Logo
Logo
×

টিউটোরিয়াল

পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়

Icon

আফরোজা বেগম

প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২০২১, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সিনিয়র শিক্ষক, উত্তরা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, উত্তরা, ঢাকা

ব্রিটিশ শাসন

প্রশ্ন : সিপাহী বিদ্রোহের পাঁচটি কারণ লিখ।

উত্তর : সিপাহী বিদ্রোহ : পলাশী যুদ্ধের ১০০ বছর পর ১৮৫৭ সালে পশ্চিম বাংলার ব্যারাকপুরে মঙ্গল পান্ডের নেতৃত্বে ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে সিপাহীদের যে বিদ্রোহ সারা ভারতবর্ষে ছড়িয়ে পড়ে তা-ই ইতিহাসে সিপাহী বিদ্রোহ বা স্বাধীনতার প্রথম সশস্ত্র সংগ্রাম হিসাবে খ্যাত।

কারণ : * সেনাবাহিনীতে সিপাহী পদে ভারতীয়দের সংখ্যাধিক্য ছিল। * ভারতের বিভিন্ন এলাকার সৈন্যদের মধ্যে সামাজিক বিশৃংখলা তৈরি হয়েছিল। * ১৮৫৬ সালের পর ভারতের বাইরেও সৈন্যদের কাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। * কামান ও বন্দুকের কার্তুজ পিচ্ছিল করার জন্য গরুর এবং শুকরের চর্বি ব্যবহারের গুজব নিয়ে ধর্র্মীয় অশান্তি তৈরি করা হয়েছিল। * সৈন্যদের আন্দোলনকে সমর্থন জানানোর জন্য সাধারণ মানুষ প্রস্তুত ছিলেন।

তাই এ আন্দোলন দ্রুত সিপাহী বা সৈন্যদের কাছ থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। ব্রিটিশ সরকার কঠোর হাতে এ বিদ্রোহ দমন করে। এ বিদ্রোহে প্রায় ১,০০,০০০ ভারতীয় মারা যায়।

সুতরাং, সিপাহী বিদ্রোহ সামাজিক, ধর্মীয়সহ নানা কারণে সংগঠিত হয়েছিল।

প্রশ্ন : ব্রিটিশ শাসনের দুটি ভালো ও দুটি খারাপ দিক উল্লেখ কর।

উত্তর : ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিপ্লবের পর থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ৯০ বছর পর্যন্ত ভারতের শাসনভার ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে ছিল। এ শাসন আমলই ব্রিটিশ শাসন নামে ইতিহাসখ্যাত।

নিচে ব্রিটিশ শাসনের দুটি ভালো ও দুটি খারাপ দিক উল্লেখ করা হল-

ভালো দিক : * নতুন নতুন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাপাখানা প্রতিষ্ঠার ফলে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি হয়। * সড়কপথ, রেলপথ উন্নয়ন এবং টেলিগ্রাফ প্রচলনের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার বিশেষ উন্নতি হয়।

২টি খারাপ দিক : * ‘ভাগ কর শাসন কর’ নীতির ফলে এ দেশের মানুষের মধ্যে ধর্ম, বর্ণ, জাতি এবং অঞ্চলভেদে বিভেদ সৃষ্টি হয়। অল্পসংখ্যক জমিদার শ্রেণি অনেক জমির মালিক হন এবং বাংলার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ গরিব হয়ে যান। * অনেক কারিগর বেকার ও অনেক কৃষক গরিব হয়ে যায় এবং বাংলায় দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। এ ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ বাংলা ১১৭৬ সালে (ইংরেজি ১৭৭০) হয়েছিল যা ‘ছিয়াত্তরের মন্বন্তর’ নামে পরিচিত।

সুতরাং, ব্রিটিশ শাসন আমলের শোষণনীতিই ভারতবর্ষের ঐতিহ্যকে ম্লান করেছে আর আমাদের শিখিয়েছে দাসত্ব।

প্রশ্ন : সাহিত্যিকরা রাজনৈতিক আন্দোলনে কী ধরনের ভূমিকা পালন করতে পারেন?

উত্তর : সাহিত্যিকরা রাজনৈতিক আন্দোলনে নিজের স্বাধিকার আন্দোলন আদায়ের জন্য রাজপথে নেমে মিছিল করেন না। তারা নিজেদের সৃজন মেধা দিয়ে, নিজের ক্ষুরধারসম্পন্ন লেখনী দ্বারা পিছিয়ে পড়া ঘুমন্ত জাতিকে তাদের চেতনা ফিরিয়ে দিতে সাহায্য করেন। তারা তাদের গান, কবিতা ও লেখনীর মাধ্যমে জনগণকে চাঙা করে রাজনৈতিক চেতনা বোধের জন্ম দেন। ফলে এগিয়ে চলে রাজনৈতিক আন্দোলন। যুগে যুগে বহু সাহিত্যিক তাদের শক্তিশালী লেখনীর মাধ্যমে সমাজ ও জাতির পরিবর্তন ঘটিয়েছেন।

উনিশ শতকের শেষের দিকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম নবজাগরণ ঘটিয়েছেন। বেগম রোকেয়া তার নারীবাদী লেখনীর মাধ্যমে সমাজে অবদান রেখেছেন। রবীন্দ্রনাথ-নজরুলসহ নানা সাহিত্যিকের তীব্র, জ্বালাময়ী লেখনীর কারণে ইংরেজ সরকার ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ করে। ১৯৫২, ১৯৭১ সালের নানা রাজনৈতিক কর্মসূচিকে এগিয়ে নিতে সাহিত্যিকদের অবদান অনস্বীকার্য। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন শিল্প-সাহিত্যিকদের নাটক, ক্রোড়পত্র মুক্তিযোদ্ধা রক্তে এনেছিল বাঁধভাঙা জোয়ার আর উদ্যম। এভাবে সারা বিশ্বে যুগে যুগে রাজনৈতিক আন্দোলনের পুরোটাজুড়েই থাকেন সাহিত্যিকরা। তারা লেখনীর মাধ্যমে রাজনীতিকদের উদ্দীপনা জোগান।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম