শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের প্রিয় টিউটোরিয়াল
jugantor
শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের প্রিয় টিউটোরিয়াল

  সেলিম কামাল  

০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০:০০  |  প্রিন্ট সংস্করণ

যুগান্তরের জন্মলগ্ন থেকেই টিউটোরিয়াল বিভাগের অস্তিত্ব। শুরুর সময়টাতে এ বিভাগের সঙ্গে জড়িত থাকা আমার হয়ে ওঠেনি। কারণ, তখনো আমি যুগান্তরের অংশ হতে পারিনি। ২০০৪ সালে পত্রিকাটিতে জয়েন করার পর থেকে আমি বিনোদন বিভাগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। ধীরে ধীরে সময়ের পরিক্রমায় এক সময় (২০০৭ সালে) হয়ে উঠলাম টিউটোরিয়াল বিভাগের সম্পাদক। শুরু থেকেই যে শিক্ষকরা এ বিভাগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন, কাজের সূত্রে তাদের সঙ্গে আমার সখ্য গড়ে উঠল। তখন মো. কামরুজ্জামান স্যার নবম-দশম শ্রেণির পদার্থবিজ্ঞান লিখতেন। সে সময় তিনি ছিলেন বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ রাইফেল্স কলেজের শিক্ষক। এর পরপরই তিনি জয়েন করলেন মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে। তিনি এখনো সম্পৃক্ত রয়েছেন এ বিভাগের সঙ্গে। পুরোনো শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন সোনারগাঁ গোয়ালপাড়া হাইস্কুলের সিনিয়র শিক্ষক দেওয়ান সামছুর রহমানও।

আমার বাবাও শিক্ষক ছিলেন। তাই শিক্ষকদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ছিল অন্যরকম। সে কারণে আমি প্রত্যেককেই ‘স্যার’ হিসাবে সম্বোধন করি। বিভাগটির বয়স ২ যুগে পড়েছে। কিন্তু আমার সঙ্গে এর সম্পৃক্ততা ২০ বছরের। এ দীর্ঘ পথপরিক্রমায় আমার পরিচয় হয়েছে বহু শিক্ষক-শিক্ষিকার সঙ্গে। বিভাগটির দায়িত্ব নেওয়ার পর বিপণন প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে বিভাগটির জনপ্রিয়তা বাড়ানোর লক্ষ্যে আমি নামকরা স্কুল কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এ বিভাগের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে শুরু করি। একে একে টিউটোরিয়ালের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে থাকেন ভিকারুননিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মনিপুর উচ্চবিদ্যালয়, রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ, সেন্ট যোসেফ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়, সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, গভর্নমেন্ট সাইন্স হাইস্কুল, সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ, কুর্মিটোলা বিএএফ শাহীন কলেজ প্রভৃতি স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। বিশেষ পরীক্ষাগুলোর আগে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষরাও পরামর্শ দিয়ে ঋদ্ধ করেছেন বিভাগটির নানা আয়োজনকে।

টিউটোরিয়াল বিভাগের সাফল্যের বা জনপ্রিয়তার একটা ছোট্ট গল্প আছে। তখন আমাদের অফিস নটর ডেম কলেজের উলটোদিকে, উত্তর কমলাপুরে। সে সময় এক বছর প্রথমবারের মতো আমি শিক্ষকদের মডেল টেস্ট সংগ্রহ করে জেএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য প্রকাশ করেছিলাম। বাংলা মডেল টেস্ট প্রকাশের দুদিন পরই হলো পরীক্ষা। এক কলিগ এসে হাসতে হাসতে বললেন, ‘ভাই, প্রশ্নপত্র ফাঁসের দায়ে আপনার বিরুদ্ধে মামলা হবে।’ আমি বললাম, ‘মানে বুঝলাম না’। তিনি আবার আমাকে আশ্বস্ত করার ভঙ্গিতে বললেন, ‘না না, মজা করলাম। আমার মেয়ে এবার জেএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। ও আপনার বাংলা মডেল টেস্ট থেকে ৮০ শতাংশ কমন পেয়েছে।’ আমি বললাম, ‘তাহলে আমার সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে একটা ধন্যবাদ জানাতেই হয়। তিনি চমৎকার কাজ করেছেন।’ তৎকালীন উপ-সম্পাদক শাহজাহান সরদারও আমাকে ডেকে নিয়ে ধন্যবাদ জানালেন।

আসলে টিউটোরিয়াল পাতার সব শিক্ষকই এসব বিষয়ে দায়িত্বশীল। শিক্ষার্থীদের সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে কখনো আলসেমি করেননি। দায়সারা গোছের কাজ করেননি। এখনো সে ধারা অব্যাহত রয়েছে। এ জন্য আমি আমার বিভাগের সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের কাছে কৃতজ্ঞ। আশা করছি, এভাবেই যুগান্তরের সঙ্গে থেকে তাদের শ্রম বিতরণের ধারা অব্যাহত রাখবেন। থাকবেন, যুগান্তরের শিক্ষার্থী-পাঠকদের সঙ্গে। টিউটোরিয়াল বিভাগ শিক্ষার্থীদের পাঠবহির্ভূত কর্মকাণ্ডকেও উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে। টিউটোরিয়ালের ‘তোমাদের আঁকা’ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিভাগ। টিউটোরিয়ালের মেইলে এত সংখ্যক ছবি এসে জমা পড়েছে যে, শিক্ষার্থী সোনামণিদের শতশত ছবি এখনো প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। আমি কথা দিচ্ছি, সবার ছবিই পর্যায়ক্রমে প্রকাশিত হবে। সবশেষে যুগান্তর টিউটোরিয়াল বিভাগের পাঠকদের কাছে অনেক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের প্রিয় টিউটোরিয়াল

 সেলিম কামাল 
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

যুগান্তরের জন্মলগ্ন থেকেই টিউটোরিয়াল বিভাগের অস্তিত্ব। শুরুর সময়টাতে এ বিভাগের সঙ্গে জড়িত থাকা আমার হয়ে ওঠেনি। কারণ, তখনো আমি যুগান্তরের অংশ হতে পারিনি। ২০০৪ সালে পত্রিকাটিতে জয়েন করার পর থেকে আমি বিনোদন বিভাগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। ধীরে ধীরে সময়ের পরিক্রমায় এক সময় (২০০৭ সালে) হয়ে উঠলাম টিউটোরিয়াল বিভাগের সম্পাদক। শুরু থেকেই যে শিক্ষকরা এ বিভাগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন, কাজের সূত্রে তাদের সঙ্গে আমার সখ্য গড়ে উঠল। তখন মো. কামরুজ্জামান স্যার নবম-দশম শ্রেণির পদার্থবিজ্ঞান লিখতেন। সে সময় তিনি ছিলেন বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ রাইফেল্স কলেজের শিক্ষক। এর পরপরই তিনি জয়েন করলেন মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে। তিনি এখনো সম্পৃক্ত রয়েছেন এ বিভাগের সঙ্গে। পুরোনো শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন সোনারগাঁ গোয়ালপাড়া হাইস্কুলের সিনিয়র শিক্ষক দেওয়ান সামছুর রহমানও।

আমার বাবাও শিক্ষক ছিলেন। তাই শিক্ষকদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ছিল অন্যরকম। সে কারণে আমি প্রত্যেককেই ‘স্যার’ হিসাবে সম্বোধন করি। বিভাগটির বয়স ২ যুগে পড়েছে। কিন্তু আমার সঙ্গে এর সম্পৃক্ততা ২০ বছরের। এ দীর্ঘ পথপরিক্রমায় আমার পরিচয় হয়েছে বহু শিক্ষক-শিক্ষিকার সঙ্গে। বিভাগটির দায়িত্ব নেওয়ার পর বিপণন প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে বিভাগটির জনপ্রিয়তা বাড়ানোর লক্ষ্যে আমি নামকরা স্কুল কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এ বিভাগের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে শুরু করি। একে একে টিউটোরিয়ালের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে থাকেন ভিকারুননিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মনিপুর উচ্চবিদ্যালয়, রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ, সেন্ট যোসেফ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়, সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, গভর্নমেন্ট সাইন্স হাইস্কুল, সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ, কুর্মিটোলা বিএএফ শাহীন কলেজ প্রভৃতি স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। বিশেষ পরীক্ষাগুলোর আগে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষরাও পরামর্শ দিয়ে ঋদ্ধ করেছেন বিভাগটির নানা আয়োজনকে।

টিউটোরিয়াল বিভাগের সাফল্যের বা জনপ্রিয়তার একটা ছোট্ট গল্প আছে। তখন আমাদের অফিস নটর ডেম কলেজের উলটোদিকে, উত্তর কমলাপুরে। সে সময় এক বছর প্রথমবারের মতো আমি শিক্ষকদের মডেল টেস্ট সংগ্রহ করে জেএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য প্রকাশ করেছিলাম। বাংলা মডেল টেস্ট প্রকাশের দুদিন পরই হলো পরীক্ষা। এক কলিগ এসে হাসতে হাসতে বললেন, ‘ভাই, প্রশ্নপত্র ফাঁসের দায়ে আপনার বিরুদ্ধে মামলা হবে।’ আমি বললাম, ‘মানে বুঝলাম না’। তিনি আবার আমাকে আশ্বস্ত করার ভঙ্গিতে বললেন, ‘না না, মজা করলাম। আমার মেয়ে এবার জেএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। ও আপনার বাংলা মডেল টেস্ট থেকে ৮০ শতাংশ কমন পেয়েছে।’ আমি বললাম, ‘তাহলে আমার সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে একটা ধন্যবাদ জানাতেই হয়। তিনি চমৎকার কাজ করেছেন।’ তৎকালীন উপ-সম্পাদক শাহজাহান সরদারও আমাকে ডেকে নিয়ে ধন্যবাদ জানালেন।

আসলে টিউটোরিয়াল পাতার সব শিক্ষকই এসব বিষয়ে দায়িত্বশীল। শিক্ষার্থীদের সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে কখনো আলসেমি করেননি। দায়সারা গোছের কাজ করেননি। এখনো সে ধারা অব্যাহত রয়েছে। এ জন্য আমি আমার বিভাগের সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের কাছে কৃতজ্ঞ। আশা করছি, এভাবেই যুগান্তরের সঙ্গে থেকে তাদের শ্রম বিতরণের ধারা অব্যাহত রাখবেন। থাকবেন, যুগান্তরের শিক্ষার্থী-পাঠকদের সঙ্গে। টিউটোরিয়াল বিভাগ শিক্ষার্থীদের পাঠবহির্ভূত কর্মকাণ্ডকেও উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে। টিউটোরিয়ালের ‘তোমাদের আঁকা’ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিভাগ। টিউটোরিয়ালের মেইলে এত সংখ্যক ছবি এসে জমা পড়েছে যে, শিক্ষার্থী সোনামণিদের শতশত ছবি এখনো প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। আমি কথা দিচ্ছি, সবার ছবিই পর্যায়ক্রমে প্রকাশিত হবে। সবশেষে যুগান্তর টিউটোরিয়াল বিভাগের পাঠকদের কাছে অনেক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন