বাংলাদেশে আর্জেন্টিনার দূতাবাসকে স্বাগতম
মুনযির আকলাম
প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২২, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বাংলাদেশ-আর্জেন্টিনার মধ্যে ভাষা, ধর্ম-বর্ণ, সামাজিকতা, পারিপার্শ্বিক অবস্থা, ভৌগোলিক দূরত্ব থাকা সত্ত্বেও ফুটবল বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে আবেগপ্রবণ বাঙালি আর্জেন্টিনার পতাকা উড়ায়, বাড়ির রং করে আর্জেন্টিনার পতাকাতে। বঙ্গদেশের অলিগলি, পাড়া-মহল্লা, চায়ের টং দোকান থেকে শুরু করে টিএসসির বড় পর্দায় সবখানেই আর্জেন্টিনা। বাংলাদেশ আর্জেন্টিনার ফুটবল দলের সমর্থনের জন্য একটি শক্তিশালী ঘাঁটি। সম্প্রতি কাতার ফুটবল বিশ্বকাপ-২০২২ আর্জেন্টিনার প্রতিটি খেলায় আনন্দে মেতেছে এদেশের আর্জেন্টিনার সাপোর্টাররা।
আর্জেন্টিনার এ ফুটবল বিশ্বকাপ জয়ে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের প্রাণোচ্ছল উদযাপনে অভিভূত আন্তর্জাতিক মহল এবং আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়, জনগণ ও রাষ্ট্রপতি। আর্জেন্টিনার প্রতি বাংলাদেশের মানুষের অকৃত্রিম এ ভালোবাসার বিষয়টি এখন দেশটির বিভিন্ন টেলিভিশনের টক শোতেও আলোচনা হচ্ছে। এবার কাতার ফুটবল বিশ্বকাপে দুই দেশের মানুষের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভার্চুয়াল সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। দুই দেশের মানুষের মধ্যে বন্ধুত্বের ভালোবাসাও প্রকাশ পেয়েছে। খেলা কীভাবে দুই দেশকে এত কাছাকাছি আনতে পারে, এক্ষেত্রে বাংলাদেশ-আর্জেন্টিনা একটি উদাহরণ।
ফিফা বিশ্বকাপ-২০২২ এর শিরোপা জয়ের পরপরই দুই দেশের সরকার প্রধানের শুভেচ্ছা বার্তা বিনিময় ফুটবলপ্রেমীদের ফসল। আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রপতি আলবার্তো ফার্নান্দেজ অভিমত প্রকাশ করেছেন-খেলাধুলা মানুষের মধ্যে বন্ধন ও সম্প্রীতি বৃদ্ধির একটি অর্থবহ ও শক্তিশালী মাধ্যম। ২০২৩ সালেই ঢাকায় আর্জেন্টাইন দূতাবাস স্থাপনের মাধ্যমে দুই দেশের জনগণ ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতির দৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ হবে।
বাংলাদেশে আর্জেন্টিনা মিশন খোলার উদ্যোগকে সু-স্বাগত জানাই। ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের পক্ষাবলম্বন করে বিবৃতি দিয়েছিলেন আর্জেন্টিনার বিখ্যাত লেখিকা ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো। তিনি আর্জেন্টিনার বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে গণহত্যার বিরুদ্ধে নানা রকমের প্রতিবাদ সংগঠিত করেছিলেন। তার কথা ভুলেনি বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বাংলাদেশ সরকার ‘ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার অনার’-এ ভূষিত করেছে তাকে।
ঢাকায় আর্জেন্টিনার দূতাবাস চালু হলে দক্ষিণ আমেরিকায় বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং দক্ষিণ আমেরিকার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সয়াবিন উৎপাদক দেশ আর্জেন্টিনা থেকে সয়াবিন তেল আমদানি সহজতর হবে। সেইসঙ্গে মারকসুরের বাজারে বাংলাদেশের প্রবেশ বেগবান হবে বলে আশা করছি। এ ধারাবাহিকতায় আমরা চাই, আর্জেন্টিনার ভিসা প্রক্রিয়া সহজ হোক বাংলাদেশিদের জন্য। এতে আর্জেন্টিনা ও বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সম্প্রীতি বৃদ্ধি, যাতায়াত, সম্পর্ক ও ব্যবসা-বাণিজ্য আরও সুদৃঢ় হবে। আর্জেন্টিনার জনগণের সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে বন্ধুত্ব সুদৃঢ় করতে আর্জেন্টিনা তাদের ভিসা পদ্ধতি সহজ করার উদ্যোগ নেবে, এটাই প্রত্যাশা।
কোরপাই, কুমিল্লা
moonzeerahcklham@gmail.com
