র্যাগিং বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিন
সৈয়দ আশিকুজ্জামান আশিক
প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বহুল আলোচিত ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় সোমবার ছাত্রলীগের ৫ নেতাকর্মীকে হল থেকে বহিষ্কার করে করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ইতঃপূর্বে গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্তে নির্যাতনের শিকার ছাত্রীর ওপর অমানবিক নির্যাতন এবং তাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের প্রমাণই শুধু মেলেনি, নির্যাতনের ধরন ও নির্যাতনকারীদের আচরণে প্রকাশ পেয়েছে পৈশাচিক বর্বরতা। উদাহরণস্বরূপ, নির্যাতনের সময় ছাত্রীটি যখন আর্তনাদ করছিলেন, তখন অট্টহাসি আর উল্লাসে মেতে উঠেছিল নির্যাতনকারীরা। ছাত্রীটি চিৎকার করলে তার মুখে গামছা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। পানি চাইলেও তাকে পানি না দিয়ে বর্বরচিত আচরণ করা হয়। জানা গেছে, এই পৈশাচিক নির্যাতনের বর্ণনা শুনে বিব্রত ও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন খোদ তদন্ত কমিটির সদস্যরাও। ভুক্তভোগীর নির্যাতনের বর্ণনার সময় কিছু ঘটনা এমন ছিল যে, কমিটির পুরুষ সদস্যদের বাইরে বের হওয়ার অনুরোধ করেছিলেন নারী সদস্য।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনাটি কেবল অনাকাঙ্ক্ষিত নয়, অত্যন্ত উদ্বেগজনক। গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে ওই নবীন ছাত্রীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রী পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগপত্রে সরকারসমর্থিত ছাত্রসংগঠনের একাধিক নেত্রীকে অভিযুক্ত করা হয়। ঘটনা তদন্তে পৃথক পৃথক কমিটি গঠন করা হয়। তবে ঘটনাটি শুধু বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, গড়ায় হাইকোর্ট পর্যন্ত। হাইকোর্টের দুজন বিচারপতি অভিযোগ আমলে নিয়ে পাঁচ দফা নির্দেশনা দেন।
অন্যদিকে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাস্ট) মহিলা ছাত্রাবাসে কয়েকজন সিনিয়র ছাত্রীর র্যাগিংয়ের নামে হয়রানির মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন হিসাববিজ্ঞান বিভাগের চার ছাত্রী। কোথাও ভুল হলে বা শিক্ষার্থীদের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে হল কর্তৃপক্ষের উচিত চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া; কিন্তু পরিতাপের বিষয় তা হয়নি। এমনকি হল কর্তৃপক্ষ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর গরজও অনুভব করেননি। বর্তমানে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় র্যাগিংয়ের নামে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের যে কুপ্রথা চালু হয়েছে, দ্রুত তার অবসান হবে, এটাই আমাদের চাওয়া। বস্তুত র্যাগিংয়ের সঙ্গে যে বা যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।
গবেষণা সহকারী, সিআরআইডি, ঢাকা
syedashikujaman@yahoo.com
