একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বাংলা প্রথমপত্র

 ড. সনজিত পাল 
১৬ নভেম্বর ২০১৯, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

শিক্ষক,

সেন্ট গ্রেগরী হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

আমার পথ

কাজী নজরুল ইসলাম

‘আমার পথ’ প্রবন্ধটি কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত প্রবন্ধগ্রন্থ ‘রুদ্র-মঙ্গল’ থেকে সংকলিত হয়েছে। প্রাবন্ধিক এখানে আত্ম-চেতনার আলোক বর্তিকা। তিনি নিজেই নিজের কর্ণধার। তিনি অকারণে কাউকে সমীহ করেন না। কোনো ভয়ের কাছে তিনি মাথা নত করেন না। নিজের চেনা পথ, চেনা বিশ্বাসেই তিনি চলেন। অকারণে কাউকে খুশি করতে তিনি বিনয় দেখাতেও রাজি নন। তিনি বিশ্বাস করেন নিজের আদর্শ ও সত্তাকে চিনলেই সব চেনা যায়। জাতির পরিবর্তন প্রসঙ্গে তিনি ভারতীয়দের পরনির্ভরশীল মানসিকতাকে দায়ী করেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন আত্মনির্ভর না হলে ভারতবাসী কখনোই স্বাধীন হবে না। এ প্রসঙ্গে তিনি মহাত্মাগান্ধীর উদাহরণ দিয়েছেন। ভারতবাসী নিজেরা নিষ্ক্রিয় থেকে শুধু মহাত্মাগান্ধীকে প্রাণপণে ভক্তি করলে ভারত কখনোই স্বাধীন হবে না। প্রাবন্ধিক আশা করেন ভারতের স্বাধীনতার জন্য ভারতবাসীকে আত্ম-চেতনার পথে নামতে হবে। উদ্দেশ্য ঠিক করে আত্ম-শক্তিতে বলীয়ান হয়ে ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে এগিয়ে যেতে পারলেই ভারত ভারতবাসীর হবে। এ জন্য তিনি এই ঘুণেধরা সমাজব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য নিজ হাতিয়ার নিজের সত্যকে, নিজের আদর্শকে আগুনের ঝাণ্ডার মতো ব্যবহার করতে চেয়েছেন। পচন ধরা সমাজে প্রলয় আনার দুর্দম সাহসিকতা একমাত্র তার সত্যের মধ্যেই রয়েছে। মিথ্যাই পারবে এ সত্যকে নিভাতে। যেহেতু প্রাবন্ধিক মিথ্যাকে ত্যাগ করেছেন, তাই তার আগুনের ঝাণ্ডা নেভানোর ক্ষমতা কারও নেই। তিনি বিশ্বাস করেন নিজের ধর্মে বিশ্বাসী ভারতীয় জাতি নিজেদের দ্বন্দ্ব-বিভেদ ভুলে একসঙ্গে কাজ করতে পারলে আমরা আমাদের লক্ষে পৌঁছতে পারব। মূলত এ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক সত্য প্রকাশ এবং মিথ্যাকে ঘৃণার পাশাপাশি তার অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে প্রকাশ করেছেন।

‘আমার পথ’ প্রবন্ধটি পড়ার সময় যে দিকগুলো ভালো করে খেয়াল করতে হবে

‘আমার পথ’ রচনাটি একটি প্রবন্ধ। প্রবন্ধ জাতীয় রচনায় লেখকের যুক্তিগ্রাহ্য ভাবনা প্রাধান্য পায়। সমাজ, দেশ ও জাতীয় সমস্যাকে কেন্দ্র করে রচিত প্রবন্ধে প্রাবন্ধিকের চেতনা চলমান যুগের চেতনাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়। এ প্রবন্ধেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এ রচনায় লেখক নিজের আত্ম-পরিচয়কে কীভাবে প্রকাশ করেছেন, কোন কোন উপমায় নিজেকে তুলে ধরেছেন এবং কেন এ ভাবে নিজের আদর্শকে ব্যক্ত করেছেন? তৎকালিন সমাজ ব্যবস্থার স্বরূপ, সামাজিক ধারণা ও সাধারণ মানুষের বিশ্বাসের সঙ্গে লেখকের মানস ও বিশ্বাসের পার্থক্য। প্রাবন্ধিকের আদর্শকে তিনি কীভাবে সমাজ পরিবর্তনের লক্ষে কাজে লাগাতে চেয়েছেন তা জানতে হবে। কেন

মহাত্মাগান্ধীর আন্দোলন বৃথা হচ্ছে? সেখানে ভারতবাসীর করণীয় কী? কেন প্রাবন্ধিক মিথ্যা তোয়াজ করতে চান না? কেন তিনি অসম্প্রদায়িক ভারতবর্ষ আকাঙ্ক্ষা করেছেন? মিথ্যা বিনয় কেন সমাজ ও জাতির জন্য ক্ষতিকর? লেখক কেন আত্মকে চিনতে বলেছেন?

অনুধাবন প্রশ্ন

১. আমার পথ দেখাবে আমার সত্য- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

২. যার ভিতরে ভয়, সেই বাইরে ভয় পায়- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

৩. নিজেকে চিনলে / নিজেকে চেনা- বলতে কী বোঝাতে চেয়েছেন?

৪. এটা দম্ভ নয়, অহংকার নয়- ব্যাখ্যা কর।

৫. এটা আত্মাকে চেনার সহজ স্বীকারোক্তি- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

৬. মিথ্যা বিনয়ের চেয়ে অনেক বেশি ভালো- ব্যাখ্যা কর।

৭. অহংকারের পৌরুষ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

৮. অভিশাপ রথের সারথী বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

৯. নিজের শক্তির ওপর অটুট বিশ্বাস আসে- কীভাবে?

১০. এই পরাবলম্বনই আমাদের নিষ্ক্রিয় করে ফেলেছে- ব্যাখ্যা কর।

১১. একেই বলে সবচেয়ে বড় দাসত্ব- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

১২. আত্মাকে চিনলেই আত্মনির্ভরতা আসে- ব্যাখ্যা কর।

১৩. আগুনের সম্মার্জনা কেন প্রয়োজন?

১৪. আমি সে দাসত্ব হতে সম্পূর্ণ মুক্ত- ব্যাখ্যা কর।

১৫. ভুলের মধ্য দিয়ে গিয়েই তবে সত্যকে পাওয়া যায়- ব্যাখ্যা কর।

১৬. মানুষ ধর্মই সবচেয়ে বড় ধর্ম- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

১৭. প্রাবন্ধিক আগুনের ঝাণ্ডা দুলিয়ে পথে বের হলেন কেন?

১৮. তারাই অসাধ্যকে সাধন করতে পারে- কারা এবং কেন?

১৯. আমার এ পথ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

২০. একমাত্র মিথ্যার জলই এ শিখাকে নিভাতে পারবে- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

২১. প্রাবন্ধিক আমাদের স্বাবলম্বী হতে বলেছেন কেন?

২২. ‘যে নিজের ধর্মের সত্যকে চিনেছে, সে কখনও অন্য ধর্মকে ঘৃণা করতে পারে না’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

২৩. প্রাবন্ধিক সত্যকে নমস্কার জানিয়েছেন কেন? ব্যাখ্যা কর।

২৪. প্রাবন্ধিক কোন ধরনের দাসত্ব থেকে মুক্ত? বুঝিয়ে লিখ। [চলবে]

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন