Logo
Logo
×

টিউটোরিয়াল

জেএসসি পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনা

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

Icon

তাহমিনা জামান

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০১৮, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সিনিয়র শিক্ষক, তালতলা মডেল উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ, তালতলা, ঢাকা

[পূর্বে প্রকাশিত অংশের পর]

অধ্যায়-৩ থেকে সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর দেওয়া হল।

প্রশ্ন-২ : এন্টিভাইরাস কী? সত্যিকারের ভাইরাস এবং কম্পিউটারে ছড়ানো ভাইরাসের মধ্যে কী মিল-অমিল আছে তা বর্ণনা কর।***

উত্তর : এন্টিভাইরাস- এনটিভাইরাস হল এক ধরনের কম্পিউটার প্রোগ্রাম যা কম্পিউটারকে ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা করে।

সত্যিকার ভাইরাস ও কম্পিউটার ভাইরাসের মিল-অমিল : সত্যিকারের ভাইরাস রোগজীবাণু বহনকারী- যার ফলে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি এবং ঠিকভাবে কাজ করতে পানি না। আর কম্পিউটার ভাইরাস এক ধরনের কম্পিউটার প্রোগ্রাম যার কারণে একটা কম্পিউটার ঠিক করে কাজ করতে পারে না। সত্যিকারের রোগজীবাণু বা ভাইরাস একজন মানুষ থেকে অন্য মানুষের কাছে গিয়ে তাকে আক্রান্ত করে। কম্পিউটার ভাইরাসও একটি কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সত্যিকারের ভাইরাস মানুষের শরীরে এলে বংশ বৃদ্ধি করে করে অসংখ্য ভাইরাসে পরিণত হয়। কম্পিউটার ভাইরাসও সেরকম। সত্যিকারের ভাইরাস মানুষের অজান্তে মানুষকে আক্রান্ত করে, কম্পিউটার ভাইরাসও সবার অজান্তে একটা কম্পিউটারের বাসা বাঁধে। সত্যিকারের ভাইরাস নির্মূলে আমাদের সচেতন থাকতে হয় এবং অসুস্থ হলে ওষুধ খেতে হয়, কম্পিউটার ভাইরাসের হাত থেকেও বাঁচতে আমাদের সচেতন থাকতে হয় এবং কম্পিউটারে এন্টিভাইরাস প্রোগ্রাম রাখতে হয়। এ সবই সাদৃশ্য, সত্যিকারের ভাইরাস এবং কম্পিউটারের ভাইরাসের মাঝে শুধু একটিই পার্থক্য, একটি প্রকৃতিতে আগে থেকে আছে, অন্যটি অর্থাৎ কম্পিউটার ভাইরাস- কিছু অসৎ সেগুলো ছড়িয়ে দিচ্ছে।

প্রশ্ন-৩ : কম্পিউটার হ্যাকিং কী? এটি একটি অনৈতিক কাজ-ব্যাখ্যা কর।**

উত্তর : কম্পিউটার হ্যাকিং- হ্যাকিং বলতে বুঝানো হয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বা ব্যবহারকারীর বিনা অনুমতিতে তার কম্পিউটার সিস্টেম বা নেটওয়ার্কে প্রবেশ করা।

হ্যাকিং একটি অনৈতিক কাজের ব্যাখ্যা- ইন্টারনেটে ঢুকে বিভিন্ন ওয়েবসাইট দেখা যায়। কিন্তু ওয়েবসাইটের নিজস্ব বা গোপন অংশগুলোতে ঢোকার প্রয়োজন নেই। যেখানে যেতে পারে ওয়েবসাইট সংশ্লিষ্ট নির্দিষ্ট মানুষজন যারা গোপন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে সেখানে প্রবেশ করে। তাদের সেখানে যাওয়ার অনুমতি নেই তারাও কিন্তু সেখানে ঢোকার চেষ্টা করতে পারে। পাসওয়ার্ড জানা না থাকলেও সেটিকে পাশ কাটিয়ে অনেক সময় কেউ ওয়েবসাইটের ভেতরে ঢুকে যায়, সেখানে ঢুকে সে কোনো কিছু স্পর্শ না করে বের হয়ে আসতে পারে, আবার কোনো কিছু পরিবর্তন করে বা নষ্ট করেও চলে আসতে পারে। যেহেতু এ কাজগুলো করা হয় নিজের ঘরে একটা কম্পিউটারের সামনে বসে এবং যেখান থেকে অনুপ্রবেশ হয় সেটি হয়তো লক্ষ মাইল দূরের কোনো জায়গা- অদৃশ্য একটি সাইবার জগৎ, লোকচক্ষুর আড়ালে, তাই সেটি ধরার উপায়ও থাকে না। এ প্রক্রিয়াটির নাম হচ্ছে হ্যাকিং এবং আজকাল নিয়মিতভাবে ওয়েবসাইট হ্যাকিং হচ্ছে যেটা সম্পূণরূপে অনৈতিক কাজ।

প্রশ্ন-৪ : কম্পিউটার ভাইরাস কী? তুমি কীভাবে বুঝবে তোমার কম্পিউটারটি ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে?**

উত্তর : কম্পিউটার ভাইরাস- ভাইরাস হচ্ছে এক ধরনের বিপত্তি সৃষ্টিকরী প্রোগ্রাম। দুষ্ট বুদ্ধির কিছু মানুষ এক ধরনের প্রোগ্রাম তৈরি করে ফ্লপি ডিস্কে দিয়ে দেয় বা নেটওয়ার্কে ছেড়ে দেয়, যা কম্পিউটারের স্বাভাবিক প্রোগ্রামগুলোর কাজ বিঘ্নিত করে। এ ধরনের প্রোগ্রামকেই ভাইরাস বলা হয়।

কম্পিউটারটি ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া যেভাবে বুঝা যাবে কম্পিউটারের মাধ্যমে সবসময় স্বাভাবিক কাজই পাওয়া যাবে। আর এটি অতিদ্রুত সব কাজ সম্পন্ন করবে। কিন্তু যদি এর স্বাভাবিকতা প্রদর্শিত না হয় তবে বুঝতে হবে যে, কম্পিউটারটি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। নিম্নে কম্পিউটারটি ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপর্গগুলো আলোচনা করা হল-

১. কম্পিউটারটি স্বাভাবিকের চেয়ে ধীরগতি হলে।

২. প্রোগ্রাম লোড হতে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেশি সময় লাগলে। ৩. ডিস্ক ও ফাইল নষ্ট হয়ে গেলে।

৪. ডিস্কের নাম পরিবর্তন হলে। ৫. অযৌক্তিক প্রমাদবার্তা প্রদর্শিত হলে।

এ ছাড়া আরও অনেক ধরনের অস্বাভাবিকতা দেখা দিতে পারে। এ ধরনের অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে বুঝতে হবে কম্পিউটার ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে।

- ভাইরাস আক্রান্ত ফাইল এবং ডিস্ক ভাইরাসমুক্ত করে ব্যবহার করা - কম্পিউটার যাতে ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হতে না পারে সে জন্য ভাইরাস প্রতিরোধী ব্যবস্থা গ্রহণ করা

- ভাইরাস অক্রান্ত পাইল এবং ডিস্ক ভাইরাসমুক্ত করা

- ভাইরাস প্রতিরোধ করার জন্য প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার পাওয়া যায়।

প্রশ্ন-৫ : ম্যালওয়্যার কী? ম্যালওয়্যারের প্রকারভেদ বর্ণনা কর।**

উত্তর : ম্যালওয়্যার- কম্পিউটারে অনুপ্রবেশকারী বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর সফটওয়্যারের সাধারণ নাম হল ম্যালওয়্যার।

ম্যালওয়্যারের প্রকারভেদ : প্রচলিত ও শনাক্তকৃত ম্যালওয়্যারগুলোর মধ্যে নিুোক্ত তিন ধরনের ম্যালওয়্যার সবচেয়ে বেশি দেখা যায়-

ক. কম্পিউটার ভাইরাস- কম্পিউটার ভাইরাস ও ওয়ার্মের মধ্যে আচরণগত পার্থক্যের চেয়ে সংক্রমণের পার্থক্যকেই বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। কম্পিউটার ভাইরাস হল এমন ধরনের ম্যালওয়্যার, যা কোনো কার্যকরী ফাইলের (Executable) সঙ্গে যুক্ত হয়। এখন ওই প্রোগ্রামটি (এক্সিকিউটাবল ফাইল) চালানো হয়, তখন ভাইরাসটি অন্যান্য কার্যকরী ফাইলে সংক্রমিত হয়।

খ. কম্পিউটার ওয়ার্ম : অন্যদিকে কম্পিউটার ওয়ার্ম সেই প্রোগ্রাম, যা কোনো নেটওয়ার্কে ছড়িয়ে পড়ে এবং অন্যান্য কম্পিউটারকেও সংক্রমিত করে। অর্থাৎ কম্পিউটার ভাইরাস ব্যবহারকারীরর হস্তক্ষেপ ছাড়া (অজান্তে হলেও) ছড়িয়ে পড়তে পারে না। যেমন, কোনো পেনড্রাইভে কম্পিউটার ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো ফাইল থাকলেই ত ছড়িয়ে পড়তে পারে না। যদি কোনো কম্পিউটারে সেই প্রেনড্রাইভ যুক্ত করে ব্যবহার করা হয় তা হলেই কেবল পেনড্রাইভের ভাইরাসটি সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে। অন্যদিকে ওয়ার্ম নিজে থেকেই নেটওয়ার্ক থেকে নেটওয়ার্কে ছড়িয়ে পড়ে এবং নেটওয়ার্কের কম্পিউটারকে আক্রান্ত করে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম