নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা: বাংলা প্রথমপত্র
মুহম্মদ আল মাসুদ
প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০১৮, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সিনিয়র শিক্ষক, মনিপুর উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ, মিরপুর, ঢাকা
জীবন-সঙ্গীত
-হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
১. আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে
আসে নাই কেহ অবনী পরে
সকলের তরে সকলে আমরা
প্রত্যেকে আমরা পরের তরে
২. করোনা সুখের আশ
পরোনা দুখের ফাঁস
এ জীবন নিশার স্বপন।
ক) ‘দারা’ শব্দের অর্থ কী?
খ) কবি সুখের আশা করতে নিষেধ করেছেন কেন?
গ) উদ্দীপক ১ ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতার কোন দিকটিকে প্রতীকায়িত করে? তা তুলে ধর।
ঘ) উদ্দীপক ১ ও ২-এ যে জীবনব্যঞ্জনা প্রকাশ পেয়েছে তা তুলে ধর।
উত্তর-ক : দারা শব্দের অর্থ স্ত্রী।
উত্তর-খ : জীবনে শুধুই সুখের আশা করলে দুখের ফাঁস পরতে হবে। তাই কবি সুখের আশা করতে নিষেধ করেছেন।
সংসারে কোন ব্যক্তিই নিরবিচ্ছিন্ন সুখের অধিকারী হতে পারে না। জীবনে দুঃখ আছে বলেই সুখ এত মধুর। সুখের আশা মানুষের অতৃপ্তিবোধকে আরও বাড়িয়ে তোলে। মানব জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। এ জীবনে মিথ্যা সুখের কল্পনায় হারিয়ে দুঃখ বাড়িয়ে লাভ নেই। আমাদের জীবনের উদ্দেশ্যও তা নয়। সংসারে বাস করতে হলে সুখ-দুঃখ নিয়েই বাস করতে হবে। নিরন্তর সুখের আশা মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রাকে ব্যহত করে। তাই কবি সুখের আশা করতে নিষেধ করেছেন।
উত্তর-গ : উদ্দীপক-২ ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতার উল্লিখিত অতীতের সুখের দিনের কথা স্মরণ করে কাতর না হওয়ার দিকটি নির্দেশ করে।
কবি মেহচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় মানুষের জীবন সম্পর্কে অত্যন্ত মূল্যবান বক্তব্য ফুটিয়ে তুলছেন। প্রতিটি মানুষকে পরামর্শ দিয়েছেন জীবন সংসারকে বোঝার জন্য। এক সময় মানুষের জীবনটা সাজানো ছিল। কিন্তু নিজেদের ভুলের কারণে সেই অতীত ঐতিহ্য তারা হারিয়ে ফেলেছে।
এ জন্য তারা স্মৃতিকাতর হয়ে পড়তে পারে বলে কবি তাদেরকে নতুন উদ্যমে জীবনের লক্ষ্য অর্জনের জন্য সংগ্রাম করতে বলেছেন। উদ্দীক ১ যেন আলোচ্য ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতারই প্রতিচ্ছবি। স্তবক-১-এ কবির অতীতের সোনালি ইতিহাসের কথা জানা যায়।
মানুষ সব সময় নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকে। পরের জন্য ভাবে না। মানুষ জীবনে শুধু সুখ চায়।
উদ্দীপক-১ ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতার মূল বিষয়কে ধারণ করে।
উত্তর-ঘ : উদ্দীপকের ১-এ কামিনী রায়ের সম্মিলিত জীবনচেতনা প্রকাশ পেয়েছে।
পারস্পরিক ত্যাগ ও মর্যাদার মনোভাব নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। যা ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় মূলভাবেরই ব্যঞ্জনা। ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতার কবি মহৎ ব্যক্তিদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছেন। মহৎ ব্যক্তিগণ তাদের কর্মের মাধ্যমে পৃথিবীতে স্মরণীয়, বরণীয় হয়ে আছেন।
কেননা তার অদম্য স্পৃহা নিয়ে জীবনযুদ্ধে প্রতিনিয়ত জয়ী হয়েছেন। তারা অতীতের সুখ স্মরণ করে পীড়িত হননি, বরং দৃঢ়প্রত্যয় নিয়ে সম্মুখে এগিয়েছেন। এ ছাড়া সমরাঙ্গনে অর্থাৎ যুদ্ধক্ষেত্রে তারা ভয়ে পিছপা হননি। তারা ভেবেছেন, এই ক্ষণস্থায়ী জীবন যতটুকু সময় পাওয়া যায়, সেই সময়ের মধ্যে নিজেকে অধিষ্ঠিত করতে হবে। মহৎ ব্যক্তিরা এমনই চিন্তা-ভাবনা ও কর্মের অধিকারী ছিলেন।
উদ্দীপক স্তবক ১-এ কামিনী রায় এমন মহিমা বর্ণনা করেছেন।। তিনি স্বীয় কর্মের জন্য জগৎ বিখ্যাত হয়ে আছেন। স্তবক ১-এ কবিতায় মানুষের মূল্যবোধের কথা ব্যক্ত হয়েছে। মানুষ পৃথিবীতে আসে ক্ষণকালের জন্য। নিজের সুখ ভোগেই বেশি ব্যস্ত থাকে। কবি বলেছেন এতে জীবনের সার্থকতা নেই। শুধু নিজে ভালো থাকার মধ্যে জীবনে সার্থকতা নেই। সুখে-দুখে সকলে মিলেমিশে থাকার মধ্যেই জীবন অর্থবহ হয়ে উঠে। জীবনে শুধু নিজের সুখের কথা ভাবলে চলবে না অন্যের কথাও ভাবতে হবে। উদ্দীপক ২ এ বক্তব্যই ধারণ করে।
