ডেঙ্গি মোকাবিলায় ব্যর্থ কেন?
সাধন সরকার
প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২২, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম ও এর আগে-পরের সময়টাতে এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গি পরিস্থিতি খারাপের দিকে যায়। এ বছর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। এ বছর ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন প্রায় ২৩ হাজার নারী-পুরুষ-শিশু। প্রতিদিন হাসপাতালে রোগী বাড়ছে। ডেঙ্গি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রতিবছর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কোটি কোটি টাকার বাজেট হয়। ডেঙ্গি মোকাবিলায় নেতৃস্থানীয় পর্যায় থেকে কত রকমের আশ্বাসের অভয়বাণী ভেসে আসে; কিন্তু শেষমেশ ক্ষুদ্র কীটের কামড়ে মৃত্যু থেমে থাকে না। ডেঙ্গি মোকাবিলায় জনসম্পৃক্তার বিকল্প নেই। শুধু জনসাধারণ কিংবা শুধু সরকারের একার পক্ষে ডেঙ্গি মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। দরকার সম্মিলিত প্রচেষ্টা। ডেঙ্গি মোকাবিলায় কর্তৃপক্ষ থেকে জনসাধারণ পর্যায় পর্যন্ত তেমন সচেতনতা গড়ে তোলা যায়নি। কর্তৃপক্ষ ও জনসাধারণ পর্যায়ে একটা খাপছাড়া ভাব লক্ষ করা যাচ্ছে। এডিস মশা এখন শুধু রাজধানী ঢাকা ও বিভাগীয় শহরগুলোয় নয়; ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে।
এ বছর ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৮৩ জন। এর মধ্যে ২৬ শিশু রয়েছে। ডেঙ্গিতে শিশুমৃত্যু অভিভাবকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। ২০২১ সালে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিল ১০৫ জন। এ বছর ডেঙ্গির চারটি ধরনের মধ্যে তিনটি ধরন সক্রিয় আছে বলে জানা যাচ্ছে। মশা মারার জন্য ব্যবহৃত কীটনাশক নিয়েও মাঝেমধ্যে প্রশ্ন ওঠে। শতভাগ খাঁটি কীটনাশক কি ব্যবহার করা হচ্ছে? যে কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে, তা কতটুকু ফল বয়ে আনছে-এ ব্যাপারে অবশ্যই জবাবদিহির প্রয়োজন রয়েছে। রোগ নিরাময়ের পাশাপাশি রোগের উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, যেসব জায়গায় এডিস মশার জন্ম হচ্ছে, সেসব স্থান ধ্বংস করতে হবে। শহরের জলাশয়গুলো যদি পরিষ্কার রাখা যেত, বসতবাড়ির আশপাশ যদি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা যেত, সব পর্যায়ের জনসাধারণকে যদি ডেঙ্গি প্রতিরোধে সচেতন করা যেত, তাহলে ঘাতক এডিস মশা বিস্তার লাভ করতে পারত না।
শিক্ষক ও পরিবেশকর্মী
sadonsarker2005@gmail.com
