তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ এর বিশ্লেষণ
মরতুজা আহমদ
প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
২৮ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস। অবাধ তথ্যপ্রবাহ এবং তথ্যে সর্বজনীন প্রবেশাধিকার নিশ্চিতকরণের জন্য দিবসটি পালিত হয়।
বিশ্ববাসীর সঙ্গে আমরাও তা পালন করছি। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয়- “Good laws and Practices for open Societies : Powering Sustainable Development with Access to Information” বাংলায় আমরা বলছি :
‘মুক্ত সমাজের জন্য উত্তম আইন :
টেকসই উন্নয়নে তথ্যে অভিগমন।’
তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ নিঃসন্দেহে একটি উত্তম আইন। এহেন আইন প্রণয়ন বাংলাদেশের জন্য একটি যুগান্তকারী ঘটনা।
জনগণের ক্ষমতায়নে মাইলফলক। আইনটির অনন্য বৈশিষ্ট্য হল দেশের প্রচলিত অন্য সব আইনে কর্তৃপক্ষ জনগণের ওপর ক্ষমতা প্রয়োগ করে থাকে কিন্তু এ আইনে জনগণ কর্তৃপক্ষের ওপর ক্ষমতা আরোপ করে।
এটি একটি শক্তিশালী নাগরিকবান্ধব আইন। প্রকৃতই জনগণের আইন। সর্বজনীন আইন। শ্রেণীগত ভেদাভেদ নির্বিশেষে সর্বস্তরের নাগরিককে রাষ্ট্রের তথ্য পাওয়ার অধিকার দেয়।
আইনের ৪ ধারায় রয়েছে, “Subject to the provisions of this Act, every citizen shall have the right to information from the authority, and the authority shall, on demand from a citizen, be bound to provide him with the information.” এতে জনগণ আবশ্যিকভাবে তথ্য প্রাপ্তির শক্তিশালী আইনি ভিত্তি পেয়েছে।
আইনের শুরুই হয়েছে ‘তথ্যের অবাধ প্রবাহ এবং জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিতকরণের নিমিত্ত বিধান করিবার লক্ষ্যে প্রণীত আইন।’ এখানে ‘জনগণ’ শব্দটি সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ। কেননা বাংলাদেশ একটি প্রজাতন্ত্র, যার অর্থই হল জনগণের প্রাধান্য।
আইনটির মূল ভিত্তি সংবিধানের ৭ ও ৩৯ ধারা। সংবিধান মতে, জনগণ প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক। এই মালিকের ক্ষমতায়নে, ক্ষমতা সুসংহতকরণে সবার সর্বদা সচেষ্ট থাকাই একান্ত কাম্য।
ক্ষমতায়নের জন্য জনগণের তথ্য অধিকার তথা তথ্যে অভিগম্যতা নিশ্চিত করা একান্ত আবশ্যক। এতে সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থা এবং সরকারি ও বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত বেসরকারি সংস্থার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পাবে, দুর্নীতি হ্রাস পাবে ও সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে।
গণতন্ত্র সুসংহত হবে। প্রকৃতপক্ষে তথ্যের অধিকার ছাড়া সংবিধানে বর্ণিত নাগরিকের অন্যতম মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত চিন্তা, বিবেক, বাক ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা অকল্পনীয়। তথ্য অধিকার, তথ্যের আদান-প্রদান এর অবিচ্ছেদ্য অংশ।
তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ এর প্রস্তাবনায় বর্ণিত এ বিষয়গুলোই আইনের মূল দর্শন। আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব এই আইন প্রয়োগের মাধ্যমে।
সব উন্নয়ন কার্যক্রম, সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর তথ্য জনগণকে জানাতে হবে, জনগণের এসব অধিকারের তথ্য দেয়া বাধ্যতামূলক। তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে সমাজের অবহেলিত, পিছিয়ে পড়া, সুবিধাবঞ্চিত, ঝুঁকির্পূণ, অরক্ষিত ও প্রান্তিক জনগণের ন্যায্য অধিকার আদায় নিশ্চিত করে তাদের প্রকৃত উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব।
তাই তথ্য অধিকারকে বলা হয় Right of all Rights. এটি সংবিধানের ১৫ অনুচ্ছেদ পূরণের পূর্বশর্ত। তথ্য অধিকার আইনটি সর্বজনীন, ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করে, জনগণকে সব কাজে অংশগ্রহণের অধিকার দেয়, উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় নিয়ে আসে।
আইনটি জনগণের ক্ষমতায়নের প্রকৃত হাতিয়ার। এটি প্রকৃতই একটি উৎকৃষ্ট আইন যা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ও সংবিধানের মূল চেতনারই প্রতিফলন।
তথ্যই শক্তি আর তথ্যে প্রবেশাধিকার ক্ষমতায়ন, জনগণের ক্ষমতায়ন। অন্যদিকে সংবিধানের ২১(২) মতে, প্রজাতন্ত্রের কাজে নিয়োজিত প্রত্যেক ব্যক্তির কর্তব্য জনগণের সেবার চেষ্টা করা। বিশ্বব্যাপী কর্তৃপক্ষের শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হয়েছে।
বলা যায় paradigm shift হয়েছে। নাগরিকের সঙ্গে আচরণের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, সততা, কর্তব্যনিষ্ঠা, দ্রুত ও নির্ঝঞ্ঝাট সেবা নিশ্চিতকরণের বিষয়গুলোকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হচ্ছে।
আমাদের দেশের প্রতিটি কর্তৃপক্ষকে অচঅ (Annual Performance Agreement), NIS (National Integrity Strategy), Citizen Charter, Grievance Redress System (GRS), One stop service, Innovation, Digital Bangladesh এর চর্চা করতে হচ্ছে।
এসব কাজে সফলতার পূর্বশর্ত হল অবাধ তথ্যপ্রবাহ ও তথ্যে অভিগম্যতা নিশ্চিতকরণ। আইনটির ৩(ক) ও (খ) এবং ৬ (২) ধারার মাধ্যমে তথ্য প্রদানে সব বাধা অপসারণ করা হয়েছে।
আইনের মাধ্যমে প্রথমত, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, অতঃপর আপিল কর্মকর্তা ও সবশেষে তথ্য কমিশনে অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি করা হয়েছে। তথ্য চেয়ে না পাওয়ার কারণে দায়ী ব্যক্তিকে জরিমানা, ক্ষতিপূরণের আদেশ করে বিভাগীয় মামলা রুজুর সুপারিশ করার বিধান রাখা হয়েছে।
তাই তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় এটি একটি অসাধারণ পদক্ষেপ যা আইনটিকে শক্তিশালী করেছে।
বিশ্বব্যাপী টেকসই উন্নয়নের সব পদক্ষেপে অবাধ তথ্যপ্রবাহ ও তথ্যে অভিগম্যতার গুরুত্ব বিশেষভাবে প্রতিভাত হচ্ছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। জাতিসংঘ ঘোষিত সহস াব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) অর্জনে বাংলাদেশ প্রশংসনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। এটি বলা অত্যুক্তি হবে না যে, দারিদ্র্য বিলোপ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নারী উন্নয়নে, জেন্ডার সমতা অর্জনে, খাদ্য নিরাপত্তা, শিশুমৃত্যু, মাতৃমৃত্যুর হার কমানো ইত্যাদি সব ক্ষেত্রে তথ্যের অবাধ প্রবাহ, জনগণের তথ্যে প্রবেশাধিকার তথা তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।
জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ‘২০৩০ এজেন্ডা’, কাউকে পেছনে ফেলে নয়, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন, সমাজের সর্বক্ষেত্রে অসমতা নিরসন। বৃদ্ধ, অসহায়, হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর ক্ষুধা ও দারিদ্র্য নির্মূল করে তাদের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করা। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি কমানোসহ সম্পদের টেকসই ব্যবহার, সুশাসন ও গণতন্ত্র সুসংহতকরণ, টেকসই উন্নয়নের জন্য শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ ব্যবস্থার প্রচলন, সবার জন্য ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথ সুগম করা এবং সব স্তরে কার্যকর জবাবদিহিতাপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান বিনির্মাণ- এগুলোই টেকসই উন্নয়নের অভীষ্ট। অন্যদিকে মুক্ত সমাজ বলতে যেখানে জনসাধারণের মৌলিক স্বাধীনতা (যেমন- চিন্তা, বিবেক, বাক ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা, প্রেসের স্বাধীনতা ইত্যাদি), মানবসত্তার মর্যাদা ও মূল্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার, আইনের শাসন, সমতা, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার, ভোটাধিকার ইত্যাদি নিশ্চিত হবে। এসব লক্ষ্য অর্জনে সর্বাগ্রে বিবেচ্য তথ্যে অভিগম্যতা। শহর, গ্রাম, বস্তি, হাওর, পাহাড়, উপকূল নির্বিশেষে সর্বত্রই, সব ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণীর নিরাপত্তা সুরক্ষা প্রদানের মাধ্যমে তাদের জীবনমান উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ এবং সর্বত্র অসমতা, বৈষম্য ও বঞ্চনার অবসানকল্পে তথ্য অধিকার আইনের প্রয়োগ ও অনুশীলন হবে একটি বিশেষ হাতিয়ার। আইনটির একটি সর্বজনীন রূপ রয়েছে যা টেকসই উন্নয়নের পরিপূরক।
জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের ১৬.১০ লক্ষ্যমাত্রাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ‘জাতীয় আইন ও আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী জনসাধারণের তথ্য অধিকার নিশ্চিত করা ও মৌলিক স্বাধীনতার সুরক্ষাদান।’ এ লক্ষ্যমাত্রার কর্মসম্পাদন পরিমাপকল্পে প্রস্তাবিত বৈশ্বিক সূচক (১৬.১০.২) হল জনসাধারণের তথ্যে অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সাংবিধানিক এবং/অথবা নিশ্চয়তামূলক নীতিমালা গ্রহণ ও বাস্তবায়নকারী দেশের সংখ্যা। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বৈশ্বিক সূচকের নিরিখে বাংলাদেশের অবস্থান সমপর্যায়ের অনেক দেশের তুলনায় অগ্রগামী। আমাদের সংবিধান জনসাধারণের তথ্য অধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার সুরক্ষাদানে একটি বিশাল রক্ষাকবচ। সংবিধানের এই চেতনায় ঋদ্ধ আমাদের তথ্য অধিকার আইন। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের ১৬.১০ লক্ষ্যমাত্রা পূরণের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। এটি শুধু এসডিজি ১৬.১০-এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক নয়, এসডিজির অন্য সব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য প্রাসঙ্গিক, সহায়ক ও অপরিহার্য বললে ভুল হবে না। এ আইন প্রয়োগের মাধ্যমে সরকার, গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজ প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী হবে এবং টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের সব লক্ষ্যমাত্রা পূরণে অত্যন্ত নিবিড়ভাবে মনিটর করতে পারবে।
বাংলাদেশে ‘তথ্য অধিকার আইন’ প্রণয়ন করে জাতিসংঘের সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্র (UDHR) এবং নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের আন্তর্জাতিক চুক্তি (ICPPR) অনুযায়ী জনসাধারণের তথ্য অধিকার নিশ্চিত করেছে এবং মৌলিক স্বাধীনতার সুরক্ষা দান করেছে যা আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে এবং ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।
তথ্যের অবাধ প্রবাহ এবং জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিতকরণে সরকারি প্রচেষ্টা বা উদ্যোগ প্রশংসনীয়। ২০০৯ সালে এ আইন প্রণয়নের সঙ্গে সঙ্গে এর বাস্তবায়নকল্পে স্বাধীন ও শক্তিশালী তথ্য কমিশন গঠিত হয়েছে এবং তথ্য অধিকার বাস্তবায়ন নিশ্চিতকরণে কৌশলপত্র প্রণয়নসহ অনেক পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে। আইনের বাস্তবায়ন মনিটরিং ও পরিবীক্ষণের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কেন্দ্র থেকে উপজেলা পর্যন্ত চার স্তরে শক্তিশালী কমিটি গঠন করেছে। তথ্য অধিকার আইন প্রণয়নোত্তর সময়ে আমাদের গণমাধ্যম অবাধ, বিস্তৃত ও কর্মচঞ্চল হয়েছে। আমরা জানি অবাধ তথ্যপ্রবাহের জন্য প্রয়োজন ইন্টারনেটের ব্যাপক বিস্তৃতি ও সহজলভ্যতা। এ লক্ষ্যে বর্তমান সরকার বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। জনগণের দোরগোড়ায় তথ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে দেশের সব জেলা, উপজেলায় ইন্টারনেটের মাধ্যমে সমন্বিত নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ মোবাইল নেটওয়ার্কে প্রভূত উন্নতি সাধন করে প্রবেশ করে 4G যুগে। এরই মধ্যে দেশ আরও দ্রুতগতির ইন্টারনেটে 5G সেবা কিভাবে পাওয়া যায় সেই প্রচেষ্টার পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে।
তথ্য কমিশন তথ্য অধিকার বাস্তবায়নে জনসচেতনতামূলক বিশেষ কার্যক্রম, তথ্য প্রদানকারীদের দক্ষতা উন্নয়নে নিয়মিত অনলাইন ও অফলাইন প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ছাড়াও সুশীল সমাজের অনেকেই দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। এবার সারা দেশে কেন্দ্রে, জেলায়, উপজেলায় আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস ২০১৮ উদযাপনের জন্য নানাবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। তথ্য কমিশন জনগণের তথ্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকারবদ্ধ। এসব উদ্যোগের ফলে তথ্যাধিকারে বিভিন্ন ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে, স্বচ্ছতা, গতিশীলতা বাড়ছে। সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো শত বছরের গোপনীয়তার সংস্কৃতির কঠিন বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে আসছে। এখানেই আইনটির উপযোগিতা ও উৎকর্ষ প্রতিভাত হচ্ছে।
মরতুজা আহমদ : প্রধান তথ্য কমিশনার
