দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল
ইসির বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন আছে
দেশের একজন জ্যেষ্ঠ নাগরিক হিসাবে নির্বাচন কমিশনের তফশিল ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এটা আসলে কি নির্বাচন হচ্ছে, নাকি নির্বাচন নির্বাচন খেলা হচ্ছে? আমরা যদি আইনগত সংজ্ঞা দেখি, আইনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ডিকশনারি হলো বিকল্পের মধ্য থেকে বেছে নেওয়া। তো যেখানে কোনো বিকল্প নেই, সেখানে কোনো নির্বাচন হতে পারে না। এখানে দেখা যাচ্ছে যে, এটি একতরফা নির্বাচন হবে। যেটা মনে হচ্ছে, এখানে জাতীয় পার্টি একমাত্র বিকল্প। চয়েজের বিচারে জাতীয় পার্টি তো আওয়ামী লীগের বিকল্প নয়। আপনাকে যদি এক গ্লাস মিনারেল ওয়াটার এবং এক গ্লাস ট্যাপের পানি দেওয়া হয়, তাহলে তা বিকল্প হতে পারে না। সেখানে আপনি কোনোভাবেই ট্যাপের পানি বেছে নেবেন না। যদি এক গ্লাস মিনারেল ওয়াটারের সঙ্গে এক গ্লাস সিদ্ধ পানি দেওয়া হয়, তাহলে আপনি বেছে নেওয়ার সুযোগ পাবেন। কারণ এখানে দুটোই নিরাপদ পানি। কাজেই সব দলের অংশগ্রহণ ছাড়া এটাকে কোনোভাবেই নির্বাচন বলা চলে না। আইনি সংজ্ঞা অনুযায়ী এটা কোনোভাবেই নির্বাচন নয়।
তাছাড়া যে নির্বাচন কমিশন তফশিল ঘোষণা করেছে, এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই তো প্রশ্ন রয়েছে। নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য যখন সার্চ কমিটি গঠিত হয়, তখনই তো তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। এই নির্বাচন কমিশনের আইনগত বৈধতা নিয়েই তো প্রশ্ন রয়েছে। এখন দেখার বিষয় এই নির্বাচন কমিশন তার ম্যান্ডেট পূরণ করতে পারবে কি না। তার সাংবিধানিক ম্যান্ডেট হলো, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা এবং তা সম্পন্ন করা। এখন তো দেখা যাচ্ছে, মাঠের বিরোধী দল ও অন্যান্য দল নির্বাচনে অংশ নেবে না। তারা বলছে, নির্বাচনি পরিবেশ নেই। সেখানে এই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে কী করে? নির্বাচন কমিশনও তো কিছুদিন আগে একই কথা বলেছিল যে, নির্বাচনি পরিবেশ নেই।
তাছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নও কিছুদিন আগে বলেছে, তারা পর্যবেক্ষক পাঠাবে না, কারণ এখানে নির্বাচনি পরিবেশ নেই। আমেরিকাও বারবার বলে আসছে, নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করতে হলে সংলাপের বিকল্প নেই। তাহলে কি নির্বাচন কমিশন গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ম্যান্ডেট পূরণ করতে পারবে? একটা বিষয় হচ্ছে যে, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, এবার সম্ভবত তেমনটি করা সম্ভব হবে না। কারণ জনগণ এখন অনেক সচেতন।
ম্যান্ডেট পূরণ না হলে পরিস্থিতি এমন অবস্থার দিকে ঠেলে দেওয়া হবে, যার ফলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাটা খাদের কিনারায় চলে যাবে। এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া দরকার এবং যারা অংশীজন আছে, তাদেরও করণীয় নির্ধারণ করা দরকার, যাতে এমন নির্বাচন হয়, যেখানে জনগণের আস্থার প্রতিফলন ঘটবে এবং জনগণের সম্মতির শাসন প্রতিষ্ঠা পাবে।
ড. বদিউল আলম মজুমদার : সম্পাদক, সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক)
ইসির বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন আছে
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল
ড. বদিউল আলম মজুমদার
১৭ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
দেশের একজন জ্যেষ্ঠ নাগরিক হিসাবে নির্বাচন কমিশনের তফশিল ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এটা আসলে কি নির্বাচন হচ্ছে, নাকি নির্বাচন নির্বাচন খেলা হচ্ছে? আমরা যদি আইনগত সংজ্ঞা দেখি, আইনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ডিকশনারি হলো বিকল্পের মধ্য থেকে বেছে নেওয়া। তো যেখানে কোনো বিকল্প নেই, সেখানে কোনো নির্বাচন হতে পারে না। এখানে দেখা যাচ্ছে যে, এটি একতরফা নির্বাচন হবে। যেটা মনে হচ্ছে, এখানে জাতীয় পার্টি একমাত্র বিকল্প। চয়েজের বিচারে জাতীয় পার্টি তো আওয়ামী লীগের বিকল্প নয়। আপনাকে যদি এক গ্লাস মিনারেল ওয়াটার এবং এক গ্লাস ট্যাপের পানি দেওয়া হয়, তাহলে তা বিকল্প হতে পারে না। সেখানে আপনি কোনোভাবেই ট্যাপের পানি বেছে নেবেন না। যদি এক গ্লাস মিনারেল ওয়াটারের সঙ্গে এক গ্লাস সিদ্ধ পানি দেওয়া হয়, তাহলে আপনি বেছে নেওয়ার সুযোগ পাবেন। কারণ এখানে দুটোই নিরাপদ পানি। কাজেই সব দলের অংশগ্রহণ ছাড়া এটাকে কোনোভাবেই নির্বাচন বলা চলে না। আইনি সংজ্ঞা অনুযায়ী এটা কোনোভাবেই নির্বাচন নয়।
তাছাড়া যে নির্বাচন কমিশন তফশিল ঘোষণা করেছে, এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই তো প্রশ্ন রয়েছে। নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য যখন সার্চ কমিটি গঠিত হয়, তখনই তো তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। এই নির্বাচন কমিশনের আইনগত বৈধতা নিয়েই তো প্রশ্ন রয়েছে। এখন দেখার বিষয় এই নির্বাচন কমিশন তার ম্যান্ডেট পূরণ করতে পারবে কি না। তার সাংবিধানিক ম্যান্ডেট হলো, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা এবং তা সম্পন্ন করা। এখন তো দেখা যাচ্ছে, মাঠের বিরোধী দল ও অন্যান্য দল নির্বাচনে অংশ নেবে না। তারা বলছে, নির্বাচনি পরিবেশ নেই। সেখানে এই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে কী করে? নির্বাচন কমিশনও তো কিছুদিন আগে একই কথা বলেছিল যে, নির্বাচনি পরিবেশ নেই।
তাছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নও কিছুদিন আগে বলেছে, তারা পর্যবেক্ষক পাঠাবে না, কারণ এখানে নির্বাচনি পরিবেশ নেই। আমেরিকাও বারবার বলে আসছে, নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করতে হলে সংলাপের বিকল্প নেই। তাহলে কি নির্বাচন কমিশন গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ম্যান্ডেট পূরণ করতে পারবে? একটা বিষয় হচ্ছে যে, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, এবার সম্ভবত তেমনটি করা সম্ভব হবে না। কারণ জনগণ এখন অনেক সচেতন।
ম্যান্ডেট পূরণ না হলে পরিস্থিতি এমন অবস্থার দিকে ঠেলে দেওয়া হবে, যার ফলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাটা খাদের কিনারায় চলে যাবে। এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া দরকার এবং যারা অংশীজন আছে, তাদেরও করণীয় নির্ধারণ করা দরকার, যাতে এমন নির্বাচন হয়, যেখানে জনগণের আস্থার প্রতিফলন ঘটবে এবং জনগণের সম্মতির শাসন প্রতিষ্ঠা পাবে।
ড. বদিউল আলম মজুমদার : সম্পাদক, সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক)
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023