নিজে বাঁচুন অন্যকে বাঁচান
মুহাম্মদ আবু হানিফ
প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২০, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বিশ্বব্যাপী আতঙ্ক ছড়াচ্ছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। বিজ্ঞানীরা যার নাম দিয়েছেন কোভিড-১৯।
চীনের হুবেই প্রদেশ থেকে উৎপত্তি হওয়া এ ভাইরাস বিশ্বের ১৩০টিরও অধিক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও চীনসহ কিছু কিছু দেশে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে উঠতে শুরু করেছে; কিন্তু এশিয়া-ইউরোপীয় দেশগুলোতে এ মরণঘাতী ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দিন দিন তীব্রতর হচ্ছে।
বিশেষ করে ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি, ইরান এমনকি আমেরিকার মতো দেশকেও করোনার আক্রমণে নড়েচড়ে বসতে হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত এর সুনির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা কিংবা ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হওয়ার কারণে প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। ফলে এখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এটিকে বৈশ্বিক মহামারী হিসেবে চিহ্নিত করে বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থা জারি করেছে।
ইতিমধ্যে সুদূর ইউরোপ থেকে এ করোনাভাইরাস বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে; যার ফলে বাংলাদেশেও করোনা রোগী ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সম্প্রতি কয়েকজনের প্রাণহানিও ঘটেছে। আগামীতে এর প্রকোপ আরও বেড়ে প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। যদিও পরিস্থিতি এখনও হাতের নাগালের মধ্যে আছে। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকা অবস্থায় আমাদের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
এ প্রাণঘাতী ভাইরাসের মরণফাঁদ থেকে বাঁচার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক যেসব বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, সেগুলো সবাইকে মেনে চলার চেষ্টা করতে হবে। বিভিন্ন কুসংস্কারমূলক কার্যকলাপ থেকে বেরিয়ে এসে নিজে এবং পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে এ করোনার ব্যাপারে আরও সচেতন করতে হবে।
যারা বয়সে বৃদ্ধ কিংবা দীর্ঘদিনের বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত তাদের ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। বিশেষ করে যারা বিদেশ থেকে আসছে, তাদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিন তথা নিজ গৃহে কারও সংস্পর্শে না এসে ধৈর্য ধরে ১৪ দিন অবস্থান করতে হবে।
কেননা, পরিসংখ্যানে বলছে- এ বিদেশ গমনামনের মাধ্যমেই আক্রান্ত দেশগুলো এ ভাইরাসের সংস্পর্শে এসেছে। তাই নিজেকে বাঁচানোর জন্য, নিজের পরিবার, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশীদের কথা মাথায় রেখে আক্রান্ত দেশগুলো থেকে আসা ভাইবোনদের ধৈর্যসহকারে কোয়ারেন্টিনে থাকা জরুরি। কেন না এ ভাইরাসের লক্ষণ প্রকাশ পেতে ১৪ দিনের মতো সময় লেগে যায়।
কোয়ারেন্টিনে থাকা অবস্থায় যদি আপনার মধ্যে ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া না যায় তাহলে তা আপনার জন্য সুসংবাদ। কিন্তু যদি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে আর কোয়ারেন্টিনে না থেকে নির্ধারিত চিকিৎসা কেন্দ্রে চলে আসুন। তা না হলে আপনার মাধ্যমে আক্রান্ত হতে পারে আপনার পুরো পরিবার; এমনকি আপনার সংস্পর্শে যারা আসবে, তারাও এ থেকে রেহাই পাবে না।
তাই এ মহামারীকে তুচ্ছ না ভেবে দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে আমাদের প্রত্যেককে আরও সচেতন হতে হবে এবং আতঙ্কিত না হয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। এ মহামারী প্রতিরোধে নির্দিষ্ট নিয়ম ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চুলন। নিজে বাঁচুন, অন্যকে বাঁচান।
শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম কলেজ
