Logo
Logo
×

দৃষ্টিপাত

দেশের অর্থনীতিতে ‘পরিকল্পনা-২০৪১’ এর ইতিবাচক প্রভাব

Icon

আয়মান উলফাত ও নুসরাত ইসলাম

প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২০, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

দেশের অর্থনীতিতে ‘পরিকল্পনা-২০৪১’ এর ইতিবাচক প্রভাব

২০৪১ সালে দারিদ্র্যমুক্ত হবে বাংলাদেশ। নতুন প্রেক্ষিত পরিকল্পনা-২০৪১ এ এই লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার।

২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ এনইসির চেয়ারপারসন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় এটি অনুমোদন পায়। বাংলাদেশকে উচ্চআয়ের উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে দেশের দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০২১-২০৪১) অনুমোদন করা হয়েছ। শিল্পে ভর করে বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ।

জিডিপি বাড়ছে রেকর্ডহারে তবে কর্মসংস্থানে এর প্রভাব পড়ছে কম। রফতানি বাজারে কমেনি পোশাকশিল্পের নির্ভরতাও। অন্যদিকে, বিদ্যুৎ ও রেমিটেন্সকে ঘিরে সাফল্য কেড়েছে সবার নজর। তাই উন্নত দেশ হওয়ার লক্ষ্যে অবিচল বাংলাদেশ।

লক্ষ্যে পৌঁছানোর কৌশল কী হবে তা স্পষ্ট হয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায়। ২০৪১ সালে মাথাপিছু আয় (পিপিপি) হবে ১২ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার, যেখানে বর্তমানে দেশের মাথাপিছু আয় (পিপিপি-২০১৭) ৪০৪০ মার্কিন ডলার। পাশাপাশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৯ দশমিক ৯ শতাংশ। চরম দারিদ্র্য নেমে আসবে ০.৬৮ শতাংশে এবং দারিদ্র্য হার হবে ৩ শতাংশের নিচে।

২০৩১ সাল নাগাদ জিডিপি প্রবৃদ্ধি বেড়ে হবে ৯ শতাংশ, দারিদ্র্যহার ২০২০ সালের ১৮ দশমিক ৮২ শতাংশ থেকে কমে ৭ শতাংশ এবং চরম দারিদ্র্য ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ২ দশমিক ৫৫ শতাংশ হবে। এ ছাড়া মানুষের গড় আয়ু হবে ৮০ বছর। আলোচনা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেছেন, ‘দারিদ্র্য দূর, সুশাসন আরও সুসংহত করা এবং বাংলাদেশকে আধুনিক ও বিশ্বমানের ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে এ ঐতিহাসিক ডকুমেন্টটি প্রণয়ন ও অনুমোদন করা হয়েছে।’

সুশাসন, গণতন্ত্র, বিকেন্দ্রীকরণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধি এ চারটি প্রাতিষ্ঠানিক স্তম্ভ ভিত্তি করে উন্নত দেশ হবে বাংলাদেশ। শিল্পায়ন ও এর অবকাঠামোগত রূপান্তর নিশ্চিত করা এবং কৃষি খাতে অনুকরণীয় পরিবর্তন আনা ও রফতানিমুখী অর্থনীতি গড়ে তোলা হবে অন্যতম লক্ষ্য। এ প্রকল্পের অনুমোদনের ফলে দেশে শিল্প প্রতিষ্ঠান বাড়বে। পাশাপাশি কৃষি খাতেও আসবে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন।

এতে করে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের পাশাপাশি দেখা যাবে জিডিপির প্রবৃদ্ধি। দেশের ক্রমবর্ধমান জিডিপির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও আমাদের দেশে বিনিয়োগে উৎসাহিত হবে। উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাড়তি গুরুত্ব পাবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও আইসিটি খাত।

তথ্যপ্রযুক্তির যুগে বাংলাদেশের অন্যতম সম্ভাবনাময় খাত হচ্ছে আইসিটি। এ খাতকে উন্নত করা হলে প্রতিবছর কয়েক হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব। আশার কথা, বর্তমানে বাংলাদেশের ১২টি জেলায় হাইটেক পার্কের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। ফলে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’-এর এক নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খোলা শুধু সময়ের ব্যাপার।

উল্লেখ্য, সভায় জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সোনাদিয়া দ্বীপের পরিবর্তে অন্য এলাকায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। সোনাদিয়া দ্বীপের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে সেখানে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলে এ দ্বীপকে পর্যটন কেন্দ্রের আওতাধীন করে দেশের পর্যটনশিল্প বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব প্রদান করা হবে। এতে বাংলাদেশের পর্যটনশিল্প আরও শক্তিশালী হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তবে সরকারি অনুদান ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে যথাযথ সমন্বয়ের পাশাপাশি উত্তম পরিকল্পনা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীল অবস্থা থাকা জরুরি। বলার অপেক্ষা রাখে না, সমুদ্রবন্দর অন্যত্র তৈরি করা হলে বাংলাদেশের অন্য তিনটি সমুদ্রবন্দরের ওপর চাপ কমবে। পাশাপাশি জাহাজের মাল খালাসের ক্ষেত্রে সময় ও অর্থ দুটিই সাশ্রয় হবে।

এসব ভাবনা এক করে বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা-২০৪১ উপস্থাপন করা হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে। কিছু পরিসংখ্যান হালনাগাদ করে এ পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে মার্চে। আগামী ২০ বছরের জন্য পরিকল্পনাটি গঠন করা হবে।

শিক্ষার্থী, মার্কেটিং বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

পরিকল্পনা ২০৪১

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম