মিয়ানমারে মুক্তিপণের লোভে গ্রেফতার করছে জান্তা
৩ লাখ ৩৩ হাজার ৫০০ বাস্তচ্যুত
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে জাতিগত সংখ্যালঘু বিদ্রোহীদের লড়াই বাড়ছে। এরই মধ্যে মুক্তিপণের লোভে বেসামরিক নাগরিকদের গ্রেফতার করছে সেনারা। স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, রাখাইনের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগে সম্প্রতি ১১ জন ধনাঢ্য ব্যবসায়ীকে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য আটক করেছে সেনারা। পরিবারের সদস্যারা বলছেন, ১৩ নভেম্বর রাথেদাউং টাউনশিপের ডোনেপাইক এবং চেইনকালাইন অঞ্চলে এএ বর্ডার গার্ড পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার পর সেনারা ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করে। আটকদের মধ্যে স্বর্ণের দোকানের মালিক, জ্বালানি পরিবেশক ও নির্মাণ কর্মকর্তারা রয়েছেন। তাদের রাখাইন রাজ্যের তাংগুপ শহরের লাইট ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন ৫৪৪-এ রাখা হয়েছে।
বন্দিদের পরিবারের এক ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, সেনারা তাদের অপহরণ করেছে সম্পূর্ণ মুক্তিপণ আদায়ের জন্য। এছাড়াও আরও অনেক বেসামরিক নাগরিককে গ্রেফতার করেছে জান্তা। সূত্রটি মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতিকে জানিয়েছে, পরিবারের সদস্যদের জানানো হয়েছিল-প্রত্যেক বন্দির জন্য ৩০ মিলিয়ন কিয়াট (প্রায় ৯ হাজার মার্কিন ডলার) মুক্তিপণ দিলে তাদের মুক্তি দেওয়া হবে। কিন্তু সদস্যরা এ দাবি মেনে নিতে অস্বীকার করেছেন। তাংগুপে এখন কোনো লড়াই নেই। তবে উত্তেজনা চলছে। জনসাধারণের উদ্বেগ বাড়ছে। কারণ রাখাইনে নতুন করে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে জান্তা বাহিনীর হাতে বেসামরিক নাগরিকদের গ্রেফতারের ঘটনা বেড়েছে। সেনারা এখন পর্যন্ত তাংগুপ, থান্ডওয়ে, সিত্তওয়ে, মংডু, বুথিডাং, কিউকফিউ এবং অন্যান্য জনপদে ব্যবসায়ী মালিক, বণিক, ওয়ার্ড প্রশাসক, শিক্ষক ও ছাত্রসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে।
এএ বলেছে, জান্তার হাত থেকে ১২০ জন বেসামরিক নাগরিককে উদ্ধারের মাধ্যমে মঙ্গলবার প্রথম উদ্ধার অভিযান চালিয়েছে। এ অভিযানে প্রায় ৩০ জন সেনা নিহত হয়। আরও জানিয়েছে, বুধবারের অপারেশন চলাকালীন এএ শহরের তিনটি স্থানে মোতায়েন সেনাদের ওপর আক্রমণ করেছে। ১৮ জন সেনা হত্যা করেছে। ১৮ জন আহত হয়েছে। অস্ত্র ও গোলাবারুদও জব্দ করা হয়েছে। দ্বিতীয় উদ্ধার অভিযানে আরও ১০৪ জন বেসামরিক ব্যক্তিকে মুক্ত করেছে। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনারের মতে, অক্টোবর মাসের শেষ থেকে মিয়ানমারজুড়ে কমপক্ষে ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৫০০ বেসামরিক নাগরিক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ২৭ অক্টোবর উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যে অপারেশন ১০২৭ চালু হওয়ার পর থেকে কায়াহ, কাচিন ও রাখাইন রাজ্যে এবং সাগাইং, মান্দালে, তানিনথারি ও বাগো অঞ্চলেও লড়াই বৃদ্ধি পেয়েছে।
