এইচএসসি পরীক্ষার ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা
প্রথমপত্র
পপেল চন্দ্র সাহা
প্রকাশ: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সহকারী অধ্যাপক, আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ, নরসিংদী
যৌথ মূলধনী ব্যবসায়
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন : নিবন্ধন পত্রকে কোম্পানির জন্মসনদ বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : নিবন্ধন পত্রকে কোম্পানির জন্মসনদ নামে অভিহিত করা হয়।
কোম্পানির আইনের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা পালন করে কোম্পানির উদ্যোক্তাগণ কোম্পানি নিবন্ধকের নিকট হতে নিবন্ধনের প্রমাণ হিসেবে যে সনদ প্রাপ্ত হয় তাকেই নিবন্ধনপত্র বলে। এরূপ পত্র কোম্পানির আইনগত সত্তা নির্দেশ করে। এরূপ দলিল পাওয়ার পর আইনগত সত্তার জন্মলাভ ঘটায় একে কোম্পানির জন্মসনদ বলা হয়ে থাকে। প্রাইভেট লিঃ কোম্পানি এটি পাওয়ার পরই কাজ শুরু করতে পারে।
প্রশ্ন : কোম্পানিতে যোগ্যতাসূচক শেয়ার কারা ক্রয় করে এবং কেন?
উত্তর : কোম্পানির পরিচালকগণ যোগ্যতাসূচক শেয়ার ক্রয় করেন।
কোম্পানি পরিচালক হতে কারও কোম্পানির ন্যূনতম যে পরিমাণ শেয়ার ক্রয় করতে হয় তাকে পরিচালকদের যোগ্যতাসূচক শেয়ার বলে। কোম্পানি আইনে উল্লেখ আছে, কোনো ব্যক্তি কোম্পানির পরিচালক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হতে পারবে না যদি সংঘবিধিতে বর্ণিত যোগ্যতাসূচক শেয়ারের কম পরিমাণ শেয়ার তার থাকে। অর্থাৎ সংঘবিধিতে যোগ্যতাসূচক শেয়ার থাকার বিধান থাকলে কাউকে কোম্পানির পরিচালক হতে ন্যূনতম উক্ত পরিমাণ শেয়ার তাকে ক্রয় করতে বা থাকতে হয়।
প্রশ্ন : বিবরণপত্র কেন তৈরি করা হয়? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি তার শেয়ার ও ঋণপত্র বিক্রয়ের নিমিত্তে জনগণ বরাবর আহ্বান জানিয়ে যে প্রচারপত্র বা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় তাকে কোম্পানির বিবরণপত্র বলে।
বিবরণপত্র প্রচারের উদ্দেশ্য হল জনগণকে কোম্পানি সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য দিয়ে কোম্পানি সম্বন্ধে অবহিত করা এবং শেয়ার ও ঋণপত্র ক্রয়ে উদ্বুদ্ধ করা। এজন্য বিবরণপত্রে কোনোরূপ মিথ্যা তথ্য প্রদান কোম্পানি আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অর্থাৎ কোম্পানি সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সব তথ্য তুলে ধরে শেয়ার ও ঋণপত্র ক্রয়ে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে মূলধন সংগ্রহের জন্য এরূপ পত্র তৈরি করা হয়।
প্রশ্ন : কোম্পানি কখন বোনাস শেয়ার ইস্যু করে?
উত্তর : শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে নগদে লভ্যাংশ না দিয়ে লভ্যাংশ হিসাবে শেয়ার বণ্টন করা হলে ওই শেয়ারকে বোনাস শেয়ার বলে।
কোম্পানির অর্জিত মুনাফার সম্পূর্ণ অংশ লভ্যাংশ হিসেবে বণ্টন না করে অংশবিশেষ এর সংরক্ষিত তহবিলে জমা রাখা হয়। এরূপ তহবিলে সঞ্চিতির পরিমাণ অনেক বেড়ে গেলে পরিচালকদের সভার সিদ্ধান্তক্রমে উক্ত তহবিলের অর্থকে মূলধনে পরিণত করার লক্ষ্যে বোনাস শেয়ার বণ্টন করা হয়ে থাকে।
প্রশ্ন : দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে স্টক এক্সচেঞ্জ গুরুত্বপূর্ণ কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : যে সুসংহত বাজারে বা স্থানে এর তালিকাভুক্ত সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানির শেয়ার- সিকিউরিটিজ নিয়মিতভাবে ও নির্ধারিত বিধি অনুযায়ী ক্রয়-বিক্রয় করা হয়ে থাকে তাকেই স্টক এক্সচেঞ্জ বলে।
পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির উন্নয়নের সঙ্গে দেশের শেয়ার বাজার বা স্টক এক্সচেঞ্জ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কারণ এখানে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ার ও ঋণপত্র সহজে বিক্রয় হয়। দাম হ্রাস-বৃদ্ধির কারণেও লাভের সুযোগ থাকে। এ কারণেই সব ধরনের বিনিয়োগকারীরা পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগে অংশগ্রহণ করে। তাই দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে স্টক এক্সচেঞ্জ গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন : আউটসোর্সিং ব্যবসায় গুরুত্বপূর্ণ কেন?
উত্তর : চুক্তির ভিত্তিতে অন্যের কাজ করে দেয়ার ব্যবসায়কে আউটসোর্সিং ব্যবসায় বলে।
একক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সব কাজ নিজের ব্যবস্থাপনার আওতায় লোক নিয়োগ দিয়ে করানো সম্ভব নয়। এতে খরচ ও প্রশাসনিক জটিলতা বাড়ে। অথচ অন্য প্রতিষ্ঠান দিয়ে কাজটি করিয়ে নেয়া সম্ভব হলে তা অনেক সহজ হয়। এ উদ্দেশ্য পূরণে এখন সমাজে অনেক আউটসোর্সিং ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। তাই স্বল্পখরচে ও সহজে কাজ পেতে আউটসোর্সিং ব্যবসায় গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন : কোম্পানির কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তা বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর : কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তা বলতে ব্যক্তি না হয়েও কোনো কিছুর ব্যক্তির ন্যায় মর্যাদা ও অধিকার লাভকে বুঝায়।
কোম্পানি সংগঠন ব্যক্তি না হলেও এটি আইন অনুযায়ী কৃত্রিম ও স্বাধীন ব্যক্তিসত্তার মর্যাদা ভোগ করে। ফলে এরূপ প্রতিষ্ঠান নিজ নামে অন্যের সঙ্গে চুক্তি করতে, লেনদেন করতে এবং প্রয়োজনে মোকদ্দমা দায়ের করতে পারে। অন্যরাও একইভাবে কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারে। এরূপ সত্তার মর্যাদাকেই কোম্পানির কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তা বলে।
