দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল
আলোচনার সুযোগ এখনো আছে
বুধবার যে তফশিল ঘোষিত হলো, আমার কাছে মনে হয় এর একটা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা ছিল এবং সেই সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার অংশ হিসাবেই এটা ঘোষিত হয়েছে। ঘোষণার সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার চলমান বাস্তবতার আলোকে নিজস্ব ব্যাখ্যা দিয়েছেন এবং তিনি তার প্রত্যাশার কথাটা বলেছেন। চলমান যে রাজনৈতিক বিভাজন, সেটার কথাও তিনি উল্লেখ করেছেন এবং আশা করেছেন, এখন আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এবং সবার অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে একটা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। তাদের প্রচেষ্টা সার্থক হবে, এ প্রত্যাশার কথাও তিনি বলেছেন। তবে এখনকার যে বাস্তবতা সেটা হচ্ছে, কোনো কোনো বড় রাজনৈতিক দল একে স্বাগত জানিয়েছে। আবার অনেকে সেটা বর্জন করেছে কিংবা গ্রহণ করেননি। এক্ষেত্রে বিষয়টা পরিষ্কার যে, এখানে একটা বড় ধরনের বিভাজন আছে এবং সেই বিভাজনটা বিভিন্ন স্তরের বলে মনে হচ্ছে আমার কাছে।
নির্বাচনসংক্রান্ত বিষয়ে যেমন, তেমনই আমাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ব্যাপারেও কিন্তু কোনো সহমত আমরা দেখতে পাইনি। কাজেই এ বাস্তবতার আলোকে আমার মনে হয়, সবাই মিলে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে, সবার অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে নির্বাচন যদি করা যায়, তাহলে সেটা আমাদের জন্য মঙ্গলজনক হবে। জাতি হিসাবে আমরা যে জায়গায় আছি, বৈশ্বিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে সরকার গঠিত হবে, সেই সরকারকেই কিন্তু এখনকার অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে হবে। এ ছাড়া ২০২৬ সালে আমরা যে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যাব, তখন বড় ধরনের একটা চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে এবং সেই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করার জন্য শুধু বাইরে নয়, দেশের অভ্যন্তরীণ অনেকগুলো সংস্কার আমাদের করতে হবে। ওই ধরনের বড় ধরনের সংস্কার করতে গেলেও প্রধান অংশীদার যারা আছেন, অর্থাৎ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য অংশীদার যারা আছেন, তাদের মধ্যেও সহমর্মিতার প্রয়োজন হবে। কাজেই সেই চ্যালেঞ্জগুলোর দিকে লক্ষ রেখে হলেও আমার ধারণা, এ নির্বাচন থেকেই সেই প্রক্রিয়াটা শুরু হওয়া বাঞ্ছনীয় হবে। এর কারণ হলো, এখন যদি সহমতের ভিত্তিতে একটা সর্বজনগ্রাহ্য, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করা না হয়, তাহলে এই রাজনৈতিক বিভাজনটা চলতেই থাকবে। রাজনৈতিক বিভাজনের মধ্য দিয়ে বড় ধরনের সংস্কার করাটা বেশ চ্যালেঞ্জের হতে পারে বলে আশঙ্কা করি। আমাদের রাজনীতিকে সঠিক ও শান্তিপূর্ণ রাখার জন্য এর গুরুত্ব আছে।
বৈশ্বিক যে সম্পর্ক আমাদের আছে, তার জন্যও এ নির্বাচনটা নিয়ে আমাদের ভাবতে হচ্ছে। কাজেই আমি মনে করি, তফশিল ঘোষিত হলেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো আলোচনার সুযোগ আছে এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার সেটা প্রত্যাশাও করছেন। আমিও তার সঙ্গে একমত হয়ে বলতে চাই, এখনো সুযোগ আছে এবং সবার অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে একটা সুস্থ, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন যদি আমরা করতে পারি, তাহলে সেটা বৈশ্বিকভাবে গ্রহণযোগ্য হবে এবং এতে আমাদের ভাবমূর্তি উন্নত হবে। যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিয়ে আমরা গর্ববোধ করি, সেটাও চালু থাকবে এবং এর মধ্য দিয়ে আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতি অব্যাহত রাখা সম্ভব হবে।
এম হুমায়ুন কবির : সাবেক রাষ্ট্রদূত
আলোচনার সুযোগ এখনো আছে
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল
এম হুমায়ুন কবির
১৭ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
বুধবার যে তফশিল ঘোষিত হলো, আমার কাছে মনে হয় এর একটা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা ছিল এবং সেই সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার অংশ হিসাবেই এটা ঘোষিত হয়েছে। ঘোষণার সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার চলমান বাস্তবতার আলোকে নিজস্ব ব্যাখ্যা দিয়েছেন এবং তিনি তার প্রত্যাশার কথাটা বলেছেন। চলমান যে রাজনৈতিক বিভাজন, সেটার কথাও তিনি উল্লেখ করেছেন এবং আশা করেছেন, এখন আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এবং সবার অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে একটা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। তাদের প্রচেষ্টা সার্থক হবে, এ প্রত্যাশার কথাও তিনি বলেছেন। তবে এখনকার যে বাস্তবতা সেটা হচ্ছে, কোনো কোনো বড় রাজনৈতিক দল একে স্বাগত জানিয়েছে। আবার অনেকে সেটা বর্জন করেছে কিংবা গ্রহণ করেননি। এক্ষেত্রে বিষয়টা পরিষ্কার যে, এখানে একটা বড় ধরনের বিভাজন আছে এবং সেই বিভাজনটা বিভিন্ন স্তরের বলে মনে হচ্ছে আমার কাছে।
নির্বাচনসংক্রান্ত বিষয়ে যেমন, তেমনই আমাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ব্যাপারেও কিন্তু কোনো সহমত আমরা দেখতে পাইনি। কাজেই এ বাস্তবতার আলোকে আমার মনে হয়, সবাই মিলে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে, সবার অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে নির্বাচন যদি করা যায়, তাহলে সেটা আমাদের জন্য মঙ্গলজনক হবে। জাতি হিসাবে আমরা যে জায়গায় আছি, বৈশ্বিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে সরকার গঠিত হবে, সেই সরকারকেই কিন্তু এখনকার অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে হবে। এ ছাড়া ২০২৬ সালে আমরা যে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যাব, তখন বড় ধরনের একটা চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে এবং সেই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করার জন্য শুধু বাইরে নয়, দেশের অভ্যন্তরীণ অনেকগুলো সংস্কার আমাদের করতে হবে। ওই ধরনের বড় ধরনের সংস্কার করতে গেলেও প্রধান অংশীদার যারা আছেন, অর্থাৎ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য অংশীদার যারা আছেন, তাদের মধ্যেও সহমর্মিতার প্রয়োজন হবে। কাজেই সেই চ্যালেঞ্জগুলোর দিকে লক্ষ রেখে হলেও আমার ধারণা, এ নির্বাচন থেকেই সেই প্রক্রিয়াটা শুরু হওয়া বাঞ্ছনীয় হবে। এর কারণ হলো, এখন যদি সহমতের ভিত্তিতে একটা সর্বজনগ্রাহ্য, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করা না হয়, তাহলে এই রাজনৈতিক বিভাজনটা চলতেই থাকবে। রাজনৈতিক বিভাজনের মধ্য দিয়ে বড় ধরনের সংস্কার করাটা বেশ চ্যালেঞ্জের হতে পারে বলে আশঙ্কা করি। আমাদের রাজনীতিকে সঠিক ও শান্তিপূর্ণ রাখার জন্য এর গুরুত্ব আছে।
বৈশ্বিক যে সম্পর্ক আমাদের আছে, তার জন্যও এ নির্বাচনটা নিয়ে আমাদের ভাবতে হচ্ছে। কাজেই আমি মনে করি, তফশিল ঘোষিত হলেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো আলোচনার সুযোগ আছে এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার সেটা প্রত্যাশাও করছেন। আমিও তার সঙ্গে একমত হয়ে বলতে চাই, এখনো সুযোগ আছে এবং সবার অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে একটা সুস্থ, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন যদি আমরা করতে পারি, তাহলে সেটা বৈশ্বিকভাবে গ্রহণযোগ্য হবে এবং এতে আমাদের ভাবমূর্তি উন্নত হবে। যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিয়ে আমরা গর্ববোধ করি, সেটাও চালু থাকবে এবং এর মধ্য দিয়ে আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতি অব্যাহত রাখা সম্ভব হবে।
এম হুমায়ুন কবির : সাবেক রাষ্ট্রদূত
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023