শ্রমজীবী মানুষের কথা মাথায় রাখুন
মো. ইমরান হোসেন
প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২০, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইল ফটো
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
করোনাভাইরাস পৃথিবীজুড়ে এখন আতঙ্কের নাম। কোভিড-১৯ ভাইরাসের আক্রমণে বিপর্যস্ত বিশ্ব অর্থনীতি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষিত হয়েছে দেশে দেশে। ক্রিকেট থেকে ফুটবল পর্যন্ত সব খেলাধুলাও বন্ধ হয়েছে।
করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম সিনেমার শুটিংও স্থগিত করতে হয়েছে কর্তৃপক্ষকে। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই ঘোষিত বা অঘোষিতভাবে চলছে জরুরি অবস্থা। করোনাভাইরাসের আতঙ্কে বাংলাদেশেরও সবকিছু থমকে গেছে।
এক সময়ের ব্যস্ত ঢাকা শহর ফাঁকা হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা ছুটেছে গ্রামে; দরকার ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন না শহরের অধিকাংশ মানুষ। এমন অবস্থা যত দীর্ঘায়িত হবে, ততই ক্ষতিগ্রস্ত হবে মানুষ।
করোনা মহামারীতে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে দিনমজুর ও শ্রমজীবী মানুষদের। ফাঁকা শহর তাদের জন্য সৃষ্টি করবে নতুন সংকট। ভাবুন একবার শহরের রিকশাওয়ালাদের কথা, যারা ঘাম ঝরিয়ে রিকশার প্যাডেল মারা টাকায় রাতেরবেলা বাজার হাতে ঘরে ফেরেন; অথবা সেই হকারদের কথা ভাবুন, যাদের স্ত্রীরা নিত্য বসে থাকে স্বামীর বাজারের অপেক্ষায়। ফুল, বাদাম বা চিপস বিক্রি করা সেই শিশুটার কী হবে, যার উপার্জনের পঞ্চাশটি টাকায় অসুস্থ মায়ের পেটে জুটত দু’মুঠো অন্ন?
ছোট্ট দোকান চালানো মানুষদের ক্রেতারা ঠিকই খেয়ে পড়ে বাঁচবেন; কিন্তু দোকানির বাসায় চুলো জ্বলবে কি? শহরের কুলি-মজুরদের কথা ভাবুন। বোঝা টেনেই তো তারা গ্রামে থাকা স্ত্রী-পরিজনদের কাছে সংসার খরচ পাঠান। ঢাকাসহ দেশের নানা শহরের কলকারখানাগুলো যদি বন্ধ হয়ে যায়, তবে কি শ্রমিকদের সবেতনে ছুটি দেয়া হবে? শহরের প্রচুর মানুষ দিন চুক্তিতে কাজ করেন। সেই দিনমজুরদের পেটে এখন ভাত জুটবে তো? এমনকি ফার্মগেট ওভারব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা অন্ধ বৃদ্ধার ভাঙা থালায়ও পয়সা জমবে না কিছুদিন।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রভাব কোথায় গিয়ে ঠেকবে, কে জানে! লাখ লাখ দিনমজুর ও শ্রমজীবী মানুষ এবং তাদের পরিবারের এতদিন ডাল-ভাত হলেও দু’বেলা খাবার জুটত।
বর্তমানে তাদের ভাতের থালাটিও যেন কেড়ে নিতে বসেছে করোনাভাইরাস। করোনায় চলমান ‘শাটডাউন’ যত দীর্ঘ হবে, গরিব-দুঃখী মানুষের কষ্ট তত বাড়বে। তাই সরকারকে যেমন শক্ত হাতে করোনাভাইরাস মোকাবেলা করতে হবে; ঠিক তেমনি অসহায় দিনমজুরদের জন্যও সাহায্যের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
শিক্ষার্থী, ফার্মেসি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
