Logo
Logo
×

দশ দিগন্ত

রাজার নয় থাইল্যান্ড সাধারণ জনগণের

সরকারবিরোধী বিক্ষোভ, ব্যাংককে ‘পিপলস ফলক’ স্থাপন

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

রাজার নয় থাইল্যান্ড সাধারণ জনগণের

ছবি: সংগৃহীত

থাইল্যান্ডে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা দেশটির রাজতন্ত্রকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। রাজধানী ব্যাংককের গ্রান্ড প্যালেসের কাছে ‘পিপলস ফলক’ নামে একটি ফলক স্থাপন করেছে তারা। এ সময় সেখানে ঘোষণা দেয়া হয়, ‘থাইল্যান্ডের মালিক জনগণ’। ২০ সেপ্টেম্বর রোববারের সকালে স্থাপন করা ফলকটিতে থাই ভাষায় লেখা হয়, ‘জনগণ এই মনোভাব প্রকাশ করছে, এই দেশের মালিক জনগণ; রাজা নয়।’

বিক্ষোভের আয়োজকরা বলছেন, এই ফলক হচ্ছে ২০০৭ সালে হারিয়ে যাওয়া আরেকটি ফলকের স্থলাভিষিক্ত; যেটি থাইল্যান্ডের নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্র বিলোপের দাবিতে ১৯৩০ সালে স্থাপন করা হয়েছিল।

বিষয়টিকে রাজতন্ত্রবিরোধী সাহসী পদক্ষেপ এবং থাই রাজা মাহা ভার্জিরালংকর্নের জন্য সর্বশেষ চ্যালেঞ্জ বলে মনে করা হচ্ছে। বিবিসি।

জুলাই মাস থেকেই থাইল্যান্ডে রাজতন্ত্র ও রাজনৈতিক পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে ছাত্রদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ চলে আসছে। এর মধ্যে সপ্তাহের শেষের দিন তথা শনিবারের বিক্ষোভকে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

অনেকে রোববার ছত্রভঙ্গ করে দেয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চালিয়ে গেছেন। শুধু তাই নয়, কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের দাবিতে পরিবর্তন আনার যে দাবি করছিল সেটির প্রতিও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।

তারা যে রাজতন্ত্রের সংস্কারের দাবি করছে, সে রাজতন্ত্রকে থাইল্যান্ডে খুবই স্পর্শকাতর হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং রাজতন্ত্রের সমালোচনার জন্য দেশটিতে কয়েক বছরের জেলের মতো কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।

প্রতিবাদকারীদের আরেকটি দাবি হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান ওচার পদত্যাগ। তিনি ২০১৪ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন এবং গত বছর প্রশ্নবিদ্ধ এক নির্বাচনে জয়ী হন।

এছাড়া নতুন সংবিধান রচনা করা এবং সমালোচকদের হয়রানি বন্ধ করার দাবিও ছিল বিক্ষোভকারীদের। থাইল্যান্ডে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অস্থিরতা রয়েছে।

কিন্তু গত ফেব্রুয়ারি মাসে আদালত নতুন একটি গণতন্ত্রপন্থী দল ফিউচার ফরওয়ার্ড পার্টি (এফএফপি) ভেঙে দেয়ার আদেশ দেয়ার পর রাজনৈতিক অস্থিরতা তীব্র আকার ধারণ করে। এই দলটি তরুণ প্রজন্মের কাছে অনেক জনপ্রিয় এবং নতুন দল হয়েও পার্লামেন্ট নির্বাচনে তৃতীয় সর্বোচ্চ আসন অর্জন করেছে ২০১৯ সালে।

রাজতন্ত্রবিরোধী থাইল্যান্ডের বর্তমান বিক্ষোভ আগের যে কোনো বিক্ষোভ প্রতিবাদের চেয়ে ভিন্ন। গত মাসে আন্দোলনকারী রাজতন্ত্রের সংস্কারে ১০ দফা দাবি তুলে ধরে। এ দাবি পাঠকারী প্যানুচায়া বলেছিলেন, তারা রাজতন্ত্র বিলোপের দাবি করছেন না; বরং তারা একে আধুনিকীকরণের দাবি করছেন।

কিন্তু তার পরই তাদের ‘চাং চার্ট’ বা জাতিবিদ্বেষী হিসেবে তুলে ধরলে পরিস্থিতি খারাপের দিকে চলে যায়। উল্লেখ্য, থাইল্যান্ডে রাজাকে পূজনীয় হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ-অবমাননার অধিকার কারও নেই।

থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং গোলযোগের ঘটনা নতুন নয়। কিন্তু এই নতুন আন্দোলন শুরু হয়েছে গত ফেব্রুয়ারিতে, যখন সে দেশের আদালত একটি নবগঠিত গণতন্ত্রপন্থী রাজনৈতিক দলকে বিলুপ্ত করার রায় দেন। ছাত্রনেতারা রাজপ্রাসাদের মাঠে ফলক বসিয়ে দিচ্ছেন। আকস্মিক জনসভা আয়োজনে চুপসানো মুরগি আর ইঁদুরের গান- থাই তরুণদের বিক্ষোভের সৃজনশীলতা।

ফিউচার ফরোয়ার্ড পার্টি (এফএফপি) থাই তরুণ এবং প্রথমবারের ভোটদাতাদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয় ছিল। গত বছর মার্চের নির্বাচনে দলটি সংসদের তৃতীয় বৃহত্তম দলে পরিণত হয়েছিল।

ওই নির্বাচনেই সামরিক অধিনায়করা নির্বাচিত হন। কিন্তু জুনে একজন জনপ্রিয় গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকারী ওয়ানচালরাম সাকসাতসিত প্রতিবেশী দেশ ক্যাম্বোডিয়া থেকে গুম হওয়ার পর বিক্ষোভ আবারও দানা বাঁধতে শুরু করে।

থাইল্যান্ডে অভ্যুত্থানের পর থেকে মি. ওয়ানচালরাম সেখানে নির্বাসিত জীবনযাপন করছিলেন।

তিনি এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, তার অপহরণের পেছনে থাই রাষ্ট্রযন্ত্রের হাত রয়েছে। কিন্তু সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

থাই

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম