Logo
Logo
×

টিউটোরিয়াল

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বাংলা দ্বিতীয়পত্র

Icon

উজ্জ্বল কুমার সাহা

প্রকাশ: ০৮ মে ২০১৮, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

প্রভাষক, সেন্ট যোসেফ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়, মোহাম্মদপুর, ঢাকা

উচ্চারণরীতি

প্রশ্ন: অন্ত্য-অ উচ্চারণের পাঁচটি নিয়ম লেখ।

উত্তর : শব্দান্তের অ বাংলা ভাষায় সংস্কৃত বা প্রাকৃতের মতো উচ্চারিত হয় না। এই অ ধ্বনিটি পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনবর্ণে মিশে থাকে বলে প্রায়ই হসন্তরূপে উচ্চারিত হয়ে থাকে। যেমন : নাক্, কান্, হাত্, জাত্, মান্, ধান্, কাম্, র্ঘ, র্ব, জাম্, থান্, দাঁত্, পাত্, আট্, ঘট্, বান্, গান্ ইত্যাদি। কিন্তু সর্বত্রই এরূপ উচ্চারিত হয় না, ক্ষেত্রবিশেষে এই অ রক্ষিত হয় এবং ও-কারান্ত উচ্চারিত হয়। যেমন :

১. বাংলা ভাষায় বেশকিছু বিশেষণে অথবা বিশেষণরূপে ব্যবহৃত পদের অন্তিম অ লুপ্ত না হয়ে ও-কারান্ত উচ্চারণ হয়ে থাকে। যেমন : কাল (বিশেষ কালো, কিন্তু বিশেষ্য কাল্), ভাল [ভালো কিন্তু বিশেষ্য ভাল্ (কপাল)], খাট (খাটো কিন্তু বিশেষ্য খাট্), ছোট (ছোটো), বড় (বড়ো) ইত্যাদি।

২. বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত বেশকিছু দ্বিরুক্ত শব্দ বিশেষণরূপে ব্যবহৃত হলে প্রায়ই অন্তিম অ ও-কারান্ত উচ্চারণ হয়। যেমন : কাঁদ-কাঁদ (কাঁদো-কাঁদো), কল-কল (কলো-কলো), পড়-পড় (পড়ো-পড়ো), বড়-বড় (বড়ো-বড়ো), ছল-ছল (ছলো-ছলো), ঝরঝর (ঝরো-ঝরো), বাধ-বাধ (বাধো-বাধো) ইত্যাদি।

৩. ১১ থেকে ১৮ পর্যন্ত সংখ্যাবাচক শব্দের শেষ অ রক্ষিত এবং ও-কারান্তো উচ্চারিত হয়ে থাকে। যেমন : (১১) এগার (এগারো), (১২) বার (বারো), (১৩) তের (তেরো), (১৪) চৌদ্দ (চোউদ্দো), (১৫) পনের (পনেরো), (১৬) ষোল (শোলো), (১৭) সতর (শতরো > শতেরো) এবং (১৮) আঠার (আঠারো)।

৪. আন (আনো)- প্রত্যয়ান্ত শব্দের অন্তিম অ এবং ও-কারান্ত উচ্চারিত হয়। যেমন : করান (করানো), তাড়ান (তাড়ানো), বলান (বলানো), সাঁতরান (সাঁতরানো), দেখান (দ্যাখানো), শেখান (শেখানো), পাঠান (পাঠানো), খেলান (খ্যালানো), সরান (শরানো), ভরা (ভরানো) ইত্যাদি।

৫. ত (ক্ত) এবং ইত প্রত্যয়যোগ সাধিত বা গঠিত বিশেষণ শব্দের অন্ত্য অ উচ্চারণে ও-কারান্ত হয়ে থাকে। যেমন : হত (হতো), মত (মতো), গত (গতো), নত (নতো), রত (রতো), নিয়মিত (নিয়োমিতো), পঠিত (পঠিতো), চলিত (চলিতো), পালিত (পালিতো), গীত (গিতো), বিদিত (বিদিতো), জ্ঞাত (গ্যাঁতো), পরীক্ষিত (পরিকখিতো), বঞ্চিত (বোনচিতো) ইত্যাদি।

প্রশ্ন : অ ধ্বনি উচ্চারণের পাঁচটি নিয়ম উদাহরণসহ লেখ।

উত্তর : শব্দের আদিতে যদি ‘অ’ থাকে এবং তারপরে ‘ই’-কার, ‘উ’-কার থাকে তবে সে- ‘অ’-এর উচ্চারণ সাধারণত ‘ও’-কারের মতো হয়। যথা : অভিধান (ওভিধান্), অভিযান (ওভিজান্), অতি (ওতি), মতি (মোতি), অতীত (ওতিত্), অধীন (ওধিন্) ইত্যাদি।

১. শব্দের আদ্য ‘অ’-এর পরে ‘্য’ (য)-ফলাযুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ থাকলে সে ক্ষেত্রে ‘অ’-এর উচ্চারণ প্রায়শ ‘ও’-কারের মতো হয়। যেমন : অদ্য (ওদ্দো), অন্য (ওন্নো), অত্যাচার (ওত্তার্চা), কন্যা (কোন্না), বন্যা (বোন্না) ইত্যাদি।

২. শব্দের আদ্য ‘অ’-এর পর ‘ক্ষ’, ‘জ্ঞ’ থাকলে, সে ‘অ’-এর উচ্চারণ সাধারণত ‘ও’-কারের মতো হয়ে থাকে। যথা : অক্ষ (ওক্খো), দক্ষ (দোক্খো), যক্ষ (জোক্খো), লক্ষণ (লোক্খোন), যজ্ঞ (জোগ্গোঁ), লক্ষ (লোক্খো), রক্ষা (রোক্খা) ইত্যাদি।

৩. শব্দের প্রথমে যদি ‘অ’ থাকে এবং তারপর (ঋ)-কার যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ থাকলেও, সে- ‘অ’-এর উচ্চারণ সাধারণত ‘ও’-কারের মতো হয়। যথা : মসৃণ ( মোসৃণ/মোস্সণ), বক্তৃতা (বোক্তৃতা), যকৃৎ (জোকৃত্) ইত্যাদি।

৪. শব্দের প্রথমে ‘অ’ যুক্ত ‘র’ ( ্র)-ফলা থাকলে সে ক্ষেত্রেও আদ্য ‘অ’-এর উচ্চারণ সাধারণ ‘অ’-কার হয়ে থাকে। যথা : ক্রম (ক্রোম্), গ্রহ (গ্রোহো), গ্রন্থ (গোন্থো), ব্রত (ব্রোতো) ইত্যাদি।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম