ও প্রযুক্তিগত জ্ঞান অর্জন শেষে উদ্যোক্তা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে থাকে।
সুতরাং, স্মার্ট বাংলাদেশে প্রযুক্তিগত শিক্ষার বিকল্প নেই। প্রযুক্তিগত উন্নয়নের মাধ্যমে নাগরিকরা কৃষির উৎপাদন থেকে বাজারজাতকরণ পর্যন্ত সব প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হবে। যদিও বাংলাদেশের মানুষ এখন কৃষি উৎপাদনের বহু তথ্য ডিজিটাল সিস্টেমে সংগ্রহ করে; কিন্তু ভবিষ্যতে স্মার্ট বাংলাদেশের নাগরিকরা জমির উর্বরতা নির্ণয় ও সার প্রয়োগ, উন্নত জাতের বীজ সংগ্রহ, রোগবালাই ও পোকামাকড় দমনের সব তথ্য ঘরে বসেই সংগ্রহ করতে সক্ষম হবে।
স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে শিক্ষার গুরুত্বও অপরিসীম। সে ক্ষেত্রে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত উন্নত দেশের মতো কারিগরি ও প্রযুক্তিগত শিক্ষার গুরুত্ব বাড়াতে হবে। এ লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে শিক্ষক নিয়োগ, কোর্স কারিকুলাম, ক্লাসরুমে গবেষণাভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা, প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও বিস্তারে নৈতিকতার গুরুত্ব বাড়াতে হবে। তাছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইনে উচ্চশিক্ষা ও উদ্ভাবিত প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে জনগণের কাছে হস্তান্তরের বিষয়ে গুরুত্ব বাড়াতে হবে। উদ্ভাবিত প্রযুক্তি দ্বারা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করে কীভাবে ভেজালবিহীন খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো যায়, সেদিকেও নজর দিতে হবে। এ লক্ষ্যে সরকার, রাজনীতিক, জনগণ ও গবেষকদের সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
বর্তমানে জমির খারিজ অনলাইনে সাত দিনেই সম্পন্ন হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, ময়মনসিংহের ভালুকায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে; যেখানে আবেদনকারী অনলাইনে আবেদন ও ডিসিআর কর্তন করার সাত দিনের মধ্যে খারিজটি হাতে পেয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে স্মার্ট বাংলাদেশে জমির ক্রয়-বিক্রয়ও অনলাইনে সম্পন্ন হতে পারে। ফলে স্মার্ট বাংলাদেশ সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমিয়ে অর্থনীতির চাকা ত্বরান্বিত করতে সক্ষম হবে।
যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়ন স্মার্ট বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। বর্তমান সরকারের আমলে পদ্মা সেতুসহ যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বর্তমানে বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনে সৃষ্ট বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিতে উদ্বিগ্ন। জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশ যেসব সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো লবণাক্ততা, খরা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অসহনীয় তাপমাত্রা বৃদ্ধি। এসব প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবিলায় গবেষণালব্ধ তথ্য ও তত্ত্বের অবাধ সরবরাহ থাকতে হবে। খরা, লবণাক্ততা ও তাপমাত্রা সহিষ্ণু ফসলের জাত কৃষকের মধ্যে সরবরাহ নিশ্চিত করা অতীব জরুরি। যদিও বিজ্ঞানীরা উপরিউক্ত বিষয়ে অনবরত গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন; কিন্তু স্মার্ট বাংলাদেশে নাগরিকদের আগামী ৩০ বছর জলবায়ু পরিবর্তনে সৃষ্ট ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় প্রস্তুত করতে হবে। নতুবা প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতায় খাদ্য ঘাটতি ও পরিবেশের বিপর্যয় দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ‘ক্লাইমেট স্মার্ট লাইভেলিহুড’ মডেল তৈরি করা যেতে পারে। এ মডেলে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রথমত, জনগণকে স্থানীয় নেতিবাচক প্রভাবগুলোর প্রতি স্থিতিস্থাপক হতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, লবণাক্ত এলাকায় এমন কিছু প্রযুক্তি প্রয়োগ করা উচিত, যা মাটিতে লবণের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করবে। দ্বিতীয়ত, জলবায়ু পরিবর্তনে অবদান রাখবে এমন কোনো প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে না। উদাহরণস্বরূপ, পরিবেশ বা খাদ্যে বিষাক্ততা সৃষ্টি করে এমন কোনো রাসায়নিক দ্রব্যাদি বা কীটনাশক ব্যবহার করা যাবে না। তৃতীয়ত, টেকসই জীবনযাপনে গুরুত্ব বাড়াতে হবে। এতে স্থানীয় জনগণ পরিবেশ সংরক্ষণে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারবে। চতুর্থত, ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তি এমন হতে হবে, যেখানে সমাজের মানুষ খুব কম বিনিয়োগেই পরিবেশ সংরক্ষণে ভূমিকা রাখতে পারবে। উপরোক্ত বিষয়গুলোর বাস্তব প্রয়োগ হলেই বাংলাদেশকে পরিবেশবান্ধব ক্লাইমেট স্মার্ট দেশে পরিণত করবে বলে আশা করা যায়।
অন্যদিকে, বনায়ন ও ইকোসিস্টেমের ভারসাম্য কীভাবে সংরক্ষণ করা যায়, সে বিষয়ে জনগণকে প্রযুক্তিগত তথ্যের অবাধ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। এর ফলে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশের মানুষ স্মার্ট নাগরিকে পরিণত হবে। ভবিষ্যতে প্রযুক্তিগত জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে স্মার্ট নাগরিকরা পরিবেশ সংরক্ষণে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারবে।
‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গঠনে ‘স্মার্ট সরকারের’ গুরুত্বও বিবেচনায় আনতে হবে। সরকারের অধীনস্থ মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক জনগণকে নিরবচ্ছিন্ন সেবা প্রদানই স্মার্ট সরকারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। খাদ্য উৎপাদন, বাসস্থান, শিক্ষা, ব্যবসা, চিকিৎসা, ভূমি ক্রয়-বিক্রয়সহ সব সেবাই সরকার কর্তৃক জনগণকে কোনো ধরনের বাধা ব্যতীত সঠিক সময়ে পৌঁছে দিতে হবে। যদিও বর্তমান সরকারের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সেবা ডিজিটাল সিস্টেমে জনগণ কর্তৃক গৃহীত হচ্ছে; কিন্তু উন্নত দেশের তুলনায় তা অনেকটা কম। উদাহরণস্বরূপ, দক্ষ জনশক্তি তৈরি, দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, পরিবেশ সংরক্ষণে উন্নত প্রযুক্তি, আইন, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, পরিবহণ ও যোগাযোগ সেক্টরে উন্নয়নের গুরুত্ব আরও বাড়াতে হবে, যা স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরে সহায়ক হবে।
যদিও বাংলাদেশ সরকার ডিজিটাল সিস্টেমে উন্নত ও টেকসই সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সেবা নাগরিক কর্তৃক গৃহীত হলেই স্মার্ট সমাজের আবির্ভাব হবে। অন্যদিকে জনগণকে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত আইনকানুনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও প্রযুক্তি দ্বারা সমাজের উন্নতি সাধনে অনবরত কাজ করে যেতে হবে। সরকার কর্তৃক প্রণীত কৃষি, মৎস্য, ভূমি, ভেজালবিহীন খাদ্য উৎপাদন ও পরিবেশ সংরক্ষণে প্রযুক্তিগত তথ্যের বাস্তব প্রয়োগই স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে। ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হবে।
সুতরাং, স্মার্ট বাংলাদেশ হবে পরিবেশবান্ধব, উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর, অর্থনৈতিকভাবে গতিশীল ও অবাধ তথ্যে সমৃদ্ধ টেকসই সমাজব্যবস্থা। স্মার্ট অর্থনীতিতে নতুন নতুন প্রযুক্তি, প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্য, টেকসই ও উন্নত সমাজব্যবস্থা দেখা যাবে। স্মার্ট অর্থনীতি, পরিবেশবান্ধব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য উৎপাদন ও জলবায়ু পরিবতর্নে সুষ্ঠু বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে। অন্যদিকে, ক্যাশলেস ক্রয়-বিক্রয়ও স্মার্ট অর্থনীতির চাকাকে ত্বরান্বিত করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে। উন্নত দেশের দিকে তাকালে দেখা যায়, ক্রয়-বিক্রয়, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ফি প্রদানসহ সবকিছু ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়ে থাকে। স্মার্ট বাংলাদেশে প্রবেশে, ক্যাশলেস ক্রয়-বিক্রয় অর্থাৎ অনলাইনে ডেবিট/ক্রেডিট কার্ডে ক্রয়-বিক্রয় বাড়াতে হবে। পরিশেষে বলা যায়, স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সমাজব্যবস্থা একে অপরের পরিপূরক। সরকার, স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে সচেতন হলেও জনগণের সাহায্য ছাড়া কখনো স্মার্ট দেশে রূপান্তর সম্ভব নয়। পরিবেশ সংরক্ষণকে প্রাধান্য দিয়ে উন্নত ও টেকসই প্রযুক্তিই বাংলাদেশকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ রূপান্তর করতে পারে।
ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম : অধ্যাপক, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর
uzzal@bsmrau.edu.bd