Logo
Logo
×

টিউটোরিয়াল

এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতি

বাংলা দ্বিতীয়পত্র

Icon

উজ্জ্বল কুমার সাহা

প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০১৮, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

প্রভাষক, সেন্ট যোসেফ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়, মোহাম্মদপুর, ঢাকা

বাক্য

প্রশ্ন: বাক্য কাকে বলে? গঠন অনুসারে বাক্য কত প্রকার ও কী কী? আলোচনা কর।

উত্তর : বাক্য : যে সুবিন্যস্ত পদসমষ্টি বক্তার মনোভাব সম্পূর্ণ ও সঙ্গতভাবে প্রকাশ করে, সেই পদসমষ্টিকে বাক্য বলে। বাক্য হলো ভাষার প্রধান উপাদান। আর বাক্যের মৌলিক উপাদান হলো শব্দ। একাধিক পদ বা শব্দ নিয়ে বাক্য গঠিত হয়। যেমন : আকবর অতি অল্প বয়সেই ভারতের সম্রাট হয়েছিলেন। প্রদত্ত উদাহরণে সাতটি পদ সুবিন্যস্তভাবে ব্যবহৃত হয়ে সম্পূর্ণ অর্থ অভিব্যক্ত করেছে। অতএব এটি একটি বাক্য।

ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে, “যে পদ বা শব্দসমষ্টি দ্বারা কোন বিষয়ে বক্তার ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকটিত হয়; সে পদ বা শব্দসমষ্টিকে বাক্য বলে।”

তবে যে কোন পদসমষ্টি বাক্য নয়। একটি সার্থক বাক্য হতে হলে পদগুলোর মধ্যে পারস্পরিক অন্বয় এবং অর্থগত সম্পর্ক থাকতে হবে।

গঠন অনুসারে বাক্য তিন প্রকার-

ক) সরল বাক্য : যে বাক্যে একটিমাত্র কর্তা বা উদ্দেশ্য এবং একটিমাত্র সমাপিকা ক্রিয়া থাকে, তাকে সরল বাক্য বলে। যেমন-‘খোকা আজ স্কুলে গিয়েছে।’ এখানে ‘খোকা’ উদ্দেশ্য এবং ‘গিয়েছে’ একটি সমাপিকা ক্রিয়া। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ‘উদ্দেশ্য’ হলো ভাবের উদ্দিষ্ট বা অবলম্বন আর ‘সমাপিকা ক্রিয়া’ হলো কাজের সমাপ্তি জ্ঞাপক ভাব। যথা- বৃষ্টি হচ্ছে। তোমরা বাড়ি যাও।

খ) জটিল বাক্য : যে বাক্যে একটি প্রধান খণ্ডবাক্যের সঙ্গে এক বা একাধিক আশ্রিত বাক্য পরস্পর সাপেক্ষভাবে যুক্ত হয়; তাকে জটিল বাক্য বলে। এ বাক্যের আরেক নাম মিশ্র বাক্য। যেমন-‘যে পরিশ্রম করে, সে সুখ লাভ করে।’ এখানে আশ্রিত বাক্য ‘যে পরিশ্রম করে’ এবং প্রধান খণ্ড বাক্য ‘সে সুখ লাভ করে।’ এ দুটি বাক্য পরস্পর সম্পর্কিত হয়ে একটি অখণ্ড বাক্য গঠন করেছে। জটিল বাক্যে যে - সে; যারা - তারা; যিনি - তিনি; যখন - তখন; ইত্যাদি সাপেক্ষ সর্বনাম দ্বারা যুক্ত হয়।

গ) যৌগিক বাক্য : পরস্পর নিরপেক্ষ দুই বা ততোধিক সরল বা জটিল বাক্য যখন যুক্ত হয়ে একটি সম্পূর্ণ বা অখণ্ড বাক্য গঠন করে; তাকে যৌগিক বাক্য বলে। যৌগিক বাক্যের অন্তর্গত প্রত্যেকটি বাক্য এবং, ও, অথবা, অথচ, কিংবা, বরং, তথাপি প্রভৃতি অব্যয় যোগে সংযুক্ত হয়। যেমন- লোকটি ধনী, কিন্তু খুব কৃপণ। সে ভালো ফলাফল করতে চায়, কিন্তু পড়তে চায় না।

যৌগিক বাক্য একাধিক সরল অথবা জটিল বাক্যের সমন্বয়ে গঠিত হয়ে থাকে।

প্রশ্ন : অর্থ অনুসারে বাক্য কত প্রকার এবং কী কী? আলোচনা কর।

উত্তর : সকল বাক্যের অর্থ প্রকাশের রীতি এক নয়। তাই অর্থ প্রকাশের রীতি অনুযায়ী বাক্যকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-

ক) বর্ণনামূলক বাক্য : যে বাক্য দ্বারা সাধারণভাবে কোন কিছু বর্ণনা বা বিবৃত করা হয়; তাকে বর্ণনামূলক বাক্য বলে। বর্ণনামূলক বাক্যকে বিবৃতিমূলক বাক্য বলে। যথা- ‘বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ।’ বর্ণনামূলক বাক্যকে আবার স্বীকৃতি-জ্ঞাপক বা অস্তিবাচক এবং অস্বীকৃতি-জ্ঞাপক বা নেতিবাচক এ দুইভাগে ভাগ করা যায়।

খ) প্রশ্নবাচক বাক্য : যে বাক্য দ্বারা কোন কিছু জিজ্ঞাসা করা হয় বা জানতে চাওয়া হয় তাকে প্রশ্নবাচক বাক্য বলে। যেমন- তুমি কী পড়ছো? পরীক্ষা কেমন হলো? ইত্যাদি।

গ) আদেশ বা উপদেশমূলক বাক্য : যে বাক্য দ্বারা আদেশ, উপদেশ, অনুগ্রহ প্রভৃতির ভাব প্রকাশ পায়; তাকে আদেশ বা উপদেশসূচক বাক্য বলে। যথা-

আদেশ- এখনই পড়া শেষ করবে।

উপদেশ- মিথ্যা বলো না।

অনুগ্রহ- দয়া করে কলমটি দিন।

ঘ) প্রার্থনামূলক বাক্য : যে বাক্যে প্রার্থনার ভাব প্রকাশিত হয় তাকে প্রার্থনামূলক বাক্য বলে। যেমন- সুখী হও। বাংলাদেশ দীর্ঘজীবী হোক।

ঙ) বিস্ময় বা আবেগসূচক বাক্য : যে বাক্য দ্বারা বিস্ময় বা বিভিন্ন প্রকার আবেগ প্রকাশিত হয় তাকে বিস্ময় বা আবেগসূচক বাক্য বলে। যথা- বাহ! কী সুন্দর দৃশ্য।

এ ছাড়াও অর্থ অনুযায়ী আরও দুই প্রকার বাক্য পাওয়া যায়। যথা :

[চলবে]

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম