এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৩ : বাংলা প্রথমপত্র
ড. সনজিত পাল
প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সিনিয়র শিক্ষক, সেন্ট গ্রেগরী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ লক্ষ্মীবাজার, ঢাকা
বায়ান্নর দিনগুলো
-শেখ মুজিবুর রহমান
সৃজনশীল প্রশ্নের দিক সমূহ
১. বিনা অপরাধে/ বিনা বিচারে আটককৃত রাজবন্দির জীবনযন্ত্রণা।
২. সরকারের স্বেচ্ছাচারিতা/ অপশাসন থেকে মুক্তির জন্য অনশন ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত।
৩. পূর্ব পাকিস্তানের জাতীয় নেতাদের প্রতি পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অনৈতিকভাবে আটক রাখার ক্ষমতা প্রয়োগ।
৪. জেলকর্তৃপক্ষের সহানুভূতিশীল আচরণ।
৫. রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য/ বার্তা পৌঁছানোর জন্য বন্দিদের কৌশল।
৬. একুশে ফেব্রুয়ারির ঘটনা প্রবাহ।
৭. একুশে ফেব্রুয়ারির ঘটনার কারণে শাসক গোষ্ঠীর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ধারণা।
৮. অনশনরত অবস্থায় মৃত্যুর আশঙ্কা থাকায় পিতা-মাতা, স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাবনা।
৯. জেল থেকে ছাড়া পেয়ে পরিবারে ফিরে আসায় আনন্দ।
১০. দেশের জন্য, জাতির জন্য নিজেকে উৎসর্গ করার মধ্য দিয়ে শাসক শ্রেণির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।
১১. কারাগারের ঘটনা প্রবাহ বর্ণনা।
মূলদিক : জেলে বন্দি থাকা অবস্থায় শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর আপসহীন নির্ভীক সত্তার প্রতিবাদী চেতনার পরিচয় ও আপনজনদের জন্য হৃদয়ের যন্ত্রণার বর্ণনা।
রেইনকোট
-আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
আখতারুজ্জামান ইলিয়াস (১৯৪৩-১৯৯৭) বাংলা কথাসাহিত্যে এক অসাধারণ প্রতিভার নাম। তিনি লেখার সংখ্যা বৃদ্ধির ওপর কখনো জোর দেননি। বরং গুরুত্ব দিয়েছেন লেখার গুণগত মানের ওপর। জীবন ও জগৎকে তিনি পর্যবেক্ষণ করেছেন গভীর অন্তর্দৃষ্টি সহযোগে। দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, রাজনীতি, অর্থনীতি, দারিদ্র্য, শোষণ, বঞ্চনা প্রভৃতি বিষয়কে করেছেন সাহিত্যের অন্তর্ভুক্ত। মানুষের জীবনকে সামগ্রিকভাবে অনুধাবন করতে চেয়েছেন এই সবকিছুর পরিপ্রেক্ষিতেই। মানুষের পরম সূক্ষ্ম মনস্তাত্ত্বিক প্রান্তগুলো উন্মোচনেও তার রয়েছে গভীর দক্ষতা। মুক্তিযুদ্ধকালীন ঢাকার আতঙ্কগ্রস্ত পরিবেশ নিয়ে আখতারুজ্জামান ইলিয়াস রচনা করেন ‘রেইনকোট’ গল্প। মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে পাক সেনারা যখন কোণঠাসা, তখন ঢাকায় মুক্তিযোদ্ধারা গেরিলা আক্রমণ শুরু করে। ‘রেইনকোট’ গল্পটি এমনই এক গেরিলা আক্রমণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রেইনকোট প্রতীকী তাৎপর্যে বর্ণিত হয়েছে। নুরুল হুদা এ গল্পের কথক। তার জবানিতে গল্পের ঘটনাবলি বিবৃত হয়েছে। তার কথনের মাধ্যমেই পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অমানুষিক নির্যাতন ও নারকীয় হত্যাযজ্ঞের মধ্যে ঢাকা শহরের আতঙ্কগ্রস্ত জীবনচিত্র বর্ণিত হয়েছে। সেনাবাহিনীর তলবের কারণে তুমুল বৃষ্টির মধ্যে কলেজে যাওয়ার জন্য নুরুল হুদা মুক্তিযোদ্ধা শ্যালক মিন্টুর রেইনকোটটি পরে। রেইনকোটটি পরার পর ভীতু নুরুল হুদার মধ্যে যে সাহসিকতার জন্ম হয়, তার অনুভূতির জগতে যে ব্যাপক পরিবর্তন সূচিত হয় তা এ গল্পে বিবৃত হয়েছে। কলেজ শিক্ষক নুরুল হুদার ভীতু মনে যে উষ্ণতা, সাহসিকতা ও স্বদেশপ্রেমের উদ্দীপনার জাগরণ হয়েছে তা এ গল্পকে বিশেষ তাৎপর্যময় করে তুলেছে।
‘রেইনকোট’ গল্পটি পড়ার সময় যে দিকগুলো ভালো করে খেয়াল করতে হবে-
‘রেইনকোট’ গল্পে কিছু ঘটনার বর্ণনা সরাসরি আর কিছু ঘটনা গল্প কথকের অতীত স্মৃতি থেকে নেওয়া হয়েছে। গল্পের বর্ণনার কেন্দ্রে রয়েছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও গেরিলা আক্রমণ। এ গল্পে হাস্যরসাত্মক ভাব যতটা রয়েছে, তার চেয়েও বেশি রয়েছে প্রধান চরিত্রের অনুভূতি বিশ্লেষণ, তার সূক্ষ্ম মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তনের বর্ণনা। গল্প কথকের মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে রেইনকোটের ভূমিকা কেন এত কার্যকর, কেন মুক্তিযোদ্ধা মন্টুর মানসিক শক্তি নুরুল হুদাকে স্পর্শ করেছে, কেন ভীতু প্রকৃতির নুরুল হুদা সাহসী হয়ে উঠেছে, কেন এদেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শহিদমিনার ভেঙে ফেলার কথা বলা হয়েছে, কেন অনেক শিক্ষক উর্দুতে কথা বলার চেষ্টা করছে, কেন ইসহাককে দেখে কলেজের সবাই তটস্থ থাকে, কেন নুরুল হুদা বারবার বাড়ি পাল্টাচ্ছে, কেন নুরুল হুদাকে মিলিটারিরা ধরে নিয়ে যায়- এসব প্রশ্নের উত্তর গভীরভাবে খুঁজতে হবে।
অনুধাবন প্রশ্ন
১. দেশে একটাও কলেজ ও শহিদমিনার অক্ষত নেই কেন?
২. ‘যেন বৃষ্টি পড়ছে মিন্টুর রেইনকোটের ওপর’- ব্যাখ্যা কর।
৩. ‘গুজব ছড়ানো আর গুজবে কান দেওয়া সমান অপরাধ’- ব্যাখ্যা কর।
৪. নুরুল হুদা বাসে ওঠার পরবর্তী ঘটনাগুলো বেশ মজার ছিল কেন?
৫. মিলিটারিরা নুরুল হুদাকে কেন ধরে নিয়ে যায়?
৬. মেজর জেনারেলকে দেখে প্রিন্সিপালের মুখ বেগুনি হয় কেন?
