Logo
Logo
×

দৃষ্টিপাত

প্রাথমিকের শূন্যপদে সর্বোচ্চ সংখ্যক নিয়োগ চাই

Icon

নজরুল ইসলাম

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২২, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

প্রাথমিকের শূন্যপদে সর্বোচ্চ সংখ্যক নিয়োগ চাই

করোনা মহামারি সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলেছে। অসংখ্য মানুষ কাজ হারিয়েছে।

বেকারত্বের লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়েছে। বিদ্যমান শিক্ষিত বেকার, নতুন যুক্ত বেকারদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ প্রকট হয়েছে।

কোভিড সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য চাকরির সার্কুলার হয়নি। বড় কোনো নিয়োগ পরীক্ষাও হয়নি।

এভাবে অনেকের চাকরির বয়স শেষ হয়েছে। অনেকের বয়স শেষ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। বলা বাহুল্য, করোনা-উত্তর সময়ে শিক্ষিত বেকারদের চরম দুঃসময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে।

এ অবস্থায় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা-২০২০ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত বেকারদের মাঝে অনেকটাই আশা দেখিয়েছিল। ওই সার্কুলার প্রকাশের সময় বলা হয়েছিল-প্রায় ৩২ হাজার ৫০০ জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে। পরে অবশ্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন মন্ত্রণালয়ের এক মিটিংয়ে বলেছিলেন, প্রায় পঁয়তাল্লিশ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। কিছুদিন আগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদ্য বিদায়ি সচিবও বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছিলেন-৫৮ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হতে পারে।

ইতোমধ্যে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ২০২০-এর লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। প্রায় এক লাখ একান্ন হাজার প্রার্থী মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। বিগত বছরগুলোর নিয়োগ পরীক্ষায়ও তিনের এক অনুপাতে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। সে হিসাবে এবারও প্রায় পঞ্চাশ হাজার শিক্ষকের নিয়োগ পাওয়ার যৌক্তিকতা রয়েছে। প্রাথমিকের ইতিহাসে এতবড় নিয়োগ দ্বিতীয়টি নেই। তাই সবাই কমবেশি আশায় বুক বেঁধেছিল; কিন্তু কর্তৃপক্ষ হঠাৎ সে আশায় গুড়ে বালি ছিটিয়ে দিয়েছে। বলা হচ্ছে-৩২ হাজারই নিয়োগ দেওয়া হবে; অর্থাৎ পদ সংখ্যা বাড়ছে না। এতে প্রায় ১ লাখ ৫১ হাজার প্রার্থীর মন ভেঙে গেছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, ৩২ হাজার নিয়োগ দিলে অনেকেরই স্বপ্ন ভঙ্গ হবে। প্রশ্ন হলো, যদি ৩২ হাজারই নিয়োগ দেওয়া হয়, তাহলে ৪৫ হাজার বা ৫৮ হাজারের কথা কেন চাউর করা হলো? এত সংখ্যক (পাঁচের এক অনুপাতে) প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষাইবা কেন নেওয়া হলো? এটা এক ধরনের বৈষম্য তো বটেই; উপরন্তু কথা দিয়ে কথা না রাখার শামিল।

এটা স্পষ্ট, চলমান প্রকল্প পিইডিপি-৪ অনুযায়ী প্রাথমিকে বহুসংখ্যক শূন্যপদ ফাঁকা রয়েছে। অন্যবারের চেয়ে এবার নিয়োগ পরীক্ষা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। শিক্ষাগত যোগ্যতাও স্নাতক ধরা হয়েছে। এমনকি এবারের লিখিত পরীক্ষায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তরধারী মেধাবী প্রার্থীরা উত্তীর্ণ হয়েছে। সর্বোচ্চ সংখ্যক নিয়োগ দিলে মেধাবীরা শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় অন্তর্ভুক্ত হবেন এবং বিদ্যমান শিক্ষক ঘাটতি দূর হবে।

তাই কর্তৃপক্ষের কাছে আকুল আর্জি, এবার সর্বোচ্চ সংখ্যক (সাবেক সচিবের কথা অনুযায়ী ৫৮ হাজার) শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হোক। এতে ৫৮ হাজার বেকারের বেকারত্ব ঘুচবে। আটান্ন হাজার প্রার্থীর আটান্ন হাজার পরিবার রয়েছে। সবার মুখে হাসি ফুটবে। প্রাথমিক শিক্ষা খাতে যে প্রকট শিক্ষক সংকট রয়েছে, তা দূর হবে। সবচেয়ে বড় কথা-বর্তমান সরকারের নির্বাচনি ইশতাহার ছিল ‘ঘরে ঘরে চাকরি’, তা বাস্তবায়নে সহায়ক হবে। এটি সন্দেহাতীতভাবে আসন্ন নির্বাচনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

সাবেক শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

kmnajrulislam64@gmail.com

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম